Featured Books
বিভাগ
শেয়ারড

টোটোচালক টিপু ও অদ্ভুত তিন যাত্রীর হাসির কাণ্ড






😂 টোটোচালক টিপু ও অদ্ভুত তিন যাত্রীর হাসির কাণ্ড

(একটি বড়, অন্যরকম, মজার গল্প)

উলুবেরিয়ার কাছাকাছি এক ছোট্ট শহরে টিপু নামে একটা টোটো চালক ছিল।
টিপুর টোটো দেখতে সাধারণ হলেও পিছনের গায়ে লেখা ছিল—

“আমি রাস্তায় থাকি, রাস্তা আমার উপর নয়!”

গ্রামের সবাই টিপুর টোটোয় উঠতে ভালোবাসত, কারণ টিপুর মুখে প্রতিদিন নতুন গল্প, নতুন কাণ্ড।

একদিন সকালে টিপু টোটো নিয়ে বের হয়েছে, ঠিক তখনই এক অদ্ভুত দিন শুরু হল।


---

⭐ প্রথম যাত্রী: গণিত প্রফেসর

টোটোয় উঠে প্রথম যাত্রী বলল—
— “বাজার যাব।”

টিপু বলল—
— “ঠিক আছে, কিন্তু ভাড়া দেবেন লজিক দিয়ে?”

প্রফেসর অবাক—
— “লজিক দিয়ে ভাড়া?”

টিপু বলল—
— “হ্যাঁ! আপনি তো গণিতের প্রফেসর…
ভাড়া = দূরত্ব × (হাসির পরিমাণ ÷ বিরক্তির মাত্রা)”

প্রফেসর হাসতে গিয়ে বলল—
— “আমার হাসির মাত্রা কম।”

টিপু বলল—
— “তাহলে ভাড়া বেশি হবে।”

প্রফেসর চুপ।
গাড়ি যখন বাজারে পৌঁছাল, টিপু বলল—
— “ভাড়া দিন ১৫ টাকা।”

প্রফেসর বলল—
— “কিন্তু এত কম কেন?”

টিপু হেসে বলল—
— “আপনার মুখ দেখে বুঝেছি আজ বকুনি খেয়ে আসছেন, তাই ডিসকাউন্ট!”

প্রফেসর হেসে টিপুকে ২০ টাকা দিয়ে চলে গেল।


---

⭐ দ্বিতীয় যাত্রী: রহস্যময় ব্যাগওয়ালা লোক

পাঁচ মিনিট যেতেই দেখল—এক লোক বিশাল ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে।
লোকটা বলল—
— “আমার ব্যাগের ভয়ে কেউ আমাকে টোটোয় নেয় না, তুমি নেবে?”

টিপু বলল—
— “ভূত-প্রেত ছাড়া সবই উঠবে!”

ব্যাগটা উঠানো হল।
ব্যাগ এমন ভারি যে টোটোর সিট একটু বাঁকিয়ে গেল।

টিপুর সন্দেহ—ব্যাগে কি মাথা? কি রাক্ষস? কি কুমির?

টিপু ধীরে জিজ্ঞেস করল—
— “ভাই, ব্যাগে কি আছে?”

লোকটা গম্ভীর গলায় বলল—
— “একটা খুব ভয়ঙ্কর জিনিস…
যেটা মানুষকে ঘুম পাড়িয়ে দেয়…
যেটা ছুঁলে কেউ হাসা বন্ধ করতে পারে না…”

টিপুর ভোঁচকা—
— “মশা নাকি?”

লোক হেসে ওঠে—
— “না ভাই, বাচ্চাদের খেলনা পাপেট! মেলায় বিক্রি করব।”

টিপু মনে মনে বলল—
“এই ভয় দেখানোর মানুষ তো আমাকে দেখেনি!”

যাই হোক, লোকটা নেমে ব্যাগ নামাতেই টোটো হালকা হয়ে টিং! করে ওঠে।


---

⭐ তৃতীয় যাত্রী: পাগলা কবি

এবার টিপুর টোটোয় উঠল পাড়ার বিখ্যাত পাগলা কবি—
চুল এলোমেলো, গালে দাড়ি, চোখে নাটুকে ভাব।

কবি উঠে বলল—
— “টোটো চালাও, কিন্তু থামবে না!”

টিপু অবাক—
— “কোথায় যাব?”

কবি হাত উঁচু করে—
— “গন্তব্য নয়, পথই কবিতা!”

টিপু মাথা চুলকে বলল—
— “ভাই, আমি টোটো চালাই, দার্শনিক নই!”

কবি টোটোতে বসেই কবিতা আবৃত্তি শুরু করল—

“পথে পথে বাতাস, টিপুর টোটো উড়াস—
বাতাসে মাছ, মেঘে উঠল পেঁচাস!”

টিপু চমকে—
— “বাবা! ওটা কবিতা নাকি রান্নার রেসিপি?”

কবি আবার—
— “ওহে চালক! তুমি কবিতা বোঝো না!”

টিপু বলল—
— “ভাড়া বোঝি।”

কবি ভাবল, মানুষটা বেশ কাজের কথা বলে।
শেষে নেমে একটা কবিতার বই বের করে টিপুকে দিল।
বইয়ের নাম—

“কবিতা যখন টোটোয় চড়ে”

টিপু বলল—
— “ভাই, ভাড়াই দিন, বই দেখে বাড়িতে আমার বাপও ভয় পাবেন।”

কবি হেসে ভাড়া দিয়ে চলে গেল।


---

⭐ বড় কাণ্ড—একের পর এক যাত্রী এসে ঝামেলা শুরু

টিপু ভাবল সব শেষ…
তখনই টোটোয় একসাথে উঠে তিনজন—

1. এক বাচ্চা


2. বাচ্চার মা


3. আর বাচ্চার দিদা



টোটো যেতেই বাচ্চা চিৎকার করতে লাগল—
— “টিপু দা! টিপু দা! হর্ন দাও!”

টিপু টিং টিং হর্ন দিল।
মা বলল—
— “বাচ্চাকে বেশি খুশি করো না, মাথায় উঠবে।”

দিদা বলল—
— “ওরে বাপ! ও হর্ন দিলে আমার মাথা ধরছে।”

টিপুর মাথা ঘুরে গেল—
এ কী তিনটা তিন রকম নির্দেশ!

দশ মিনিট এভাবে চলার পর টিপু চিৎকার করল—
— “নামুন! না হলে টোটো না চালিয়ে আমি ট্রেন চালাতে যাব!”

ওরা হাসতে হাসতেই নামল।


---

⭐ দিনের বড় টুইস্ট—টোটো পুলিশ স্টপ!

ফেরার পথে পুলিশ টোটো থামাল।

পুলিশ বলল—
— “কাগজ দেখান।”

টিপু কাগজ দিল।
পুলিশ চমকে—
— “গাড়ির নাম কী?”

টিপু বলল—
— “'দ্রুত-টোটো'।”

পুলিশ কাগজে দেখল—
“যানবাহনের নাম: উড়ন্ত বাঘা টিপু”

পুলিশ:
— “এটা আবার কী?”

টিপু মাথা চুলকে বলল—
— “রেজিস্ট্রেশন করতে গেছি, ক্লার্ক আমাকে জিজ্ঞেস করল—
'টোটো কি খুব দ্রুত চলে?' আমি বললাম—
‘হ্যাঁ, বাঘার মতো দৌড়ায়!’
সে শুনেছে—‘উড়তে পারে’। তাই লিখে দিয়েছে!”

পুলিশ হেসে লুটোপুটি খেয়ে বলল—
— “এমন কাগজ আমি প্রথম দেখলাম। যাও যাও, উড়ন্ত বাঘা টিপু!”

টিপু টোটো চালিয়ে বলল—
— “চলো বাঘারা! উড়ি!” 😂


---

😆 শেষ কথা

এক দিনের শেষে টিপু বাড়ি ফিরে নিজের টোটোর দিকে তাকিয়ে বলল—
“যদি টোটো কথা বলতে পারত, তো বলত—
‘আজ আর কত পাগলকে বইবি রে বাবা!’”

টিপু হাসতে হাসতেই বাড়ি ঢুকে গেল।