Featured Books
বিভাগ
শেয়ারড

অসম্পূর্ণ চিঠি - 4

অজানা রেখা

ঈশার সকালটা শান্তির মতো শুরু হলো। কিন্তু বুকের ভেতর এখনও সেই উত্তেজনা বাসা বেঁধেছে। রাতের স্বপ্নের চিঠি, অভ্রর চোখের রহস্যময় দৃষ্টি—সবই যেন বারবার ফিরে আসছে। কলেজের ক্লাসে বসে বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছিল, কিন্তু মনোযোগ কেমন যেন বিচ্ছিন্ন।

সেই সময় অভ্র ক্লাসে প্রবেশ করল। হঠাৎ তার চোখ পড়ল ঈশার দিকে।
“আজও মন তোমার কোথায়?” সে মৃদু হেসে বলল।
ঈশা চোখ কুঁচকে তাকাল, “আমার মন সবসময় নিজের মধ্যে থাকে।”

অভ্র বসে গেল পাশে। কিছুক্ষণ নীরবতা। তারপর হঠাৎ বলল,
“কিছু সময় কিছু সত্যি প্রকাশ পায় না, কিন্তু মানে হারায় না।”
ঈশার মনে কেমন যেন কাঁপুনি। সে জানল—অভ্র কেবল মজা করছে না, কিছু বলার আছে।

ক্লাস শেষে অভ্র বলল,
“চল, ক্যাফেটেরিয়াতে চা খেতে?”
ঈশা প্রথমে হেলায় না। কিন্তু ভিতরে কৌতূহল জেগে উঠল। সে শেষ পর্যন্ত রাজি হলো।

ক্যাফেটেরিয়ার ছোট্ট টেবিল। চায়ের গরম কাপ। দুজনেই নীরব। কিছুক্ষণ পর অভ্র বলল,
“আজকে তোমার সঙ্গে আবার দেখা হয়েছে। মনে হয়, সব কিছু কাকতালীয় নয়।”
ঈশা কিছু না বলে চা ফুঁকতে থাকল। মনে হলো—এই মুহূর্তের মধ্যে যেন ওর জীবন ধীরে ধীরে বাঁধা পড়ছে।

অভ্র হঠাৎ বলল,
“এই গিটার কেসের মধ্যে কিছু আছে, যা আমি আজও তোমাকে দেখাইনি। মনে করো, এটি শুধুই সুর নয়।”
ঈশা কৌতূহল নিয়ে প্রশ্ন করল,
“কী ধরনের কিছু?”
অভ্র চোখে মৃদু ছায়া রেখে বলল,
“ভবিষ্যতের জন্য লুকানো কিছু। কিন্তু এটা দেখার আগে তোমার ধৈর্য প্রয়োজন।”

ঈশা চমকে উঠল। কিসের ধৈর্য? কেন ওর প্রতি এত আস্থা? মনে হলো—ভালোবাসা শুধু অনুভূতি নয়, আরেকটু সাহসও চায়।

সেদিন বিকেলে ঈশা ঘরে ফিরে ডায়েরি খুলল। হাতে কলম নিয়ে লিখতে বসল—
"আজ অভ্র আমাকে আবার কাছে নিয়ে এসেছে। তার চোখে কিছু লুকোনো কথা। আমি জানি না কি, কিন্তু মনে হচ্ছে আমাদের মধ্যে কোনো অদৃশ্য রেখা টানা হয়েছে।"

ঠিক সেই সময় ঈশার কক্ষে ফোনের নোটিফিকেশন এলো। এক অচেনা নাম—“অজানা পাঠক”।
বার্তা পড়ল:
"সব সত্যি প্রকাশ পাবে যখন তুমি প্রস্তুত হবে। কিন্তু মনে রেখো, সবকিছু সহজ নয়।"

ঈশা হঠাৎ স্থির হয়ে গেল। বুকের ভেতর অজানা উত্তেজনা। মনে হলো—এই মুহূর্তে ভালোবাসা আর রহস্য একসাথে হাঁটছে। অভ্র আর অজানা পাঠক, দুজনেই যেন তাকে নতুন দুনিয়ার দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

রাতের দিকে ঘুমাতে গিয়ে ঈশার মন কেঁপে উঠল। শুধু প্রেমের আনন্দ নয়, কিছু অজানা ভয়ও। মনে হলো—অভ্রর সঙ্গে সম্পর্ক শুধু হাসি-খুশি নয়, সেখানে লুকোনো কিছু আছে, যা একদিন প্রকাশ পাবে। এবং সেই প্রকাশ জীবনের সবকিছু বদলে দিতে পারে।

---
ঈশা জানে না, অভ্র কেবল একজন প্রেমিক নয়। তার অতীতে লুকোনো এক রহস্য আছে, যা ধীরে ধীরে প্রকাশ পাবে।
আর সেই রহস্যের ছায়ায়, ঈশার জীবন নতুনভাবে বাঁধা পড়তে চলেছে।


---
সকালের আলোয় ভিজে মন,
তবু বুকের ভিতর কাঁপন গোপন।
স্বপ্নের চিঠি, রহস্যের চোখ,
সবই যেন ডাকে অচেনা লোক।

ক্লাসের মাঝে চোখের দেখা,
অভ্রর হাসিতে লুকায় রেখা।
চা–এর ধোঁয়া, নীরবতা ভরা,
মনে হলো জীবন কোথাও বাঁধা।

গিটারের কেসে সুর নয় শুধু,
লুকিয়ে আছে অজানা কিছু।
ধৈর্যের পরীক্ষা, ভবিষ্যতের কথা,
প্রেমের সাথে রহস্যের ব্যথা।

ডায়েরির পাতা কেঁপে ওঠে,
কলমে লিখি মন খোলা রাতে।
“আমাদের মাঝে রেখা টানা,
তবু দূরে নয়, খুব কাছে জানা।”

হঠাৎ এল বার্তা নতুন,
অজানা পাঠক দিল ইঙ্গিত গোপন।
“সব সত্যি হবে একদিন প্রকাশ,
কিন্তু সহজ নয় জীবনের পাশ।”

ঘুমের আগে বুক কাঁপে হাওয়ায়,
প্রেমের সাথে ভয়ও পাওয়া যায়।
অভ্রর চোখে যে ছায়া খেলে,
জীবন একদিন সব খুলে দেয় মেলে।
---
গল্পের শেষ পর্যন্ত সঙ্গে থাকার জন্য সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। লিখতে গিয়ে কোথাও ভুল হলে তা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনাদের প্রতিটি মন্তব্য আমার কাছে অত্যন্ত মূল্যবান, কারণ পাঠকের প্রতিক্রিয়াই লেখকের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। আপনারা কীভাবে গল্পটা অনুভব করলেন, কোন অংশ ভালো লেগেছে বা কোথায় আরও ভালো করা যেত—সবটাই জানালে আমার পরবর্তী লেখাগুলোতে নতুন রঙ যোগ হবে। আপনাদের ভালোবাসা আর মতামতই আমার কলমের জ্বালানি। তাই দয়া করে মন্তব্য করতে ভুলবেন না।