Featured Books
বিভাগ
শেয়ারড

দীর্ঘাঙ্গী বান্ধবী - 1

শেষ মুহূর্তে ট্রেনের রিজার্ভেশন পাওয়া যায় বলুন তো? তাও আবার কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি । কিন্তু অফিসের ম্যানেজারকে কে বোঝাবে ? সকাল বেলাতেও কিছু বলেননি। দুপুর একটার সময় চেম্বারে ডেকে বলছেন , "সুমিত, একটা বড় অর্ডারের খবর আছে শিলিগুড়িতে । তুমি একটা কাজ করো, আজ রাতের ট্রেনেই চলে যাও। আমি এই ফাইলে সব ডকুমেন্ট , আমাদের অফার , ক্যাটালগ সব দিয়ে দিয়েছি সেক্রেটারিকে দিয়ে । তুমি একবার পড়ে নাও। যেটা বুঝতে পারবে না, আমাকে জিজ্ঞেস করে নিও। ক্যাশিয়ারের কাছ থেকে টাকা তুলে নিয়ে বেরিয়ে পড়ো। ট্রেনের টিকিট কেটে এখন বাড়ি চলে যাও। তোমার ব্যাগ ট্যাগ গুছিয়ে নাও। তিন চারদিন লাগতে পারে ওখানে। আজ রাত আটটার ট্রেনটা ধরে নাও। আমি ইচ্ছে করেই কাল দুপুরে লাঞ্চের পড়ে তোমার মিটিং রেখেছি কাস্টমারের ম্যাটেরিয়ালস ম্যানেজারের সঙ্গে। তুমি হোটেলে উঠে, ফ্রেশ হয়ে যেতে পারবে। যাও বেরিয়ে পড়ো। কিছু জানার থাকলে আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলে নিও।" এই লম্বা লেকচারটা দিয়ে ম্যানেজার সাহেব বেরিয়ে গেলেন অফিস থেকে।


উনি তো বলেই খালাস । এখন আমাকে দৌড়তে হবে। হটাৎ করে তিন চার দিনের টুরে বেরিয়ে যেতে হবে। তাও আজই রাতে। এই সেলস এর চাকরিরই এই ঝামেলা।


ও আপনাদের তো বলাই হয়নি। আমি খালি বকেই যাচ্ছি। আমার নাম সুমিত তো জেনেছেন । আমি কলকাতার এক ভালো প্রাইভেট কোম্পানির সেলস এক্সিকিউটিভ। আমার বয়স বত্রিশ । না, বিয়ে হয়নি এখনও। কেনো হয়নি ? আরে সেটা এখন বলার সময় নেই আমার। আছে কারণ একটা। পরে বলবো দেখি, সময় করে। এখন আমায় আগে একটা ট্রেনের টিকিট রিজার্ভ করতে হবে।


নিজের সিটে বসে কম্পিউটার খুলে রিজার্ভেশন করতে গিয়ে দেখি, কিচ্ছু নেই। সব ওয়েটিং লিস্ট। যেতে যখন হবেই, অগত্যা বাসের টিকিট চেষ্টা করলাম। লং ডিসটেন্স বাস জার্নি আমার পোষায় না। রাতে ঘুম হয়না ঠিক করে। তাছাড়া দুজন দুজন করে সিট। পাশের প্যাসেঞ্জার মোটাসোটা হলে, সিটের হাতল দুটো দখল করে নেয়। কিন্তু উপায় নেই। ওই এসি স্লিপার বাস গুলো হয় না, আধ শোয়া হয়ে যাওয়া যায়। ওই রকম বাসের একটা মোটামুটি সামনের দিকের একটা সিট পেলাম । তাও আবার উইন্ডো সিট পেলাম না। যাই হোক, যেতে যখন হবেই, কিছু করার নেই । টিকিট বুক করে বাড়ি চলে গেলাম, ব্যাগ গোছাতে হবে ।


রাত আটটায় বাস ছাড়বে, কাল ভোর বেলা পৌঁছবে শিলিগুড়ি। আটটার একটু আগেই বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছে গেছি। বাস খুঁজে, উঠে দেখি আমার সিটে এক ভদ্রমহিলা বসে আছেন । মেয়েদের বয়স ঠিক দেখে বোঝা যায় না। 30-35 এর মধ্যে কিছু হবে বোধহয়। আমি সবিনয়ে বললাম, "দিদি এটা আমার সিট, আপনি বোধহয় ভুল সিটে বসেছেন।"


ভদ্রমহিলা একটু হেঁসে বললেন, "আসলে এই উইন্ডো সিটটা আমার। আপনি যদি কিছু মনে না করেন, দয়া করে আপনি একটু ভেতরে ঢুকে বসবেন কি ? আমার একটু অসুবিধে হয় ভেতরের সিটে বসতে।"


আমার তো ভালই হলো। আমিতো উইন্ডো সিটই চেয়েছিলাম। আমি সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেলাম , "না না, কোনো অসুবিধে নেই। আমি ভেতরে ঢুকেই বসছি।"


ভদ্রমহিলা এক গাল হেঁসে বললেন , "ধন্যবাদ !" বলে উঠে দাঁড়ালেন। কারণ , উনি সিটে বসে থাকলে তো আমি ঢুকতে পারবো না। উনি উঠে দাঁড়াতে তখন বুঝলাম ওনার অসুবিধেটা কোথায় হচ্ছে। উনি বেশ লম্বা। মানে, ভারতীয় মেয়েদের আন্দাজে একটু বেশীই লম্বা। আমার পাশে দাঁড়াতে আন্দাজ করলাম বোধহয় পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চি কি একটু বেশি তো হবেই । আমার মাথা ওনার থুতনির কাছাকাছি পৌঁছচ্ছে। হ্যাঁ, আমি আবার সাধারণ পুরুষের চেয়ে একটু কম হাইটের, এই পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চি আর কি। আর আমার সাস্থটাও সাধারণ , এই 62 কেজি মতন ওজন আমার।


আমার ব্যাগটা আমি মাথার উপরের ব্যাগ রাখার জায়গাটায় তোলার চেষ্টা করছি তখন। ওপরে এমন ভাবে সব ব্যাগ রেখেছে, জায়গা হচ্ছে না। আর আমার ঠিক ভালো করে হাত ও পৌঁছচ্ছে না। ভদ্রমহিলা আমার পেছনে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন। তারপর দেখি, উনি আমার মাথার ওপর দিয়ে হাত বাড়িয়ে দিয়ে অন্যদের ব্যাগগুলো একটু সরিয়ে সরিয়ে আমার ব্যাগের জায়গা করে দিলেন। তারপর আমার হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে, আমার মাথার ওপর দিয়েই তাকের ওপর আমার ব্যাগটা তুলে রাখলেন । মাথা নিচু করে আমার দিকে মিষ্টি হেঁসে বললেন, "যান ভেতরে ঢুকে যান এবার।"


আমিও বাধ্য ছেলের মতন জানালার ধারে গিয়ে বসলাম। উনি আমার পাশে বসে পড়লেন । একটু লজ্জিত ভাবে হেঁসে বললেন, "আসলে আমার এই বেঢপ হাইটের জন্যেই যত প্রবলেম। সাইডে বসলে একটু পা টা বাইরে বার করে রাখতে পারি। তাই …."


আমি বাধা দিয়ে বললাম, "কি বলছেন বেঢপ হাইট ? অসাধারণ হাইট আপনার ! কজন মেয়ে এত লম্বা হয় আমাদের দেশে ? আর মেয়ে কি, কটা বাঙালি ছেলে এত লম্বা হয় ? আচ্ছা , ঠিক কত হাইট আপনার ?"


মহিলা একটু লজ্জা লজ্জা করে বললেন, "খালি পায়ে 5 ফুট 10 ইঞ্চি । আর চটি পড়ে থাকলে পাঁচ এগারো দেখায় ।"


আমি না বলে পারলাম না, "উফ, হিংসে হয় আপনাকে দেখে। মেয়ে হয়ে আপনি পাঁচ দশ। আর আমি পুরুষ হয়ে পাঁচ তিন। ভাবা যায়, আপনি আমার চেয়ে সাত ইঞ্চি লম্বা ! ইস্ , যদি আপনার সঙ্গে হাইট টা এক্সচেঞ্জ করতে পারতাম…!" বলে আমি হাঁসলাম ।


"আমি তো রাজি। আমি যদি পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চি হতাম, তো আমি সবচেয়ে খুশি হতাম । করবেন এক্সচেঞ্জ ?" হাসতে হাসতে বললেন। রসিক আছেন ভদ্র মহিলা।


আমি বললাম, "সে আর আমার ভাগ্যে নেই। যাই হোক, ভালো হলো আপনার সঙ্গে পরিচয় হয়ে। কথা বলতে বলতে যাওয়া যাবে। আমার আবার বাসে ঘুম হয়না। আচ্ছা এত কথা বলছি , বলাই হয়নি…আমার নাম সুমিত । আমি অফিসের কাজে শিলিগুড়ি যাচ্ছি।"


মহিলা বললেন, "আমার নাম যূথিকা । আপনার বাসে ঘুম হয়না। আমার কিন্তু হয়। তবে এখন নয়, আমার ঘুম আসতে আসতে রাত বারোটার পর। ততক্ষন আড্ডা মারা যেতে পারে।" বলে হাসতে লাগলেন যূথিকা।


আমি বললাম, "আপনি কি ওখানেই থাকেন ?"


বললেন, "কর্ম সূত্রে এখন থাকি। বাড়ি কলকাতায় ।"


এবার বাস ছেড়ে দিলো। সব সিট মোটামুটি ফুল হয়ে গেছে। এসি টা চালিয়ে দিয়েছে। হালকা করে মিউজিক বাজছে বাসে। এখনও বাসের আলো জ্বেলেই রেখেছে। কন্ডাক্টর টিকিট চেক করে নিচ্ছে । একটু পরে বাসের ভেতরের বড় আলোগুলো নিবিয়ে দেবে। দিয়ে হালকা সবুজ আলো জ্বালিয়ে রাখবে। ভালই করেছে বাসগুলো।


আমি ভদ্রমহিলা কে লক্ষ্য করছিলাম । শুধু লম্বা নন, সাস্থ্য ও বেশ ভালো। না, মোটা নন। কিন্তু শক্তপোক্ত যাকে বলে। খেলোয়াড়দের যেমন হয়, সেরকম । গায়ের রংটা একটু চাপা, ওই উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ, বিয়ের বিজ্ঞাপনে যেমন লেখে। মুখটা অতটা সুন্দর নয়, কিন্তু একটা মিষ্টতা আছে। পরনে সালোয়ার কামিজ, একটু হালকা রঙের, সুতির, সাধারণ ডিজাইন।


দেখলাম, বসে বসেও আমার চেয়ে প্রায় একমাথা লম্বা, যূথিকা।


কথা কিছুটা বন্ধ ছিলো। আমিই শুরু করলাম, "আপনি কি খেলাধুলো করেন নাকি ? মানে আপনার ফিগার দেখে মনে হলো, তাই বলছি ?"


হেঁসে উত্তর দিলো, "একসময় করতাম। ভলিবল খেলতাম আর অ্যাথলেটিকস। মানে লং জাম্প, জাভেলিন আর হেপটাথেলন । স্টেটের হয়ে খেলেছি, তবে ন্যাশনাল লেভেলে মেডেল পাইনি যদিও । তার বেশি উঠতে পারিনি।"


আমি বললাম, "বাহ্ দারুণ । তো এইসব খেলাতে তো চাকরি ও পাওয়া যায় রেল টেলে। আপনি পাননি ?"


যুথিকা মুচকি হেঁসে বললো, "হ্যাঁ, আমি পুলিশে চাকরি পেয়েছি স্পোর্টস কোটায় । নর্থ বেঙ্গল পুলিশ। ছুটিতে বাড়ি এসেছিলাম। এখন কর্মস্থলে ফিরছি।"


আমি বললাম , "ও বাবা! আপনি পুলিশ ! তায় আবার ন্যাশনাল লেভেল প্লেয়ার ! তো আপনি কি পুলিশ কোয়ার্টারে থাকেন ?"


যুথিকা বললো, "আগে থাকতাম। কিন্তু এখন আমি এক সহকর্মীর সঙ্গে একটা ছোট ঘর ভাড়া করে থাকি। নিজেদের মতন থাকা যায়, ইচ্ছে মতন খাওয়া যায়। আমার সঙ্গে যে থাকে, আমার চেয়ে প্রায় দশ বছরের বড়, মালতিদি, সে আবার ওয়েট লিফটার ছিলো।"


আমি বললাম, "ওনার গায়ে খুব জোর তাহলে ?"


যুথিকা হেঁসে বললো, "হ্যাঁ প্রায় চল্লিশ বছর বয়স, এখনও খুব বডি ফিট । আমাকেই পাঞ্জায় হারিয়ে দেয় এখনও।"


আমি বললাম, "ও আপনার তাহলে তিরিস বছর বয়স । আমার চেয়ে দু বছরের ছোটো আপনি ? আমি তো ভাবছিলাম আপনি আমার চেয়ে বড় ।"


যুথিকা বললো, "কেনো ? আমি আপনার চেয়ে লম্বায় , চওড়ায় বেশি বলে, বয়সেও বড় ভেবেছিলেন ?"


আমি হেঁসে ফেললাম, "আপনি একজন মেয়ে হয়ে তো আমার ডবল সাইজের। আমি তো আপনার পাশে দাঁড়িয়ে বাচ্ছা ছেলে লাগছিলাম। যখন আপনি আমার মাথার ওপর দিয়ে আমার ব্যাগটা ওপরে তুলে রাখলেন, আমার তো লজ্জাই করছিলো ।"


যুথিকা হেঁসে বললো, "তাই ? আমি আপনার চেয়ে অনেক লম্বা, চওড়া। তাই মেয়ে হয়েও আমার গায়ের জোর বেশি আপনার চেয়ে। এতে লজ্জার কি আছে ?"


আমার এবারে প্রেস্টিজে লেগে গেলো। বললাম, "আপনি লম্বা, চওড়া হতে পারেন আমার থেকে। কিন্তু আমি পুরুষ, আপনি মহিলা। গায়ের জোর আমার বেশি।"


যুথিকা হেঁসে উঠল। "প্রেস্টিজে লেগে গেলো তো ? কিন্তু বাসে তো আর প্রমাণ করতে পারবো না। শিলিগুড়ি চলুন। আমাদের ওখানে নিয়ে যাবো আপনাকে। তখন দেখা যাবে কার গায়ে কত জোর।"


আমিও নাছোড়বান্দা। মজা করে বললাম, "কি করে প্রমাণ করবেন ?"


যুথিকাও মজা পেয়ে গেছে, "আপনি যাতে স্বচ্ছন্দ। পাঞ্জা লড়তে পারেন, কুস্তি লড়তে পারেন । আমি আপনাকে বলে বলে হারাবো ।"


আমিও চ্যালেঞ্জ করে বসলাম। "ঠিক আছে, আমি হাজার টাকা বাজি রাখছি। আপনি রাজি ?"


যুথিকা বললো, "না, টাকার বাজি নয়। আমি আপনার টাকা নিতে পারবো না। "


আমি বলে উঠলাম, "ওই তো, ভয় পেয়ে গেলেন, বাজি হেরে যাবেন ভেবে।"


যুথিকা হাঁসছে, "আরে আপনাকে ভয় পাবো ? আপনাকে আমি পাঁজাকোলা করে কোলে তুলে নিলে, আমি না ছাড়লে আপনি আমার কোল থেকে নামতেই পারবেন না ।"


হাইওয়ে তে পড়ার পরে বাসের আলোটা বেশ একদম কমিয়ে দিয়েছে। প্রায় অন্ধকার । এসি টা বেশ ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। মিউজিক চলাতে অন্য সিটের প্যাসেঞ্জারদের কথা কিছু শোনা যাচ্ছে না। শুধু নিজেদের মধ্যে কথা বলা যাচ্ছে। যুথিকার সিটের তলায় রাখা একটা ব্যাগ থেকে একটা বড় চাদর বার করে নিলো। বললো, "এরা এয়ারকন্ডিশনার টা এতো বাড়িয়ে দেয় যে শীত করে। তাই আমি চাদর নিয়ে আসি।" বলে চাদর মুড়ি দিয়ে সিটটা পেছনে হেলিয়ে দিলো। সবাই সিট পেছনে করছে। তাই আমিও আমার সিটটা পেছনে হেলিয়ে নিলাম। আধ শোয়া মতন হয়ে গেলাম।


যুথিকা বললো, "আপনার ঠান্ডা লাগলে আমার চাদরের তলায় চলে আসুন। বড় আছে চাদর টা।"


আমাদের দুটো সিটের মাঝখানের হাতল টা ওপর দিকে তুলে দিলো যুথিকা। মাঝখানের হাতলটা সরে যাওয়ায় সিটটায় জায়গাটা একটু বেশি পাওয়া গেলো। ওর চাদরটা আমার পিঠের দিকে দিয়ে দিলো। আমিও আমার গায়ে চাদরটা জড়িয়ে নিলাম । বললাম, "হ্যাঁ, এখন ঠান্ডাটা লাগছে না।"


যুথিকা হাঁসলো । আমাদের কাঁধ দুটো এখন ঠেকে আছে। যুথিকা আমার ডান দিকে বসে। ওর বাঁ হাতটা দিয়ে চাদরের তলায়, আমার ডান হাতের কব্জিটা চেপে ধরলো। আমি আশ্চর্য হয়ে ওর মুখের দিকে দেখলাম। যুথিকা মিটি মিটি হাসছে। বললো, "এবার আপনার হাতটা ছাড়ান দেখি আমার হাতের মুঠো থেকে।"


আমি বুঝলাম ও শক্তি পরীক্ষা আরম্ভ করে দিয়েছে। আমি ভাবলাম এ আর এমন কি শক্ত কাজ। একটু মোচড় দেবো, হাত খুলে যাবে ওর।


ওহ বাবা। হাত নড়াতেই পারি না, মোচড় দেবো কি। ভীষণ চেষ্টা করছি, কিছুতেই ওর হাত ছাড়াতে পারছি না। যুথিকার হাঁসির মাত্রা একটু একটু করে বাড়ছে। এবার ও আমার হাতটা টেনে ওর নিজের কোলের ওপর নিয়ে রাখলো। আমার হাতটা সোজা হয়ে ওর কোলে ধরে রেখেছে। ওর মুখটা আমার মুখের পাশে নামিয়ে এনে বললো, "এটা কিন্তু আমার বাঁ হাত । আপনি কেমন পুরুষ মানুষ ? আপনার ডান হাতটা আপনার চেয়ে বয়সে ছোট একটা মেয়ের বাঁ হাতের মুঠো থেকে ছাড়াতে পারছেন না ? ব্যাথা লাগলে বলবেন, ছেড়ে দেবো ।" বলে হাঁসতে লাগলো।


আমি পুরো শক্তি দিয়ে ওর হাত ছাড়াবার চেষ্টা করছি। আর ও ওর কোলের ওপর আমার ডান হাতটা বন্দী করে, আমার মুখের পাশে মুখ নামিয়ে তাচ্ছিল্যের হাঁসি হেঁসে যাচ্ছে। তারপর বললো, "যান, ছেড়েই দিলাম। আবার আপনার কব্জিটা ভেঙেই যাবে আমার হাতের চাপে।" বলে ছেড়ে দিলো। আমি আমার কব্জিতে হাত বুলাতে লাগলাম । সত্যিই ব্যাথা করিয়ে দিয়েছে।


এবার চাদরের তলায় ওর নিজের বাঁ হাতটা আমার ডান হাতের ওপর রেখে বলছে, "এবার আপনি ধরুন, আমি ছাড়াবো। আপনার ডান হাত, আর আমার বাঁ হাত ।"


আমি দেখলাম, এই সুযোগ। ওর দম্ভটা ভাঙতে হবে। হোক না ওর বাঁ হাত আর আমার ডান হাত। ধরলাম চেপে। এ কি ? এত মোটা কব্জি ! আমি তো যুথিকার পুরো রিস্টটা জড়িয়ে ধরতেই পারছিনা। আর ও যখন ধরেছিলো আমার কব্জি, ওর হাতের তালু আর আঙ্গুলগুলো পুরো পাকিয়ে গেছিলো আমার কব্জির ওপর দিয়ে। যাই হোক, যত খানি সম্ভব চেপে ধরলাম।


ও আমাকে মিটি মিটি হেসে লক্ষ্য করছিলো। বললো, "রেডি ?" আমি মাথা নেড়ে বললাম , "হ্যাঁ"।


ও বললো, "এক, দুই ,তিন"। বলেই এক মোচড়। ব্যাস আমার হাতের তালু খুলে গেলো । আর ওর বাঁ হাত মুক্ত ।


যুথিকা আমার ডান হাত টা ওর নিজের কোলের ওপর আবার টেনে নিলো। আমার কব্জিতে আলতো করে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে আমার মুখের দিকে চেয়ে বললো, "সুমিত, তোমাকে আমার ভীষণ ভালো লেগে গেছে। আমার বন্ধু হবে?"


আমি বললাম, " যুথিকা, তুমি একটা মেয়ে হয়ে আমায় এইরকম হেলায় হারিয়ে দিলে তোমার শক্তিতে । তুমি মেয়ে হয়ে আমার চেয়ে লম্বায়, চওড়ায়, গায়ের জোড়ে এত বেশি, আমি কি তোমার বন্ধু হবার যোগ্য ?"


আমার হাত এখন ওর বিশাল পাঞ্জার মধ্যে হারিয়ে গেছে। বললো, "জানো সুমিত, আমার কোনো ছেলে বন্ধু নেই। ছেলেরা আমার সঙ্গে কথা বলতেও পছন্দ করে না। শুধু আমি এত লম্বা বলে ওদের inferiority complex হয়। আর তোমার মধ্যে আমার হাইট নিয়ে কোনো সংকোচ নেই। তুমি আমার হাইটের , ফিগারের কত প্রসংশা করলে। তুমি কেমন বন্ধুর মত আমায় আপন করে নিয়েছো। আমি কিন্তু তোমার মতই এক সঙ্গীর অপেক্ষায় ছিলাম। যে আমাকে আমার এই বেঢপ চেহারা সত্তেও বন্ধু করে নেবে।"


আমি বললাম, "যূথী, তুমি যদি আর একবার তোমার এই সুন্দর লম্বা ফিগার কে বেঢপ বলেছো, তাহলে তোমায় আমি পাঁজাকোলা করে তুলে আর ছাড়বো না।"


যুথিকা হেঁসে উঠে, আমার পিঠের পেছন দিয়ে ওর হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো। তারপর চাদরের ভেতরে আমাকে ওর বুকের ওপর টেনে নিলো। আমার পাছার তলায় হাত দিয়ে আমাকে ওর কোলে বসিয়ে নিলো । ও আমার চেয়ে এত লম্বা, চওড়া, যে আমাকে ওর বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে রাখলো যেনো আমি ওর কোলে একটা বাচ্ছা ছেলে। আমায় চাদরের তলায় ওর কোলে বসিয়ে, ওর বুকের মধ্যে আমার মুখটা চেপে ধরেছে। আর আমার মনে হচ্ছে যে আমি যেনো একটা বড় নরম গদির ওপর আধসোয়া হয়ে আছি । আমার সমস্ত শরীরটাকে যুথিকা জড়িয়ে ধরে আছে। অদ্ভুত একটা নিশ্চিন্ত , একটা সিকিউরিটি অনুভব করছি ওর কোলের ভেতর বন্দী হয়ে। আমি বুঝতে পারলাম, ও হাত দিয়ে আমার মুখটা ওর গলার ভেতর ঢুকিয়ে নিলো। আহহ কি নরম, কি ঠান্ডা ওর গলার ভেতর টা। আমার নাক, আমার ঠোঁট ওর গলার ভেতরটা স্পর্শ করছে। আমি পুরোটাই ওর কোলের ওপর, ওর বুকের ভেতর, চাদরের তলায় ঢাকা । শুধু যুথিকার মুখটা বেরিয়ে আছে । ওর চোখ বোঝা। ও যেনো ওর আদরের সোহাগকে বুকের মধ্যে ধরে রাখতে পেরে সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছে।



( To be continued….)