Featured Books
বিভাগ
শেয়ারড

বেকার যুবক রাজার হালে - 1

রাজার হালে থাকা। ভাবতেই চোখের সামনে ভেসে উঠে এক রাজকীয় ভাবনা। অফুরন্ত বিশ্রাম, কর্মবিনা অন্ন গ্রহণ, আর আরাম।

আসলে বেকার যুবক রাজার হালে কখনই থাকে না, বরং রাজার হালে থাকার দরুনই সে বেকার। পিতা-মাতার মাত্রারিক্ত ভালোবাসা এই পর্যায়ে নিয়ে যায়। তখন, উক্ত বেকার, সপ্নের মধ্যেই চাকরি-ব্যাবসা সব করে ফেলে৷ কল্পনায় ব্যাবসা বানিজ্য করে এবং তা শুধুই তা বলে বেড়িয়ে পিতা মাতার মনে আশা জোগায়।

তাদেরই একজন ইমরান।

ইমরানের দৃষ্টিকোণ থেকে:

আমি ইমরান। পড়াশোনা দুবছর আগেই ছেড়ে দিয়েছি। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপড়া করে আর পড়াশুনা করা হয়ে উঠেনি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ না পাওয়ায় রাস্তাটা আচমকা মোড় নিয়ে নিয়েছিলো।

তোহ, পড়াশুনায় আমার এমনিতেই মনযোগ অল্প। ছোটকালে দুম-ধারাক্কা প্যাদানী খেয়ে যাই কিছুটা পড়তে বসতাম এবং ফলাফল ততোটাও খারাপ ছিলো না। এই দায়িত্ব নিজের ঘাড়ে আসার পর থেকেই পড়াশুনায় গোল্লায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ৬ হাজার টাকা(75USD approximately) দিয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। ক্লাস জয়েন করিনি এখনো, করার ইচ্ছাও নেই। মনে হয় আমি ড্রপআউট(শরীরে একটা ভাব চলে ড্রপআউট শুনলে..)। বিলগেটস'রা ড্রপআউট ছিলেন, আমিও তাই। মাঝে মধ্যে খুব হাসি ছেলে বেলার কথা ভেবে এবং দুনিয়াটা কত বিচিত্র৷ ভিন্ন ভিন্ন দেশ-দেশান্তর, ভিন্ন মানুুষ, তাদের মনোভাবও ভিন্ন ভিন্ন এবং রেশা-রেশি কম্পালসারি বটে।

ঘটানায় আসি৷ "বেকার মস্তিস্ক শয়তানের ঘর" -কথাটার মান রাখতে আদ্ভুদ সবকিছুই করে যাচ্ছি। অনলাইন স্টকিং, সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর নেতিবাচক প্রয়োগতো আর আছেই৷ আর আমার একজন প্রিয়তমা আছে, ইনা৷ অনেক দূরে থাকে৷ তাকে ভেবেই কাটিয়ে দিয়েছে এক যুগ এর উপরে। বস্তুত আমাদের যোগাযোগ আছে আনলাইনে। কিন্তু সে আমার ব্যাপারে ততটা আগ্রহী না, হবেই বা কেনো? কি আছে আমার? ব্যাপক মাত্রার এক অসফল ইনট্রুবার্টকে কেই-বা পছন্দ করবে? আমি চেষ্টায় আছি সবসময়। তার মিষ্টি ইগনোরেন্ট আমায় প্রতিনিয়ত নিধরুন কষ্ট দেয়।

তো একদিন তাকে চমকে দিতে ৫৫০কিঃমিঃ ভ্রমণ করে ছুটে যাই তার ঠিকানায়। আমার একপাক্ষিক প্রিয়তমা পড়াশোনার দোহাই দিয়ে শহরে হোস্টেলে থাকেন। তো, প্রথমেই তার হোস্টেলে দিকে চলে যাই এবং নিকটস্থ একটি হোটেলে রুম ভাড়া নেই। হোটেলে রুম নেওয়ার কারণ হচ্ছে তাকে সারপ্রাইজ দিবো দিনখন ঠিক করে।

পরেরদিন, ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হওয়ার পর জমপেশ নাস্তা করে তার কাছে যাওয়ার জন্য তৈরি হলাম৷ সোজা হাটা দিলাম তার উদ্দেশ্যে। বাহ, সে তো গেটেই দাড়িয়ে আছে। কিন্তু যা দেখলাম, মনে হলো আকাশ থেকে পরলাম। কোনো এক বড়লোকের ব্যাটার Nissan Rnessa চড়ে বুমম করে চোখের সামনে দিয়েই চলে গেলো আর আড়ালো দাড়ানো অবস্থায় নাগাশাকির বোমা ফাটার শব্দ শুনলাম। ওয়েট, আমি কি মাত্র ছ্যাক খেলাম? নাহ তো৷ ওতো আমার গার্লফ্রেন্ডই ছিলো নাহ৷ তবুউ, কানে ইয়ারফোন গুজে বাংলা স্যাড সং গুলো সাফল করে চালি দিলাম এবং আর হোটেলে ফিরে যাই নি, সবচেয়ে কাছের ফ্লাইটে বাসায় ফিরলাম৷ মন ভীষন চটে গেলো। রেগে যাওয়া মানেই হেরে যাওয়া, কথাটার নিকুচি করেই হাল্কা ভাংচুর করলা। অনেকটা লস খেয়ে গেছি। ১বছরের সেভিংস শেষ করে ফেলেছি এ কয়েকদিনের চক্করে৷

হাই ডোজ নিয়ে হাইভারনেশনে চলে গেলাম......

২দিন পর উঠলাম। মাথা ঘুরছে, বান্ধবী দিবা-কে ফোনে ডায়েল করেই আবার হয়তো অজ্ঞান হয়ে পরেছিলাম। কিছুই মনে নেই৷

আবার যখন ঘুম ভাঙলো চোখের সামনে দিবাকে দেখতে পারলাম৷ হ্যা, দিবা আমার বান্ধবী। আমার আমার লাইফের সব বড় বিপদেই সে আমাকে সেইভ করেছি৷

অইতো, সেদিন যখন বাবা লাথি মেরে বের করে দিয়েছিল,রাস্তায় বেঞ্চে রাত কাটিয়েছিলাম। দিবা-ই তার বাড়িতেই কিছুদিন রেখেছিল এবং পরে সে-ই আমাকে একটা বাসা এবং কাজের ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলো।

wait for the next episode(upcomin)