অফিসের সমস্ত কাজ শেষ করে যখন অতিশ হাজরা অফিস টাকে বন্ধ করার জন্য কী-ডেস্ক থেকে চাবিটা আনতে গেল তখন সেখানকার টেবিলে রাখা একটা সাদা খামে মোড়া চিঠি দেখতে পেলো | অতিশ হাজরা চিঠিটা হাতে নিয়ে দেখলো | খামের উপরে অতিশ হাজরা নাম লেখা আছে |
অতিশ হাজরা মনে মনে বললো , আমার জন্য চিঠি ! ....... কে পাঠিয়েছে ?
চিঠিটার প্রথম ভাজ খুলতেই তাতে বড় বড় অক্ষরে লেখা আছে সাবধান .......... চিঠিটা পড়বেন না |
অতিশ হাজরা প্রথমে মনে করলো হয়তো তাকে কেউ ভয় পাওয়ানোর চেষ্টা করছে | অতিশ হাজরা সাবধানতা বাণী উপেক্ষা করে চিঠিটা দ্বিতীয় ভাজটা খুলে ফেলল | চিঠিটার মধ্যে একটি কবিতা লেখা ছিলো |
অতিশ হাজরা মনে মনে একটু হেসে বললো , এই সাধারণ একটা কবিতার জন্য সাবধানতা বাণী !
অতিশ হাজরা জোরে জোরে কবিতাটি পড়তে লাগলো | কবিতাটি পড়ার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই কেমন যেন একটা অজানা ভয় অতিশ হাজরার মনে জমাট বাঁধতে লাগলো | অতিশ হাজরার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম ফুটে উঠলো | এবার ধীরে ধীরে অতিশ হাজরার সারা শরীর আরষ্ট হতে শুরু করলো | রুমাল দিয়ে কপালের ঘাম পুঁছতে-পুঁছতে যখন অফিস থেকে বাইরে বেরোতে যাবে এমন সময় অফিসের দরজা বন্ধ হয়ে গেল এবং অফিস এর সমস্ত লাইটগুলো নিভতে-জ্বলতে শুরু করল। এবার অতিশ হাজার একটু ভয় পেতে শুরু করলো | আলো গুলো জ্বলা নেভা করতে করতে একসময় সব আলো নিভে গেল | পুরো অফিসটা একেবারে গাড় অন্ধকারে ঢেকে গেল এবং সেই অন্ধকার এর মধ্যে থেকে একটা ভয়ংকর হাড় হিম করা দানবীয় হাসি শুনতে পাওয়া গেল | অতিশ হাজার এবার প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেল |
অতিশ হাজার ভয়ার্ত কন্ঠে বললো , কে ...... ?
কোনো উত্তর নেই | সব চুপচাপ |
অতিশ হাজার কাঁপা-কাঁপা হাতে পকেট থেকে ফোনটা বার করে টর্চ জ্বালানোর চেষ্টা করল কিন্তু ফোনের চার্জ না থাকার কারণে টর্চ জ্বললো না | নিস্তব্ধ ঘরে অতিশ হাজরার হৃদপিন্ডের ধুকপুকুনি শব্দ ছাড়া আর কিছুই শুনতে পাওয়া গেল না | তারপর যা ঘটলো তা অত্যন্ত ভয়ংকর | সেই অন্ধকারের মধ্যে অতিশ হাজার একটি লাল গনগনে চোখ দেখতে পেলো | মনে হচ্ছে যেন সেই চোখে দাউ-দাউ করে আগুন জলছে | অতিশ হাজারর মনে হলো যেন সেই চোখ দুটো তাকেই দেখছে | তারপর অফিসের সমস্ত আলো জ্বলে উঠলো এবং অতিশ হাজার যা দেখলো তাতে তার পুরো শরীর অবশ হয়ে গেল | সামনে আধা মানুষ এবং আধা জন্তুর সমন্বয় এ তৈরী একটা ভয়ানক দানব দাড়িয়ে আছে | দানবটার চোখে একটি হিংস্র চাওনি |
সেই দানবটার হাত থেকে বাঁচার জন্য অতিশ হাজরা পালানোর চেষ্টা করল | কিন্তু পারল না | সেই দানবটা তার লক লকে সরু জিভ দিয়ে অতিশ হাজারর পুরো শরীরটাকে জড়িয়ে ধরল | তারপর অতিশ হাজারর শরীরটাকে শূন্যে ভাসিয়ে দিয়ে সজোরে মেঝেতে আছার মারলো | অতিশ হাজার একটা প্রচন্ড আর্তনাদ করে উঠল | অতিশ হাজার কপাল ফেটে রক্ত বেরোতে শুরু করলো | তারপর আবার অতিশ হাজার শরীরটাকে শূন্যে ভাসিয়ে অফিসের দেওয়ালে প্রচন্ড জোরে আছাড় মারতে লাগলো এবং শেষ পর্যন্ত আরও একবার অতিশ হাজারর শরীরটাকে সজোরে মেঝেতে আছার মারলো | অতিশ হাজারর মাথা ফেটে ঘিলু গুলো মেঝের চারপাশে ছড়িয়ে পড়ল | অতিশ হাজারর শরীর থেকে রক্তের প্রবাহমান ধারা বইতে শুরু করল | কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ঘরটা রক্তের স্রোতে ভেসে যেতে শুরু করলো |