Read Forced Marriage - 3 by Gourab in Bengali Love Stories | মাতরুবার্তি

Featured Books
  • Forced Marriage - 3

    শ্বেতা একটি গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে। এই চুক্তিটা তার কাছে নিজের...

  • জঙ্গলের প্রহরী - 8

    জঙ্গলের প্রহরীপর্ব - ৮গাড়ি থেকে নেমে সবাই শুক্লাকে ঘিরে দাঁ...

  • LOVE UNLOCKED - 2

    Love Unlocked :2Pritha :"কিরে তখন থেকে কি ভাবছিস বলতো ?" ক্ল...

  • ঝরাপাতা - 5

    ঝরাপাতাপর্ব - ৫রনিকে ঘিরে ধরে যখন বোঝানো হচ্ছে, মিলিকে বিয়ে...

  • মহাভারতের কাহিনি – পর্ব 122

    মহাভারতের কাহিনি – পর্ব-১২২ শরশয্যায় ভীষ্মের কাছে কর্ণের আগম...

বিভাগ
শেয়ারড

Forced Marriage - 3



শ্বেতা একটি গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে। এই চুক্তিটা তার কাছে নিজের সত্তা বিকিয়ে দেওয়ার সমান। কিন্তু তার মায়ের মুখের দিকে তাকালে সব ঘৃণা, রাগ আর অভিমান তুচ্ছ মনে হয়। সে জানে, এই চুক্তি না মেনে নেওয়ার পরিণতি হতে পারে মায়ের জীবনহানি। এই ভাবনাতেই তার বুক কেঁপে ওঠে।
পরের দিন শ্বেতা রাজীবের অফিসে গেল। এটা তার কাছে কোনো সাধারণ অফিস নয়, যেন একটা যুদ্ধের ময়দান। সে রাজীবের কেবিনে প্রবেশ করল। রাজীব তার চেয়ারে বসেছিল। শ্বেতাকে দেখে তার মুখে কোনো পরিবর্তন এল না। সেই একই নির্লিপ্ততা, একই শীতলতা।
"আপনি এসেছেন, মিস সেন। আমি জানতাম আপনি আসবেন।" রাজীব টেবিলের ওপর একটি খাম রাখল। "এই নিন, আপনার মায়ের হাসপাতালের সব কাগজপত্র। এখন থেকে সব খরচ আমার দায়িত্ব।"
শ্বেতা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। রাজীবের এই দিকটা সে আগে কখনো দেখেনি। এক হাতে সে তাকে আঘাত করছে, আবার অন্য হাতেই তার জীবনের সবচেয়ে বড় সংকট সমাধান করে দিচ্ছে। শ্বেতা চুপ করে খামটি হাতে নিল।
"তবে তার আগে আপনাকে আমার দাদুর সঙ্গে দেখা করতে হবে," রাজীব বলল। "তিনি আমাকে সব সময় মনে করিয়ে দেন, আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হলো একা থাকা। আর তার এই অসুস্থতার কারণে তার সামনে আমাকে মিথ্যা বলা সম্ভব নয়।"
"দাদু কেমন মানুষ?" শ্বেতা জানতে চাইল।
রাজীবের মুখে এবার একটা হালকা হাসি দেখা গেল। "আমার দাদু এই পৃথিবীর সবচেয়ে দয়ালু মানুষ। তার কাছে আমি আমার সব দুঃখ লুকিয়ে রাখি। এই চুক্তির কারণও তিনি। তার শেষ ইচ্ছা আমার বিয়ে দেখে যাওয়া।"
এইবার শ্বেতা বুঝতে পারল, কেন রাজীব এত কঠিন আর নির্মম। হয়তো দাদুর জন্যই সে এই অভিনয় করতে রাজি হয়েছে। কিন্তু শ্বেতার নিজেরও একটা শর্ত আছে। সে এই চুক্তি মেনে নেবে, কিন্তু তার বিনিময়ে রাজীবকে তার সম্মান রক্ষা করতে হবে।
"আমি এই চুক্তি মেনে নেব, স্যার," শ্বেতা বলল। "কিন্তু আমার কিছু শর্ত আছে।"
রাজীবের ভ্রু কুঁচকে উঠল, "শর্ত? আপনি আমার সঙ্গে শর্ত দিচ্ছেন?"
"হ্যাঁ, স্যার," শ্বেতার গলা এবার দৃঢ় শোনাল। "আমি আপনার সঙ্গে ভালোবাসার অভিনয় করব, কিন্তু তার বিনিময়ে আপনি কখনো আমার প্রতি ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে পারবেন না। এই চুক্তি কেবল আপনার দাদুর সামনে। আমাদের বাস্তব জীবনে আপনি আমার বস, আর আমি আপনার কর্মী। আর... আমি আমার মায়ের চিকিৎসার জন্য এই কাজ করছি, তাই কোনোভাবেই আমার মায়ের চিকিৎসা বন্ধ করতে পারবেন না। যদি কোনো কারণে আপনি আমাদের অভিনয় ফাঁস করে দেন, তাহলে চুক্তির সব শর্ত বাতিল হবে।"
রাজীব কিছুক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে রইল। তার চোখে ছিল এক ধরনের বিস্ময়। হয়তো শ্বেতার এই সাহস সে আশা করেনি।
"ঠিক আছে, মিস সেন। আপনার শর্ত মেনে নিলাম। কিন্তু মনে রাখবেন, এই চুক্তিতে আমারও কিছু শর্ত আছে।" রাজীব এবার একটি ফাইল বের করল। "এই দেখুন, চুক্তির সব শর্ত লেখা আছে। আপনাকে এইগুলো মেনে চলতে হবে। আর যদি আপনি কোনো শর্ত ভেঙে দেন, তাহলে আপনার মায়ের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যাবে।"
শ্বেতা ফাইলটা হাতে নিল। তার হাত কাঁপছিল। ফাইলটা খুলতেই সে দেখল, তাতে লেখা ছিল: "চুক্তির ভালোবাসা"। শ্বেতা ফাইলটা দেখে নিজেকে আরও দুর্বল মনে করল। এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর তার জীবন কোন দিকে যাবে, তা সে জানে না। তবে সে নিশ্চিত, এটি তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত।
"মিস সেন, আপনাকে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে হবে। আর মনে রাখবেন, অভিনয়টা যেন বিশ্বাসযোগ্য হয়। কারণ আমার দাদু খুব বুদ্ধিমান। তিনি মিথ্যা ধরতে খুব পারদর্শী।"
শ্বেতা ফাইলটা হাতে নিয়ে সই করল। রাজীব তার দিকে তাকিয়ে একটা নির্লিপ্ত হাসি দিল। শ্বেতার মনটা ভেঙে যাচ্ছিল। সে তার জীবনে এমন একটি কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে, যেখানে তার নিজের কোনো অস্তিত্ব নেই। সে শুধু তার মায়ের জন্য এই কাজটি করছে।
শ্বেতা রাজীবের কেবিন থেকে বেরিয়ে এল। কিন্তু তার মনে একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল, রাজীবের এই নির্মমতার পেছনে কি শুধু তার দাদুর প্রতি ভালোবাসা, নাকি অন্য কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে?

চলবে……
(পর্বটি কেমন লাগলো জানাবেন প্লিজ)