Read Blessed are the eyes - 3 by Mallika Mukherjee in Bengali কবিতা | মাতরুবার্তি

Featured Books
  • ঝরাপাতা - 6

    ঝরাপাতাপর্ব - ৬এত হাঙ্গামা, পরিশ্রম, সঙ্গে লোকের হাজার কথার...

  • মহাভারতের কাহিনি – পর্ব 123

    মহাভারতের কাহিনি – পর্ব-১২৩ দ্রোণের সেনাপতি পদে অভিষেক ও দুর...

  • Forced Marriage - 3

    শ্বেতা একটি গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে। এই চুক্তিটা তার কাছে নিজের...

  • জঙ্গলের প্রহরী - 8

    জঙ্গলের প্রহরীপর্ব - ৮গাড়ি থেকে নেমে সবাই শুক্লাকে ঘিরে দাঁ...

  • LOVE UNLOCKED - 2

    Love Unlocked :2Pritha :"কিরে তখন থেকে কি ভাবছিস বলতো ?" ক্ল...

বিভাগ
শেয়ারড

নয়ন যে ধন্য - 3

নয়ন যে ধন্য

লেখক

নরেন্দ্র মোদী

(3)

_______________________________________

অনুবাদ

মল্লিকা মুখার্জী

_______________________________________

 

27

গীত-বসন্ত

 

অন্তে আরম্ভ, আরম্ভে অন্ত,

হেমন্তের হৃদয়ে গাইছে বসন্ত!

 

বয়স ষোল, কোথাও কোকিলের কুহু,

কার প্রেমে আজ দুলছে পলাশ?

 

মনে হয় সামান্য, অভ্যন্তরে উন্নত,

হেমন্তের হৃদয়ে গাইছে বসন্ত!

 

কার বিবাহ আজ এই অরন্যে?

প্রতিটি বৃক্ষে যে প্রজ্জ্বলতা!

 

আশীর্বাদ করিতে আসছে সাধুসন্ত,

হেমন্তের হৃদয়ে গাইছে বসন্ত!

 

 28

তোমায় অর্পণ

 

জলকে তুমি শৈল বলতে পারো

বা শৈলকে জল।

বলতে পারো মেঘকে

আকাশের খাঁজ  

বা পদ্যকে বাবলা।

এতে কারুর কোনও ক্ষতি নেই

 

তুমি গুজবকে যদি বলো সত্য

বা দিনকে বলো রাত।

শরদ বলো বসন্তকে

বা সাগরকে মরুভূমি।

আবার জীবনকে যদি বলো মৃত্যু?

 

এইসব

তোমার বাণীর বিলাসিতা,

করি তোমায় অর্পণ।

প্রকৃতি কিন্তু চিরকাল একই রকম,

নিরাময় ও তটস্থ!

 

29

ছবির আড়ালে

 

আমি আমার ছবিতে আছি আবার নেই,

আমি আমার পোস্টারে আছি আবার নেই!

এতে নেই কোনো বিরোধিতা

না আছে প্রতিবাদ।

 

ছবি কখনও আত্মার অনুভূতি দেয় না,

সে তো জলে ভিজে যায়,

বহ্নিশিখায় জ্বলে যায়।

তাতে আমার তো কিছু হয় না!

 

আপনারা কখনও

আমায় আমার ছবিতে

বা পোস্টারে খোঁজার চেষ্টা করবেন না।

আমি অনন্ত আসন গ্রহন করেছি,

আমার বাণী, আচরণ ও কর্মক্ষেত্রে।

 

আপনারা

আমায় আমার কাজের মাধ্যমে চিনুন,

কাজই আমার জীবন-কাব্য।

কাব্য তে আছে ছন্দ-বন্ধন,

আছে লয়-তাল।

দোলনায় গীতাসার,

দ্বারে কর্মধার!

সকলের প্রতি রয়েছে

নিঃস্বার্থ স্নেহ-ভালোবাসা।

 

আপনারা আমায় ছবিতে নয়,

পাবেন কঠোর পরিশ্রমের ক্ষেত্রে,

দেখবেন পরিকল্পনা পুঞ্জে!

আমার কন্ঠস্বরে চিনুন আমায়,

আমার নয়নে

শুধু আপনাদের প্রতিবিম্ব।

 

30

দৃশ্য

 

কুঞ্জকাননে বসে আছি আমি

একটি তরু ছায়ায়,

সবুজ দূর্বা দুলছে হাওয়ায়।

উড়ছে প্রজাপতি ডানা মেলে,

ফুলের রসপানে ব্যস্ত ভ্রমর।

 

উড়ন্ত নানান দৃশ্য দেখছি।

সন্ধ্যা নেমে এলো যখন,

আমার ভিতরে একটি গোটা গাছ

অনাবৃত্ত হয়ে উঠলো!

 

অন্ধকারে ফুটছে তারা যেন ফুল!

প্রজাপতি হয়ে আমি ভাসছি হাওয়ায়।

ঝিকিমিকি করছে জোনাকি,

নিখিল সৃষ্টির প্রীত নিয়ে

নিনাদিত হল একটি সুরভিত গান।

 

সবুজ দূর্বা দুলছে হাওয়ায়

আমার এই কুঞ্জকাননে!

 

31

দেহের কাজ করে দেহ

 

দেহের কাজ করে দেহ, মনের কাজ করে মন।

অক্ষরের উপবনে আমি  শ্রীরামের করি দর্শন।

 

নীরবভাবে বীনা বাজে,

তারে-তারে সুর জাগে।

 

শুধু তোমার মধুর নাম পাঠ করে অন্তঃকরণ!

দেহের কাজ করে দেহ, মনের কাজ করে মন।

 

শরীর, মন, হৃদয়ে ভুবনের তরঙ্গিত জোয়ার,

নয়নে আমার ভাসছে যে এক সৃষ্টি সুকুমার!

 

আমার মনের অযোদ্ধায় অধিষ্ঠিত তুমি একজন,

দেহের কাজ করে দেহ, মনের কাজ করে মন।

 

 32

নর্মদা

 

নর্মদা শুধু নদী নয়,

আমাদের সহস্র বছরের সাধনা।

অনশ্বরের আরাধনা।

 

নর্মদা শুধু ভূচিত্রের রেখা নয়,

গুজরাতের হস্তরেখা।

জনসাধারণের ভাগ্যবিধাতা।

 

নর্মদার নির্মল জলের ওপর

মলিন চাদর ঢাকা দেবার

চেষ্টাও যদি কেউ করে,

তাকে কবীরের দিব্যি।

 

এই নর্মদা গান্ধিজির, 

নর্মদ এবং মুন্সীর,

সরদারের স্বপ্ন-প্রবাহিনী,

গুজরাতের অস্মিতা।

 

নর্মদা কুলদেবী,

নর্মদা বরদায়িনী।

 
 

33

সরলপ্রাণ  

 

নিয়তিতে বিশ্বাস করি না আমি,

আহবান স্বীকার করে চলি।

অপরের জ্যোতি গ্রহন করি না,

আমি নিজেই একটি জ্বলন্ত ফানুস।

 

আলোর বন্যা চাই না আমি,

স্বদীপ্তি পর্যাপ্ত।

কমল-জ্যোতির আভাই যথেষ্ট,

কেটে চলে তিমিরের আবর্ত!

 

কুয়াশাতে কোনো রুচি নেই আমার,

আমি যে মনখোলা, সরলপ্রান!

জাত-পত্রিকা মেনে চলি না,

গ্রহের সমক্ষ হই না নতশির।

 

ভীরুদের সাথে শতরঞ্জ খেলা

আমার প্রকৃতি নয়।

আমিই আমার বংশধর, 

আমিই আমার উত্তরাধিকারী।

 

নিয়তিতে বিশ্বাস করি না আমি, 

আহবান স্বীকার করে চলি।

 

34

আহ্বান 

 

ডাকছে অয়ন, ডাকছে গগন,

পথ ভুলেছে জনসমাজ;

পার্থকে করি আহ্বান। 

 

বর্ণে বিভাজিত মানব,

মানব মিটে হয়েছে দানব।

অশান্তি-গোলমাল,

সহিংস যুদ্ধ হল কত,  

অহমের প্রাচীর দাঁড়িয়ে রইল;

ধ্বংস হ'ল স্বপ্নের নীড়। 

শোনো আহ্বান, শোনো অনুরোধ!     

 

সমতার কথা, কথাই রইল,

একতা চূর্ণ হয়ে গেল।

সংবিধানের বন্ধ দুয়ার,

বিদ্বেষের মস্ত খাই!

অজস্র অশ্রুস্ত্রোত,

চারিদিকে অন্ধকার!

শোনো আহ্বান, শোনো অনুরোধ!     

 

ক্ষুধার্ত দেহ, আহত মন,

মানুষ মানুষের সঙ্গে অখুশি।

অহম্ নয় ভ্রান্তির সাগর

উদ্ভূত হচ্ছে তাহাদের হৃদয়ে!

ভেঙ্গে দিতে চাই এই প্রাচীর,

চোখে যে জ্বলছে আগুন।

শোনো আহ্বান, শোনো অনুরোধ!     

 

ভগ্নাবশেষে খোঁজো স্বপ্ন,

জীবনের পক্ষে খুব দরকার৷

অতীত কে ভুলিয়ে দিয়ে

খোলো হৃদয়্দ্বার৷

বিস্তৃত করো মনোদিগন্ত,

ডুবন্তকে করো উদ্ধার৷

একে অন্যের অভিভাবক হয়ে

ধন্য করো এই অবতার!

শোনো আহ্বান, শোনো অনুরোধ!     

 

35

প্রজাপতি

 

ফুলের ওপর বসে, বসেই উড়ে যায়।

প্রজাপতি পাখা মেলে রঙ্গে ডুবে যায়।

 

মুকুলিত পুষ্করিণী বিকশিত সর্বদিকে,

তারি মাঝে প্রজাপতি ভাসছে তরী হয়ে,

সুখের স্নিগ্ধ সূর্যের আভাস দিয়ে যায়।

ফুলের ওপর বসে, বসেই উড়ে যায়।

 

অদ্ভুত এই জীবনের আসা-যাওয়া,

এসে চলে গেল যে, মনে করি তারে।

এই বন্ধনের বিচ্ছেদ কোথায়?

প্রজাপতি পাখা মেলে রঙ্গে ডুবে যায়।

 

36

পরিচয়

 

সময়-সময়ের ভিন্ন পরিচয়, কর্মঠ মৌমাছি আমি,

শীতকালীন প্রাতের সূর্য, ভিতরে বৈশাখী তাপ আমি।

 

মাছি হয়ে এদিক ওদিক উড়ার কামনা নেই,

ফুলের নিকটতর হয়ে আমি, সৌরভে মগ্ন হই।

মত্ত হাওয়ায় সাথে দুলি, ফুল গোলাপী আমি,

সময়-সময়ের ভিন্ন পরিচয়, কর্মঠ মৌমাছি আমি।

 

যেখায় বাগান, মায়া সেথায় আবার বিভিন্ন লীলা,

প্রচলিত পথে চলি না, আমার ভিন্ন পথ, ভিন্ন রীতি।

দেখো আমায় দীন-দরিদ্র, মনের মহীপতি আমি,   

সময়-সময়ের ভিন্ন পরিচয়, কর্মঠ মৌমাছি আমি।

 

পাথর দেয় হুমড়ি ঠোকর, ব্যবধান বাধা-বিঘ্ন দেয়,

পাথর দিয়ে গড়ি সিঁড়ি, গিরিশিখরের পথ যে হয়!

আমি সবার মাঝে থাকি, আমার ‘খুদা’ স্বয়ং আমি,

সময়-সময়ের ভিন্ন পরিচয়, কর্মঠ মৌমাছি আমি।

 

37

নির্মল

 

অমাবস্যার রাতের রহস্যময়ী নীরবতা

বা ধূর্ত অপরাধীর মৌন কে

আমি সমর্থন করি না।

জলের মত নির্মল থাকা

আর অবাধে বহিয়া চলার আনন্দ যে কি,

আমি জানি।

 

মরীচিকা আর ডোবার ব্যাঙ,

স্বর্গের আভাস আর ভ্রান্তির

পার্থক্য ভেদ আমি জানি।

অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে

বা ন্যায়ের সমর্থন করতে

আমাদের   

লজ্জিত হওয়া উচিত নয়।   

 

 

38

প্রতীক্ষা 

 

আকাশে উদিত হলো নির্মম সূর্য,

দিন কাটছে পাটের মত খরখরে।

দেখছি শুষ্ক হাওয়ার

তরুর প্রতি বৈচিত্রময় আচরণ!

 

মধ্যাহ্ন কাশছে যেন যক্ষা রোগী!

সন্ধ্যা বিবশ হয়ে নামিয়া এল,

মিলিয়ে গেল ঘন অন্ধকারে।

 

রাতভর সূর্যমুখী প্রতীক্ষা করে থাকে,

কোনো এক সময়ে তো

উদিত হবে সূর্য ফুল হয়ে!  

 

 

39

প্রভু কৃপা

 

হে প্রভু,

আমি নিজেকে বা দুনিয়াকে

খুশি করিতে পারব কি না জানিনা

কিন্তু আমি তোমায় কখনও

অখুশি দেখতে চাই না।

 

তোমার আশীর্বাদে, কন্টক পুষ্প হয়ে যায়।

খোলা মাঠে, গভীর বরষায়

হঠাত্‍ তুমি রোদ হয়ে চলে আসো নিকটে!

 

যাতায়াত করে ঋতু,

আমার অভ্যন্তরীণ মরসুমে,

তুমি আমায় বরাবর বসন্তের আভাস দাও।

 

কত কি দিয়েছো তুমি আমায়,

তাই একটি প্রশ্ন করি অবিরত

আমি দুজনকে-

তোমায় খুশি করতে  

আমার কি করা উচিত

বা কি না করা উচিত?  

40

লক্ষ্য

 

লজ্জিত হওয়ার মতো কোনো কাজ

কখনই যেন না করি আমি।

অবিচল গিরির মতো হতে পারি, 

খাঁটি কর্মের স্রোত হই আমি।

  

এ যে সাজানো শব্দ নয়,

নাভি থেকে প্রকাশ্য বাণী।

নীরবে গাই প্রীতির গান,

এই পৃথিবী আমার প্রান।

 

বহু শতাব্দী ধরে প্রতিধ্বনিত,

সংস্কারের লয়-তাল এত দামি।

লজ্জিত হওয়ার মতো কোনো কাজ

কখনই যেন না করি আমি।

 

আমার প্রতিটি কর্মে

থাকুক প্রভুর আশীর্বাদ।

অন্যায় না করি, নির্ভিক হই;

হৃদয়ে হোক সমস্ত সংলাপ।

 

কথনের অনুরূপ করি আচরণ, 

দুর্নীতি এড়িয়ে যেন চলি আমি।

লজ্জিত হওয়ার মতো কোনো কাজ

কখনই যেন না করি আমি।