তুমি আমাকে জ্বালিয়ে দিলে, আমি এখন নিজের আগুনে পুড়ছি।**
ইশা একা দাঁড়িয়ে ছিল বারান্দায়। রাত অনেক হয়েছে। বাতাস ঠান্ডা, কিন্তু তার শরীরের ভেতরে যেন দাবানল জ্বলছে।
রুদ্র চলে গেছে কিছুক্ষণ আগে, কিন্তু তার নিঃশ্বাস এখনও কানে বাজে।
হঠাৎ দরজার বেল বাজল।
সে চমকে উঠল।
দরজা খুলতেই রুদ্র। চোখে ক্লান্তি, ঠোঁটে অভিমান।
তুমি কি ভেবেছিলে এত সহজে চলে যাবো? রুদ্র ফিসফিস করল।
ইশার ঠোঁট কেঁপে উঠল। সে কিছু বলল না।
রুদ্র ধীরে ধীরে ঘরে ঢুকল, তার দিকে এগিয়ে এল।
তুমি যখন বললে—তুমি আমাকে আগুন হয়ে চাও, তখন কি বুঝেছিলে আমি আসবো না?
ইশা পিছিয়ে গেল। কিন্তু থেমে যায় দেওয়ালে।
রুদ্র তার খুব কাছে এসে দাঁড়াল।
আজ আমি আগুনে পোড়তে এসেছি, ইশা। তুমি থামাবে?
ইশা চুপ করে ছিল, তার চোখে ভিজে আগুন।
রুদ্র তার চিবুকে স্পর্শ করে বলল,
তুমি জানো না, এই নিঃশ্বাস, এই গন্ধ… এই আগুন… আমি আর নিতে পারি না।
হঠাৎ ইশা চোখ বন্ধ করল, ঠোঁট শক্ত করে বলল,
তুমি যদি আজও চলে যাও, তাহলে আর কোনো দিন ফিরো না।
রুদ্র তার ঠোঁটে হাত রাখল।
আমি আজ আসেছি শুধু পোড়ার জন্য, না বাঁচার জন্য, জানি না। কিন্তু আমি এসেছি—তোমার আগুনে নামতে।
মুহূর্তটা থমকে গেল।
দুজনেই জানে, এবার সীমা পেরোতে চলেছে তারা।
“আজকের রাতটা আর শুধু রাত নয়… এ যেন একটা অগ্নিপূজো।
রুদ্র ধীরে ধীরে ইশার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকল, যেন সেখানে নিজেকে খুঁজছে।
ইশা কাঁপছে না, বরং থমকে দাঁড়িয়ে আছে — এক অভিমান, এক প্রত্যাশা, আর একটা নিষিদ্ধ ইচ্ছের ভেতর।
রুদ্র তার কাঁধে হাত রাখে।
তুমি চাও আমি পোড়ে যাই, তাই তো?
ইশার চোখে জল এসে যায়। সে উত্তর দেয় না, শুধু চোখ বুঁজে ফেলে।
রুদ্র এগিয়ে আসে… তাদের নিঃশ্বাস মিশে যায়।
তারা এখন একদম কাছাকাছি।
একটা ছোঁয়া, একটা স্পর্শ, একটা কাঁপুনি — এতদিন ধরে জমে থাকা আগুন যেন ছুটে বেরিয়ে পড়তে চাইছে।
হঠাৎ রুদ্র তার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে,
তোমার শরীর নয়, ইশা… আজ আমি তোমার ভেতরের আগুন চাই।
ইশা এবার চোখ খুলে তার দিকে তাকায়।
তার ঠোঁটে একটা কঠিন শব্দ—
তাহলে এসো, রুদ্র। এই আগুনে তুমি আর আমি, দুজনেই পুড়ি।
রুদ্র তাকে জড়িয়ে ধরে। ধীরে ধীরে তারা যেন সময়ের গণ্ডি ছেড়ে বেরিয়ে আসে।
দুজন শরীর নয়, মন দিয়ে কাছে আসে।
ইশার চুলের ভেতর আঙুল রেখে রুদ্র তার কানের পাশে ফিসফিস করে বলে,
তোমার গন্ধ… আজও আমায় পাগল করে দেয়, জানো?
ইশা বলে,
তোমার ছোঁয়া… আজও আমার হাড়ের মধ্যে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।”
তারা একে অপরকে ধরে থাকে—দীর্ঘ সময়।
ঘরের বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। এক অজানা আগুনে, সময় থেমে যায়।
এই রাতটা আর শুধু একটা রাত নয়।
এটা হয়ে যায় তাদের সম্পর্কের এক নতুন জন্ম।
আগুনে পুড়ে, তারা হয়তো একটু বেশি কাছাকাছি আসে।
রাত কেটে যায়, কিন্তু কিছু অনুভূতি কখনো ঘুমোয় না।
সকাল হয়েছে। জানালার ফাঁক দিয়ে আলো এসে পড়েছে বিছানার সাদা চাদরে।
ইশা ধীরে ধীরে চোখ মেলে দেখে — বিছানার পাশে রুদ্র চুপচাপ বসে আছে, তার দিকে তাকিয়ে।
না, কোনো লজ্জা নেই রুদ্রর চোখে। বরং একরাশ অভিমান, আর একটু ভয়।
ইশা উঠে বসল। চুপচাপ।
তার বুকের ভেতর অদ্ভুত একটা হালকা চাপ — যেন কিছু হারিয়েও আবার কিছু ফিরে পেয়েছে।
রুদ্র হঠাৎ বলে ওঠে,
"তুমি যদি আজ বলো—এটা ভুল ছিল, আমি চুপ করে বেরিয়ে যাব।"
ইশা একটু হেসে বলে,
যেটা শরীর ছুঁয়ে যায়, সেটা ভুল হতে পারে।
কিন্তু যেটা মন পুড়িয়ে দেয়, সেটা তো শুধু সত্যি… আর কিছু নয়।
রুদ্র তার দিকে এগিয়ে আসে, তার কপালে আলতো একটা চুমু দেয়।
তুমি আজও আগুন, ইশা। শুধু পুড়িয়ে দিও না… একটু আলো দিয়ো।"
ইশা চোখ বুজে ফেলে।
সে জানে, এই সম্পর্কটা এখন শুধু শরীরের খিদে না।
এটা এক অদৃশ্য ভালোবাসার জাল, যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।
সত্যি যদি গল্পটা আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে প্লিজ আমাকে কমেন্টে জানান পরের পর্ব পেতে প্লিজ আমাকে ফলো করুন আরো ভালো ভালো গল্প পেতে আমাকে ফলো করুন।