Read Forced Marriage - 1 by Gourab in Bengali Love Stories | মাতরুবার্তি

Featured Books
  • ঝরাপাতা - 3

    ঝরাপাতাপর্ব - ৩বিয়ের দিন সকালে আলো ফোটার আগে হবু বর আর কনের...

  • মহাভারতের কাহিনি – পর্ব 120

    মহাভারতের কাহিনি – পর্ব-১২০ দশম দিনের যুদ্ধে ভীষ্মের পতনের ক...

  • জঙ্গলের প্রহরী - 5

    জঙ্গলের প্রহরীপর্ব - ৫- "এটা একটা গল্প মিঃ রায়। মিথ বলতে পা...

  • Forced Marriage - 1

    শ্বেতার মনে হয়, পৃথিবীর সব থেকে বিষাক্ত বিষের থেকেও তার বসের...

  • অন্তর্হিত ছায়া

    কলমে :- সূর্য্যোদয় রায়   পর্ব১:  নিরুদ্দেশের নোটবুক কলকাতা...

বিভাগ
শেয়ারড

Forced Marriage - 1

শ্বেতার মনে হয়, পৃথিবীর সব থেকে বিষাক্ত বিষের থেকেও তার বসের নামটা বেশি বিষাক্ত। রাজীব। একটা শব্দের মধ্যে এত ঘৃণা লুকিয়ে থাকতে পারে, সেটা সে আগে জানত না। আজ সকালে নিজের ডেস্কে বসে সে যখন গভীর মনোযোগে একটি ফাইল দেখছিল, তখনই তার কানে আসে সেই পরিচিত ভারী কণ্ঠস্বর।
"মিস সেন, আপনার কাজে আমি সন্তুষ্ট নই। এই রিপোর্টটা ঠিকমতো করা হয়নি।"
শ্বেতার মাথাটা আপনা-আপনিই উপরে উঠে আসে। সামনে দাঁড়িয়ে আছে রাজীব। তার মুখে বিরক্তি আর চোখে সেই চিরপরিচিত শীতলতা। শ্বেতা রিপোর্টটা হাতে নিয়ে দেখে, কোথাও কোনো ভুল নেই। তবুও সে তর্ক করল না। তার মায়ের চিকিৎসার জন্য এই চাকরিটা ভীষণ জরুরি। তাই সবটা মুখ বুজে সহ্য করে যাওয়া ছাড়া তার আর কোনো উপায় নেই। সে শুধু শান্তভাবে বলল, "আমি এটা ঠিক করে দিচ্ছি, স্যার।"
রাজীবের মুখে তখন একটা বাঁকা হাসি দেখা দিল। "এটা তো আপনার প্রতিদিনের কথা। মনে হচ্ছে আপনার মনোযোগ এখন আর কাজে নেই। হয়তো আপনার ব্যক্তিগত কোনো সমস্যা আছে।"
এই কথায় শ্বেতার রাগ আর নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। তার ভেতরে থাকা সব রাগ যেন একসঙ্গে জ্বলে উঠল। "আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আপনার মাথা ঘামানোর কোনো দরকার নেই, স্যার। আমি আমার কাজ ঠিকঠাক করি।"
রাজীব এবার আরও এগিয়ে আসে, "আপনার কাজ ঠিকঠাক করার সংজ্ঞাটা আমার সঙ্গে মিলছে না, মিস সেন। আর আমি আমার অফিসের একজন কর্মী হিসেবে আপনার ব্যক্তিগত জীবনের খোঁজ নিতে পারি।"
শ্বেতা আর কোনো কথা না বলে রাগে লাল হয়ে রিপোর্টটা হাতে নিয়ে তার ডেস্কে ফিরে আসে। চোখের কোণ থেকে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ছিল। সে দ্রুত সেটা মুছে নেয়। এই ঘৃণা, এই অপমান, এই কষ্ট... সবটার কারণ তার মায়ের অসুস্থতা। মায়ের চিকিৎসার খরচ জোগাতে তার আর কোনো উপায় নেই।
দুপুর নাগাদ শ্বেতা একটি কল পায়। ফোনের ওপাশ থেকে নার্স জানায়, তার মায়ের শারীরিক অবস্থা হঠাৎ খারাপ হয়েছে এবং তাকে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে। শ্বেতার পৃথিবীটা যেন মুহূর্তে থেমে গেল। সে দ্রুত রাজীবের কেবিনে গিয়ে তার দিকে তাকাল। তার মুখে কোনো অভিব্যক্তি ছিল না।
"স্যার, আমার মায়ের শরীর খুব খারাপ। আমাকে এখনই যেতে হবে।"
রাজীব তার ডেস্ক থেকে চোখ না তুলেই বলল, "আপনার ছুটি দরকার? ঠিক আছে। আপনি যেতে পারেন।"
শ্বেতা দ্রুত অফিস থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু সে বুঝতে পারে না, তার অফিসের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজীব তার এক কর্মচারীকে ডেকে কিছু নির্দেশ দেয়।
সন্ধ্যার দিকে শ্বেতা হাসপাতাল থেকে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরছিল। তার মনে হচ্ছিল, তার জীবনের সব আলো নিভে গেছে। এমন সময় তার ফোনে একটি মেসেজ আসে। অচেনা একটি নম্বর থেকে। মেসেজটি খুলে শ্বেতা চমকে ওঠে। তার মায়ের চিকিৎসার সব বিল পরিশোধ করা হয়েছে। আর নিচে লেখা, "আপনি আর আপনার মায়ের জীবন আমার হাতে।"
শ্বেতা বুঝতে পারছিল না, কী হচ্ছে। সে দ্রুত সেই নম্বরে কল করে। ফোনের অপর প্রান্তে সেই ঠান্ডা আর পরিচিত কণ্ঠস্বর, "মিস সেন, আমি জানি আপনি আমাকে ঘৃণা করেন। কিন্তু আমার কাছে আপনার জন্য একটা চুক্তি আছে। আপনার মায়ের চিকিৎসার সব খরচ আমি বহন করব। কিন্তু তার বদলে আপনাকে আমার সঙ্গে অভিনয় করতে হবে। আমার দাদুর জন্য। আমার ভালোবাসার অভিনয় করতে হবে।"
শ্বেতার চোখের সামনে সব কিছু যেন অন্ধকার হয়ে গেল। সে রাজীবের এই কথা শুনে ভয়ে কাঠ হয়ে গেল। কিন্তু তার মায়ের কথা ভেবে তার নিজেকে দুর্বল মনে হলো। রাজীবের এই চুক্তি কি তার জীবন বদলে দিতে চলেছে? সে কি এই চুক্তিটা মেনে নেবে?
"আপনার কি সত্যিই এতটা ঠান্ডা মস্তিষ্ক, যে চুক্তিতে প্রেম খুঁজবেন না?"

রাজীবের এই চুক্তির প্রস্তাব শুনে শ্বেতা কী প্রতিক্রিয়া দেবে, তা জানতে চোখ রাখুন পরের পর্বে!

চলবে……

(পর্বটি কেমন লাগলো জানাবেন প্লিজ)