Featured Books
বিভাগ
শেয়ারড

আগুনের ছোঁয়া - পর্ব 7

 আগুন ফিরে আসে 🔥🔥

“ভালোবাসা যদি আগুন হয়… তবে পুরনো ছায়া তার ধোঁয়া। যা চোখে নয়, মনে জল এনে দেয়…”


অপেক্ষার ভেতর অশান্তি]


ইশা রুদ্রর পাশে ঘুমিয়েছিল। চুপচাপ, নিঃশব্দ, গভীর এক ভালোবাসার পর।

রুদ্রর কাঁধে মাথা রাখা অবস্থায় তার মনে চলছিল একটার পর একটা প্রশ্ন।

“এটা কি সত্যি ভালোবাসা? নাকি আবার কোনো জ্বালা তৈরি হচ্ছে…?”


রাত তখন তিনটে। হঠাৎই ঘুম ভেঙে যায় ইশার।

ঘরের ভেতর অন্ধকার, কেবল জানালার ফাঁক দিয়ে চাঁদের আলো পড়ছে রুদ্রর মুখে।


রুদ্র নিঃশ্বাস নিচ্ছে ধীরে, গভীরভাবে।

ইশা তার বুকের ভেতরে কেমন যেন একটা চাপা ব্যথা টের পায়।

তার মনে হচ্ছিল—সব ঠিক আছে, তবুও কিছু একটা আসছে, খুব নীরবে…


সে মোবাইলটা হাতে নেয়।

হঠাৎ, ইনবক্সে একটা অচেনা নাম দেখে চমকে ওঠে—

“Sayan…”


💬 “তুমি ভালো আছো?”

💬 “আমি ফিরে এসেছি…”

💬 “তুমি এখনও ওই ঠিকানায় থাকো?”


ইশার গলা শুকিয়ে গেল।

এতদিন পরে হঠাৎ করে সায়ন ফিরে আসবে—এভাবে? কেন?


সে ফোনটা চুপচাপ রেখে দেয়। রুদ্র যেন না জানে… এখন না। 🔥

শরীরের আগুন, মনের পিছুটান


সায়নের মেসেজ পড়ার পর ইশার ভেতরটা কাঁপছিল।

কিন্তু সে কিছু বলল না রুদ্রকে।

চুপচাপ উঠে জল খেল, আবার ফিরে এসে পাশে বসে রইল।

রুদ্র তখনও ঘুমিয়ে, কিন্তু মুখে একটা প্রশান্তির ছায়া।

এই মানুষটা কি জানে, তার পাশেই বসে থাকা মেয়েটা এখন ভাঙা-গড়ার মাঝখানে দাঁড়িয়ে?


হঠাৎ রুদ্র চোখ খুলল।

– “তুমি উঠেছো?”

– “হ্যাঁ, একটু গরম লাগছিল…”


রুদ্র হাত বাড়িয়ে ইশার কোমর জড়িয়ে ধরল।

– “তোমার গা থেকে এখনো আমার গন্ধ আসছে…”


ইশার শরীর কেঁপে উঠল।

রুদ্র আস্তে করে তার গাল স্পর্শ করল, ঠোঁটে চুমু দিল।

– “আমি জানি, তোমার ভিতরে অনেক দ্বন্দ্ব চলছে।

তবু আজ রাতে আমি চাই… তুমি সব ভুলে শুধু আমার হও।”


ইশা কিছু বলল না।

রুদ্র ধীরে ধীরে তার ঠোঁটে, ঘাড়ে, বুকের দিকে নামতে লাগল।

তার প্রতিটি স্পর্শ ছিল ধীর, আবেগময়, এবং সাহসী।


ইশা চোখ বন্ধ করে ফেলল।

সে চায় ভুলতে সব — অতীত, সায়ন, ব্যথা…

সে চায় শুধু এখন — রুদ্র, তার স্পর্শ, আর ভালোবাসা।


এই মুহূর্তে দুজন মিলে একে অপরের দেহে এবং মনের ভেতর ঢুকে পড়ছিল।

স্পর্শের চেয়ে বেশি ছিল একে অপরের আত্মাকে অনুভব করা।


রুদ্র ফিসফিসিয়ে বলল,

– “তুই আমার জন্য আগুন, কিন্তু সেই আগুনে আমি নিজে থেকে পোড়ে যেতে রাজি…”

– পুরনো ছায়া, নতুন প্রশ্ন🔥🔥


রাত শেষ হয়েছে।

সকালের আলো ছড়িয়ে পড়েছে ঘরে, কিন্তু ইশার মনভূমি এখনো ঘোলাটে।


রুদ্র কফির কাপ হাতে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে।

সে বোঝে, ইশা এখনো অস্থির।

শরীরের যতটা কাছাকাছি সে এসেছিল, মনে সে এখনো দূরে।


ইশা বারান্দায় এল। মুখে একটা চাপা ক্লান্তি।


– “সব ঠিক তো?”

– “হ্যাঁ… ঠিক…”

কিন্তু রুদ্র জানে, এই “ঠিক” শব্দটা একটা দেয়াল।


তখনই ইশার ফোন বেজে উঠল।


📱 Caller ID: সায়ন

ইশা থমকে গেল। রুদ্র কিছু বুঝতে পারল না।


– “তুমি ফোন ধরছো না কেন?”

– “একটা স্প্যাম নাম্বার মনে হচ্ছে…”

ইশা মিথ্যে বলল।


রুদ্র আর কিছু বলল না।

কিন্তু সে অনুভব করল – কিছু একটা লুকোনো আছে।


ফোনটা বারবার বেজে উঠছিল।

শেষমেশ ইশা একা একটা ঘরে গিয়ে ফোন ধরল।


– “তুমি ফিরে এসেছো?”

– “হ্যাঁ ইশা… আমি ভুল করেছি।

তুমি ছাড়া আমি কিছু না। আমি তোমার পুরনো ফ্ল্যাটে গেছি… তুমি নেই।”

– “আমার এখন নতুন জীবন… রুদ্রর সঙ্গে…”

– “সে কি জানে আমি ফিরে এসেছি?”


ইশা স্তব্ধ।


– “না… এখনো না…”


সায়ন বলল,

– “তাহলে একবার দেখা করো। কিছু বলার আছে… চিরকালের জন্য চলে যাবো, যদি তুমি চাও।”🔥

এরপর ইশার সামনে আবার পুরনো দোটানা।

রুদ্র যাকে সে ভালোবাসছে, কিন্তু সায়ন যার সঙ্গে সে একসময় ঘর বেঁধেছিল।


সে কি দেখা করবে?








– দ্বিধার আগুন, সিদ্ধান্তের ছায়া


ইশা অনেকক্ষণ চুপ করে বসে ছিল।

সে জানে, একদিকে তার বর্তমান – রুদ্র।

যে ছেলেটা তাকে ভালোবাসে, বোঝে, কোনো দাবী ছাড়াই তাকে গ্রহণ করে।


আর অন্যদিকে সায়ন – যে একদিন তার ভবিষ্যৎ ছিল, আর এখন… একটা অপরিষ্কার অতীত।


রুদ্র এসে পাশে বসল।


– “তুমি অনেকক্ষণ ধরে চুপ… কাকে ফোন করছিলে?”

ইশা চুপ। তারপর ধীরে বলল,

– “সায়ন…”


রুদ্র কিছু বলল না।

শুধু তাকাল তার চোখে।

– “সে ফিরে এসেছে?”


– “হ্যাঁ… এবং সে দেখা করতে চায়… একবার…”


রুদ্র দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,

– “তুমি যাও। আমি চাই না তুমি তোমার পুরনো গল্পের কবর বুজিয়ে রাখো।

তুমি যদি সত্যিই আমাকে চাও, তবে ফিরে আসবে।

আর যদি না আসো… তবুও আমি বিশ্বাস করব, তুমি যেখানেই থেকো, শান্তিতে থেকো।”


ইশার চোখে জল চলে এলো।


– “তুই আমাকে এতটা বিশ্বাস করিস?”

– “তুই আগুন, ইশা… আমি জানি, তুই কাউকে পুড়িয়ে ফেলবি না, যদি না পুড়তে রাজি হয়।”



---


 সন্ধ্যাবেলা – পুরনো পার্কে


ইশা দেখা করল সায়নের সঙ্গে।

সায়ন আগের চেয়ে অনেকটাই শান্ত, অনেকটাই ভাঙা।

তাদের মধ্যে কিছু পুরনো কথা, কিছু নীরবতা, আর কিছু শেষ হাহাকার।


সায়ন বলল,

– “তুমি বদলে গেছো, ইশা।

তোমার চোখে আমি নেই আর…”


ইশা বলল,

– “তুই আমাকে একবার ফেলে গেছিস, আর এই মানুষটা – রুদ্র – আমাকে একবার নয়, প্রতিদিন ভালোবাসে।

তুই চাইলে আজ আবার পাস,

কিন্তু আমি তোর হাতে নিজেকে তুলে দিতে পারি না আর…”


সায়নের চোখ ভিজে গেল।

সে মাথা নোয়াল।

– “আমি দেরি করে ফেলেছি…”



---


রাত – রুদ্রর বাসায়


ইশা ফিরে এলো।

রুদ্র তখন দরজা খুলে দাঁড়িয়ে।

ইশা তার দিকে তাকিয়ে শুধু বলল,

– “আমি ফিরেছি… কিন্তু পুরনো আমাকে রেখে এসেছি।”


রুদ্র চুপচাপ তার কপালে

চুমু দিল।


– “তুই আগুন… আর আমি তো আগেই বলেছি, তোর দহনেই আমি জ্বলতে চাই…”


“ভালোবাসা কখনো পুড়িয়ে মারে না,

যদি সেই আগুনে দু’জনেই পোড়ে…”🔥🔥




"আপনার কি মনে হয় ইশা এবার পুরোপুরি এগিয়ে গেল? নাকি সায়নের ছায়া এখনও বাকি আছে? পরবর্তী পর্বে আসছে… এক অপ্রত্যাশিত মো

ড়!"