Read On Modiji's birthday by KRISHNA DEBNATH in Bengali জীবনী | মাতরুবার্তি

Featured Books
বিভাগ
শেয়ারড

মোদিজীর জন্মদিনে

আজকের দিনটা ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ আজ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি তাঁর জীবনের ৭৫তম বছরে পা রাখলেন।

মোদিজীর রাজনৈতিক জীবন ও প্রধানমন্ত্রীত্ব নিয়ে বহুমুখী আলোচনা হয়। সমর্থকরা প্রশংসা করেন, বিরোধীরা সমালোচনা করেন। কিন্তু কিছু দিক আছে যা সাধারণ আলোচনায় খুব একটা আসে না, অথচ এসব দিকগুলো তাঁর নেতৃত্বের সবচেয়ে গভীর চিহ্ন এঁকে রেখেছে ভারতের অগ্রযাত্রায়।

জনজীবনের পরিবর্তনের নীরব বিপ্লব: ২০১৪ সালে “জনধন যোজনা” শুরু হয়েছিল এক সাহসী স্বপ্ন নিয়ে। তখন হয়তো কেউ কল্পনাই করতে পারেনি যে, মাত্র একদিনেই কোটি কোটি মানুষ প্রথমবারের মতো ব্যাঙ্কিংয়ের আওতায় চলে আসবেন। এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলো শুধু কাগজের সংখ্যা নয়— এগুলো হলো একেকটা দরজা, যার ওপাশে ছিল ঋণ, বীমা, পেনশন আর ভরসার আলো।
গ্রামের গরিব কৃষক, শহরের দিনমজুর কিংবা গৃহবধূ— হঠাৎ করেই তারা হয়ে গেলেন ভারতের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অংশীদার।

শৌচাগার মানেই সম্মান: "স্বচ্ছ ভারত অভিযান” নিয়ে শহরে ঠাট্টা-তামাশা অনেক হয়েছে। কিন্তু যারা গ্রামে থাকেন, যারা খোলা জায়গায় বাধ্য হয়ে শৌচকর্ম করতেন, তাদের কাছে এই উদ্যোগটা কেবল স্বাস্থ্য নয়, মর্যাদারও বিষয়। প্রায় ৯ কোটি শৌচাগার শুধু ইট-পাথরের সংখ্যা নয়— ওগুলো হলো নারীর নিরাপত্তা, শিশুর সুস্থতা, আর সমাজের মানসিকতায় এক বড় পরিবর্তন।

গতি-শক্তির অদৃশ্য জাল: “গতি শক্তি” প্রকল্পের কথা বেশি মানুষ শোনেনি। কারণ এর কাজ চোখে ধরা যায় না রঙিন বিজ্ঞাপনের মতো। কিন্তু এই ডিজিটাল মাস্টারপ্ল্যান আস্তে আস্তে বদলে দিচ্ছে ভারতের অবকাঠামোর মানচিত্র।
রাস্তা, রেল, বন্দর, বিমানবন্দর— সবকিছু এক প্ল্যাটফর্মে এনে যে মাল্টিমোডাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে, তার আসল সুফল টের পাওয়া যাবে আগামী দশকে। তখন বোঝা যাবে, কীভাবে একটি সরকারের পরিকল্পনা গোটা অর্থনীতিকে নতুন ছন্দে বেঁধে দিয়েছিল।

কৃষক থেকে প্রযুক্তি পর্যন্ত: কৃষিক্ষেত্রে “মাটি স্বাস্থ্য কার্ড” কিংবা "ফসল বিমা যোজনা" হয়তো কাগজে কলমে ছোট পদক্ষেপ মনে হয়, কিন্তু এগুলো মাঠে কৃষকের আয়ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।
“কৃষি উন্নতি মেলা” শুধু মেলা নয়— এটা ছিল এক ধরনের সেতুবন্ধন, যেখানে কৃষক প্রথমবার সরাসরি প্রযুক্তি ও নতুন জ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত হলেন। কৃষককে কেন্দ্র করে প্রযুক্তির এই সংযোগ ভবিষ্যতের ভারতকে আরও টেকসই করবে।

বিশ্বের দরবারে ভারত: আজ আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত আর শুধু একটি “উদীয়মান অর্থনীতি” নয়, বরং বহু ক্ষেত্রেই এজেন্ডা সেটার। জলবায়ু পরিবর্তন, নবায়নযোগ্য শক্তি, আন্তর্জাতিক যোগ দিবস, জি২০ সম্মেলন— সব জায়গায় মোদিজীর নেতৃত্ব ভারতকে শুধু অংশগ্রহণকারী নয়, বরং পথপ্রদর্শকের ভূমিকায় নিয়ে গেছে।
যেটা প্রায়শই ভুলে যাওয়া হয়, তা হলো— এই কূটনৈতিক সাফল্য আসলে দেশের ভেতরে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। ভারতের সাধারণ মানুষ আজ নতুন ভরসায় বলতে পারে— "আমাদের দেশ পিছিয়ে নেই, আমরাও এখন নেতৃত্ব দিচ্ছি।"

সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের পুনর্জাগরণ: যোগ থেকে শুরু করে প্রাচীন পাণ্ডুলিপি ডিজিটাইজ করা পর্যন্ত, এক নতুন সাংস্কৃতিক সচেতনতার জন্ম দিয়েছে এই সরকার।
আজ “যোগ” আর শুধু সাধনার বিষয় নয়—এটা ভারতের সফট এনার্জির সবচেয়ে বড় রপ্তানি হয়ে উঠেছে। এই সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ অনেকটা নীরবে হলেও ভারতীয় চেতনায় স্থায়ী ছাপ রেখে যাচ্ছে।

আজকের দিনে, যখন আমরা মোদিজীর জন্মদিন উদযাপন করি, তখন শুধু রাজনৈতিক দিক থেকে নয়, জীবনের বাস্তবতায় তিনি যে পরিবর্তনগুলো এনেছেন, তা স্মরণ করাই জরুরি।

একদিনের মধ্যে কোটি কোটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা,
কোটি কোটি শৌচাগার নির্মাণ করে গ্রামীণ জীবনে মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া,
গতি শক্তির মতো নীরব বিপ্লবের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ অবকাঠামোর পথ তৈরি করা,
কৃষককে প্রযুক্তি ও বীমার সঙ্গে যুক্ত করা,
আন্তর্জাতিক দরবারে ভারতকে দৃঢ় কণ্ঠ দেওয়া,
এবং সংস্কৃতিকে নতুন করে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠা করা— এসবই এমন অর্জন যা কেবল আজকের নয়, আগামী প্রজন্মও অনুভব করবে।

শুভ জন্মদিন নরেন্দ্র মোদিজী। 🙏💐🙏
আপনার নেতৃত্বে ভারত হোক আরও আত্মনির্ভর, আরও মর্যাদাবান, আরও উন্নত। 🇮🇳❤️🇮🇳