সেই চোখদুটো...
বৃষ্টিটা যেন আজ একটু বেশি করে নামছে। জানালার কাঁচে টুপটাপ শব্দ পড়ছে, আর পুরো শহর ঢেকে গেছে সাদা কুয়াশায়। বাইরে ভেজা রাস্তার আলো এসে পড়ছে বিছানার চাদরে। বিছানায় বসে কফির কাপ হাতে ইশা জানালার দিকে তাকিয়ে ছিল, কিন্তু তার মন ছিল অন্য কোথাও।
আজ তিন বছর পর রুদ্র ফিরে এসেছে। ছেলেটা একদিন হঠাৎ করে হারিয়ে গিয়েছিল, ঠিক আগুনের মতো—আসছে, জ্বলছে, আর নিঃশব্দে মিলিয়ে যাচ্ছে।
আচমকা দরজা খোলার শব্দে ইশা বুক ধক করে উঠল।
সে জানত—এই শব্দটা শুধু রুদ্রই করতে পারে।
রুদ্র ঘরে ঢুকলো। তার চোখদুটো সেই আগের মতোই—তীক্ষ্ণ, কিন্তু ক্লান্ত। দুজনের চোখে চোখ পড়তেই মুহূর্তটা থেমে গেল। ঘরের সব শব্দ, বাইরের বৃষ্টি, এমনকি কফির বাষ্পও যেন থেমে গেল।
তুমি কেমন আছো, ইশা— রুদ্রের গলা কাঁপা কাঁপা।
ইশা উঠে দাঁড়াল। গায়ে ছিল একটা সিল্কের সাদা গাউন, চুলগুলো আধা ভেজা, মুখে হালকা অভিমান মেশানো প্রশান্তি। সে ধীরে ধীরে রুদ্রের কাছে এল।
তুমি জানো, আমি কতবার তোমায় স্পর্শ করতে চেয়েছিলাম… কিন্তু তোমার মতো আগুনের কাছে গেলে কেউ পুড়ে যায়… তাই ছুঁতে পারিনি।
রুদ্র এগিয়ে এল, মুখ এক ইঞ্চি দূরে রেখে বলল, আজ পুড়ে যেতে চাই, ইশা। তোমার কাছে, তোমার শরীরে, তোমার ভালোবাসায়…
তার হাত ইশার গালের ওপর ছুঁলো। স্পর্শটা ছিল নরম, কিন্তু তার ভেতরে ছিল গলন্ত লাভা। অরণির চোখ বুজে এল, সে ঠোঁটে হালকা কাঁপন নিয়ে বলল, আজ আমিও ছুঁতে চাই তোমার জ্বলন্ত আগুন… নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চাই…
ঘরটা ধীরে ধীরে নিস্তব্ধ হল। কফির কাপ পড়ে ভেঙে গেল মেঝেতে। বাতি নিভে গেল।
রাত্রির আঁধারে, বৃষ্টির নিচে, এক নিঃশব্দ বিস্ফোরণে পুড়ে গেল দুটো মন…
এবং জন্ম
নিল আগুনের ছোঁয়া।
রুদ্রের হাতটা এখনো ইশা গালে। দু’জনের নিঃশ্বাস একসাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে ঘরের ভেতর। বাইরের বৃষ্টির শব্দ যেন এক সুর, আর সেই সুরে বাজছে নিঃশব্দ কামনার সঙ্গীত।
তুমি জানো, আমি কেন ফিরেছি? — রুদ্রের গলায় ছিল কাঁপা আগুন।
ইশা জবাব দিল না। শুধু চোখের গভীরতা দিয়ে বুঝিয়ে দিল—সে জানে, সে বোঝে… আর সে আজ পালাবে না।
রুদ্র তার মুখটা আরও কাছে নিয়ে এলো। ঠোঁটের ঠিক এক ইঞ্চি দূরে দাঁড়িয়ে বলল, “তুমি এখনো ঠিক আগের মতোই… স্পর্শ না করেও পুড়িয়ে দাও।
ইশা শরীরটা কেঁপে উঠল। গাউনের হালকা কাপড়টা রুদ্রের আঙুলে ধীরে ধীরে সরতে লাগল। কোনো তাড়াহুড়ো নেই, ছিল শুধু অপেক্ষার পরিপূর্ণতা।
ইশা রুদ্ধ শ্বাসে বলল, রুদ্র, আমি আর নিজেকে আটকে রাখতে পারছি না…
রুদ্র ফিসফিস করে জবাব দিল, আজ থেমে যেও না। কারণ আমি তোমার ভেতরের আগুনটা দেখতে এসেছি।
এবার ঠোঁট ছুঁয়ে গেল ঠোঁটে। এক ঝড় নেমে এলো শরীর আর আত্মার মাঝখানে। তাদের ঠোঁটের মাঝে যেমন আগুন, তেমনই সেই চুম্বনের গভীরে ছিল সব বছর ধরে জমে থাকা না বলা ভালোবাসা।
বিছানার চাদরটা মুড়ে উঠল, ঘরের বাতি নিভে গেল আবার… কিন্তু এবার নিঃশব্দে নয়।
এখানে শুরু হলো ভালোবাসার এক অনন্ত অধ্যায়… যেখানে প্রতিটি স্পর্শ মানে
একেকটি বিস্ফোরণ।
রুদ্রর চোখের দিকে তাকিয়ে ইশা বুঝেছিল—এই ফিরে আসার মানে কিছু একটা গভীর।
কিন্তু সে তো জানে, আগুন নিয়ে খেলতে গেলে পোড়ার ঝুঁকি থাকে।
তবুও… সেদিন সে ফিরে যায় রুদ্রর চোখে।
একটু নেশার মতো ছিল রাতটা।
রুদ্র তার পাশে দাঁড়িয়ে ধীরে ধীরে বলেছিল,
"তুমি কি জানো… আমি আজও শুধু তোমার গন্ধেই পাগল হয়ে উঠি।"
ইশার শরীরটা কেঁপে উঠেছিল, কিন্তু সে নিয়ন্ত্রণে ছিল।
সে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল—
"তাহলে? আগুনে নামবে? না আবার পালাবে?"
রুদ্র হেসে বলল, "এই আগুনে পুড়েই তো বাঁচি, ইশা।"
সে ধীরে ধীরে তার গালের পাশে মুখ নিয়ে এল, নিঃশ্বাস ফেলল ঠিক কানের কাছে।
ইশার হৃদস্পন্দন থেমে যাচ্ছিল যেন।
হঠাৎ সে পেছনে ঘুরে তাকাল—রুদ্রর চোখে ঠিক আগের মতো তৃষ্ণা।
আমাকে ছুঁয়ো না… যদি না জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিতে চা
ও,ইশা ফিসফিস করল।
ইশা ছাড়তে চায়, কিন্তু তার পায়ে যেন শিকল পড়েছে রুদ্রর চোখে।
রুদ্র ধীরে ধীরে তার চুলের গোড়ায় স্পর্শ করে বলল—
"তুমি আগুন, ইশা… আর আমি আজ প্রস্তুত পোড়ার জন্য।
ঘরের বাতাস ভারি হয়ে উঠেছিল।
বাইরে ঝড় উঠছে, আর ঘরের ভেতর ইশার নিঃশ্বাস।
রুদ্র তার ঠোঁটগুলো খুব ধীরে ইশার কাঁধের কাছে আনলো…
ইশা চোখ বন্ধ করে ফেলেছিল, ঠোঁট অল্প কেঁপে উঠছিল।
"তুমি কি এখনো ভালোবাসো আমাকে? — প্রশ্নটা ছুরি হয়ে ঢুকে গেল।
ইশা চুপ।
তারপর ধীরে ধীরে বলল,
"ভালোবাসা শব্দটা খুব ছোট… আমি তোমাকে এখনো নিজের মতো করে চাই, রুদ্র। আগুন হয়ে…
রুদ্র তাকে জড়িয়ে ধরল। কোনো চুমু নয়, কোনো ছোঁয়া নয়…
এই মুহূর্তে তাদের মাঝখানে ছিল শুধু আগুন।
চোখে চোখ রাখা, আর হৃৎস্পন্দনের গতি বাড়ানো এক নিঃশব্দ যুদ্ধ।
কেউ হারেনি।
কিন্তু দুজনেই জেনে গেছে—এই রাত
টা আর আগের মতো থাকবে
গল্পটা কেমন লাগলো আমাকে কমেন্টে জানাবেন। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে এই গল্প করতে এবং নেক্সট পরবো পেতে আমাকে ফলো করুন।