Featured Books
বিভাগ
শেয়ারড

অভিশপ্ত পুতুল - পর্ব 2

এই পুতুল টা কোথায় পেয়েছো তোমরা?? নিশ্চই কোনো মৃত ব্যক্তির কাছ থেকে নিয়েছ। তান্ত্রিক এর কথা শুনে আমি তো অবাক। আমি যে লতার কাছে থেকে নিয়েছি পুতুলটা সেটা তান্ত্রিক কিভাবে জানলেন । আমি থতমত করে সব সত্যি
বলে দিলাম, আমার কথা শুনে তান্ত্রিক বলল যে এই পুতুল এ নাকি কারো আত্মা রয়েছে । আর সেই জন্যই লতার মৃত্যু হয়েছে ।

আমি অনেক টা ভয়ে ভয়ে বললাম যে ।
আমার তাহলে পুতুল টা নিয়ে আসা ভুল হয়েছে ।

তান্ত্রিক বলল যে অবশ্যই ভুল হয়েছে ।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে পুতুলটা কারো কাছে একবার আসলে নিজে থেকে যেতে চায় না, কেবল মৃত্যু চায় ।

আমি তান্ত্রিক এর কথা শুনে অনেক ভয় পেয়ে যাই । আমি তান্ত্রিক কে অনেক অনুরোধ করে বলি, যে আমার কি আর বাঁচার কোনো পথ নেই ।
তান্ত্রিক বলল যে উপায় একটা আছে কিন্তু সেটা যে অনেক ভয়ানক ।

তোমাকে অমাবস্যা রাতে একাই একটা কবর বাড়ি থেকে মৃত লাশের কাপড় নিয়ে আসতে হবে । আর সাথে তোমার আঙুল কেটে ওই কাপড় কে রক্ত দিতে হবে । আর সাথে আরো একটা শর্ত আছে ।

আমি মানে আবার কি শর্ত । তান্ত্রিক বলে যে তোমাকে একা একা যেতে হবে কাপড় আনতে । কিন্তু তুমি যে কবর এর কাপড় নিয়ে আসবে সে কবর এর লাশ তোমার পিছু পিছু আসবে । কিন্তু তুমি ভয় পাবে না । কারণ ভয় পেলে ও তোমাকে
সেখানেই মেরে ফেলবে । আমি অনেক টা হতাশ হয়ে মুখ মলিন করে বলি, আমি বাঁচার জন্যে এটুকু তো করতেই পারি। এদিকে ভাইয়া কে দেখছি না, কোথাও নেই । একটু চোখ ফিরিয়ে দেখতে গিয়ে দেখলাম দরজার ওপারে লুকিয়ে আছে ।

আমি মনে মনে অনেক ভয় নিয়েও হেসে বললাম ।যে কিনা আমাকে পছন্দ করে সে এমন ভীতু হলে চলবে ???


"ভৌতিক গল্প ও রহস্যময় কাহিনী পেতে ফলো করে সাথে থাকুন। আমার একাউন্ট এর লিংক - https://www.matrubharti.com/bongsaikat

একাউন্ট এ ফলো দিয়ে রাখবেন যাতে পরবর্তী গল্পের আপডেট গুলো সহজেই আপনি পেতে পারেন।



তো আমরা সেদিন এর মত ঘরে চলে আসি । ঘরে এসে যেনো আমি কোনো শান্তি পাচ্ছিলাম না । বারবার পুতুল এর কথা ভাবছিলাম, কেনো যে আনতে গেলাম পুতুলটাকে । যেনো নিজেই খাল কেটে কুমির এনেছি । এদিকে অমাবস্যা আসতে আর একদিন । ভাইয়া কে বললাম আসতে তো অমনি সে বলে দিলো সে নাকি অনেক ব্যস্ত আসতে পারবে না । আমি কিছুটা বুদ্ধি খাটিয়ে বললাম, না আসলে নাই, আমি ভেবেছিলাম তুমি আসলে বাবাকে আমাদের বিয়ের কথা বলতাম ।
তার পর কি আর হবে এক দৌড় এ চলে এসেছেন উনি ।

তারপর আমরা অমাবস্যা রাতে আমি ও আমার ভাইয়া দুজনে মিলে আমাদের কাছের একটা কবর বাড়িতে যাই। কিন্তু শর্ত মতে ভাইয়া কে নির্দিষ্ট দূরত্বে রেখে আমি একা যাই সেখানে।
পরিবেশটা ছিল সেদিন খুবই নির্জন আর শুনশান। আমি হাতে একটা লাইট নিয়ে আসতে আসতে কবর এর পাশে যাই গিয়ে একটা কাপড় নিয়ে আসতে থাকি । কিচ্ছুক্ষন পর আমার মনে হচ্ছিলো কে যেনো আমার পিছন পিছন আসছে!

আমি তান্ত্রিক এর কথা মত ভয় না পাওয়ার মত করে চলতে থাকি । কিছুক্ষন পরে আমার ঘাড়ে কারো গরম নিশ্বাস পড়ার মত লাগতে থাকে । পিছনে ঘাড় ঘুরাতেই দেখি কালো একটা অবয়ব আমার সামনে দাড়িয়ে আছে । দেখে পুরো গা আমার শিহরিত হয়ে উঠল । কি করবো কিছুই বুঝে পাচ্ছিলাম না । ভাইয়া কে যে ডাকবো গলায় মনে হয় না যে এমন শক্তি আছে । আমি সজোরে চিৎকার করার চেষ্টা করছি আর এদিকে মনে হয় কোনো শব্দই বের হচ্ছে না আমার । কেউ শুনতেই পাচ্ছে না হয়তো আমার কথা।

আর আমার সামনে থাকা অবয়ব টা
আমার কাছে আসতে থাকলো । আমি মনে মনে ভাবলাম এবার মনে হয় আমার কাহিনি শেষ হয়ে এলো।

নিকষ কালো অবয়ব টা আমার সামনে এসে ভয়ংকর আওয়াজে বলল যে আমার কাপড় আমাকে ফিরিয়ে দাও । আমি কাপড় না নিয়ে তোমার পিছু ছাড়বো না । আমি তখন ভয়ে কাপড় টা তার সামনে ফেলে দিলাম আর সাথে সাথে কাপড় সহ অবয়ব টা কালো অন্ধকারে মিলিয়ে গেলো । চারপাশের পরিবেশটা আবার স্বাভাবিক রূপে ফিরে এলো । আমি তৎক্ষণাৎ ঐখান থেকে দৌঁড় দিয়ে চলে আসলাম ।আর আসার সময় শুনলাম পিছন থেকে আওয়াজ আসছে যে, কেউ আমায় বলছে
আজকের মত বেচেঁ গেলে । আর একটু হলেই তোকে মেরে ফেলতাম । তোর কপাল অনেক ভালো ।

আমি পিছনের কোনো কথায় কান না দিয়ে চলে আসি ভাইয়ার কাছে, সে আমাকে বলে যে তোর আসতে এত দেরি হলো কেনো। আমি ভাইয়া কে বলি আগে আমাদের এই জায়গা থেকে বের হতে হবে। তোমাকে বাসায় গিয়ে সব খুলে বলবো । এখন চলো যাই। ভাইয়া ও আমি বাসায় চলে আসি, বাসায় এসে আমার অনেক রাগ হয় যে বালের পুতুল এর জন্য লাইফ টা হেল হয়ে যাচ্ছে পুরো । আমি পুতুলটাকে সজোরে ফ্লোরে আছার মারি গায়ের জোরে এতে করে পুতুলটার একটা অংশ ভেঙ্গে যায় । আমি আর পুতুল টাকে উঠাই নি ।

রাতে ঘুমিয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ কারো কান্নার আওয়াজ এ ঘুম ভেংগে যায় আমার। খুঁজতে থাকি কান্নার উৎস কিন্তু কোথাও কাউকে দেখতে পাই নি । পড়ে দেখি যে পুতুল টা থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে । আর আমার আছার দেওয়ার পর সেটা ছিটকে যায় খাটের তলায় ।
আমি ভয়ে ভয়ে পুতুল এর কাছে গিয়ে দেখি যে সেটার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে আর এক নাগাড়ে কান্নার আওয়াজ আসছে। আমি পুতুল তাকে হাতে করে তুলে দেখলাম আমার রুম এর কোনায় কোনো এক মেয়ের কালো আবছায়া অবয়ব চুল এলোমেলো চেহারা দেখা যাচ্ছে না ।

মেয়েটা কান্নারত গলায় আমায় বলতে থাকলো যে তুই আমার পুতুল কে ছুড়ে মারার কে??? তোর জন্যে আমার সাধের পুতুল এর এক অংশ ভেঙ্গে গেছে ।
আমি লাইট অন করতেই দেখি লতা ।

লতা দাড়িয়ে আছে ।
তার চেহারা অনেক টা ভয়ংকর হয়ে গেছে । চোখের মণি সাদা হয়ে গেছে । তাকে দেখে অনেক ভয় পেয়ে যাই আমি ।

.......চলবে.......