হরিচাঁদের আশীর্বাদ

(3)
  • 147
  • 0
  • 1.1k

নদীর পাড় ঘেঁষে ছোট্ট গ্রাম—ঠাকুরনগর। সকালের কাক ডাকছে, মাঠে কৃষকেরা যাচ্ছে চাষ করতে। গ্রামের ভেতর দিয়ে ধুলো উড়ে যাচ্ছে। এই গ্রামেই বাস করে কৃষ্ণপদ। বয়স তার মাত্র বাইশ, কিন্তু চোখে মুখে এক অদ্ভুত জেদ আর সাহস। দরিদ্র পরিবারে জন্ম হলেও সে জানে—“জন্ম দিয়ে মানুষ বড় হয় না, মন আর কর্ম দিয়েই বড় হতে হয়।”কৃষ্ণপদ ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছে হরিচাঁদ ঠাকুর আর গুরুচাঁদ ঠাকুরের বাণী। মা বলতেন—“বাবা, মতুয়া মানে ভয় পাওয়া নয়। আমরা সবাই সমান। হরিচাঁদ ঠাকুর আমাদের শিখিয়েছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে।”কৃষ্ণপদ গ্রামে স্কুলে যেত। কিন্তু প্রায়ই সে অপমানিত হতো। অনেক সময় শিক্ষকেরা তাকে আলাদা বেঞ্চে বসতে দিতেন না, বন্ধুদের বাবা-মা

1

হরিচাঁদের আশীর্বাদ - 1

নদীর পাড় ঘেঁষে ছোট্ট গ্রাম—ঠাকুরনগর। সকালের কাক ডাকছে, মাঠে কৃষকেরা যাচ্ছে চাষ করতে। গ্রামের ভেতর দিয়ে ধুলো উড়ে যাচ্ছে। গ্রামেই বাস করে কৃষ্ণপদ। বয়স তার মাত্র বাইশ, কিন্তু চোখে মুখে এক অদ্ভুত জেদ আর সাহস। দরিদ্র পরিবারে জন্ম হলেও সে জানে—“জন্ম দিয়ে মানুষ বড় হয় না, মন আর কর্ম দিয়েই বড় হতে হয়।”কৃষ্ণপদ ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছে হরিচাঁদ ঠাকুর আর গুরুচাঁদ ঠাকুরের বাণী। মা বলতেন—“বাবা, মতুয়া মানে ভয় পাওয়া নয়। আমরা সবাই সমান। হরিচাঁদ ঠাকুর আমাদের শিখিয়েছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে।”কৃষ্ণপদ গ্রামে স্কুলে যেত। কিন্তু প্রায়ই সে অপমানিত হতো। অনেক সময় শিক্ষকেরা তাকে আলাদা বেঞ্চে বসতে দিতেন না, বন্ধুদের বাবা-মা ...আরও পড়ুন

2

হরিচাঁদের আশীর্বাদ - 2

অধ্যায় ২: অবহেলার কষ্টঠাকুরনগরের ভোর মানেই মাটির গন্ধে ভেজা হাওয়া, দূরে ধানক্ষেতের সবুজ ছায়া আর পাখির কিচিরমিচির। কৃষ্ণপদর বয়স সাত। তার মায়ের চোখে ভোরের আলোয় অদ্ভুত স্বপ্ন—“আমার ছেলে পড়াশোনা শিখবে, মানুষের মতো মানুষ হবে।”সেদিন ছিল কৃষ্ণপদের জীবনের এক বিশেষ দিন—স্কুলে যাওয়ার প্রথম দিন।মা আগের রাতে সেলাই করে দিয়েছিলেন একখানা পুরনো জামা, যদিও তাতে ফাটা জায়গা সুঁই-সুতোয় বোনা। পিঠে একটি টিনের বাক্স, ভেতরে মাত্র দুটো খাতা আর একটি ভাঙা পেন্সিল। বাবার হাতে সামান্য টিফিন—ভাতের সাথে শুকনো আলুর চচ্চড়ি।মা দরজার কাছে দাঁড়িয়ে বললেন—“যা রে বাবা, পড়াশোনা শিখবি। তোর জীবন যেন আমাদের মতো না হয়।”কৃষ্ণপদ লজ্জা আর উত্তেজনার মিশ্র অনুভূতি নিয়ে স্কুলের ...আরও পড়ুন

3

হরিচাঁদের আশীর্বাদ - 3

তৃতীয় অধ্যায় : স্নান ও জাগরণবারুণীর ডাকফাল্গুন মাস। হাওয়ায় কাশফুলের গন্ধ, মাঠে পাকা ধানের সুবাস ভাসছে। গ্রামের ঠাকুরবাড়ি থেকে শব্দ আসছে।সবার মুখে একটাই কথা—“বারুণীর স্নান আসছে।”মতুয়া সমাজের কাছে এই স্নান শুধু জলস্নান নয়, এটি আত্মার পরিশুদ্ধি, ঐক্যের প্রতীক, ভক্তির উৎসব।গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে মানুষ জড়ো হচ্ছে। পুরুষরা সাদা ধুতি পরে এসেছে, মহিলাদের গায়ে লাল পাড় সাদা শাড়ি। শিশুদের কোলাহলে চারদিক ভরে উঠেছে।কৃষ্ণপদ মায়ের হাত ধরে ভিড়ের দিকে এগোল। সে প্রথমবার এই বিশাল উৎসব দেখতে যাচ্ছে।নদীর ধারে জনসমাগমকালো কাদামাটির পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে কৃষ্ণপদ দেখল—নদীর ধারে যেন মেলা বসেছে।শত শত মানুষ গঙ্গাজল নিতে এসেছে, কেউ ...আরও পড়ুন