তুই শুধু আমার ছিলি না 🔥🔥
🌙 জোনাকির আলোয় শরীর-মনের খেলা]
রাতটা যেন অন্যরকম ছিল।
ইশা রুদ্রর বুকের ওপর মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিল।
রুদ্র এক হাতে ওকে জড়িয়ে রেখেছে, অন্য হাতে আস্তে আস্তে তার চুলে হাত বোলাচ্ছিল।
তুই আজ অনেক চুপ… কষ্টে আছিস?
না রে… বরং কেমন যেন শান্তিতে আছি। তোর গায়ের গন্ধে ঘুম পাচ্ছে…
রুদ্র হাসে। তারপর ওর কপালে একটা দীর্ঘ চুমু দেয়।
তুই জানিস, তোর শরীর ছুঁলেই আমার ভেতরের আগুনটা একদম জ্বলে ওঠে… কিন্তু আজ শুধু ছুঁয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে।
ইশা ধীরে ধীরে তার চোখ তুলে তাকায়।
ছুঁয়ে থাকবি? ঠিক মতো স্পর্শ করবি না?
একটা দুষ্টু হাসি খেলে যায় ওর ঠোঁটে।
রুদ্র আর সহ্য করতে পারে না।
সে ধীরে ধীরে ইশার ঠোঁটে চুমু খায়, তারপর গলা, বুকের দিকে…
একেকটা স্পর্শ যেন হাজার কথার চেয়েও বেশি স্পষ্ট।
রাতটা ছিল ঘন ভালোবাসার।
কোনো শব্দ নয়, শুধু শরীরের ভাষায় কথা বলা – চাদরের ভাঁজে, নিঃশ্বাসের শব্দে, আর একে অপরকে হারিয়ে ফেলার মধ্যেই ছিল ভালোবাসার ঘনত্ব।
তারা কেউ কারো চোখে চোখ রাখেনি… কারণ চোখে তখন শুধু জল আর আগুন।
🌄 [ভোর – ভালোবাসার পর, তীব্র টানাপোড়েন]
সকালের আলো ফোঁটানোর সঙ্গে সঙ্গেই ইশার মনে পড়ে যায় —
সায়ন, সেই বার্তা, সেই টান।
সে জানে, সে ফিরে গেছে… কিন্তু সত্যিই কি ফিরে গেছে?
তখনই ফোনটা কাঁপে।
একটা নতুন নাম – অচেনা। কিন্তু ভেতরটা কেঁপে ওঠে।
📱 আপনার সম্পর্কে কিছু জানতে চাই… ইশা মিত্র?
ইশার ঠোঁট শুকিয়ে গেল।
কে?
সায়নের পরিবার থেকে বলছি। ও এখন খুব খারাপ অবস্থায় আছে। আপনি কি একটু আসতে পারবেন?”
🧠 ইশার মনে অজস্র প্রশ্ন —
কেন আবার ওর খবর পেলাম?
যা শেষ হয়ে গেছে, তার ভেতর আবার ডুবে যেতে হবে?”ষ
“আমি কি শুধু রুদ্ররই?
ভালোবাসার ছায়া, অতীতের দায়
সায়নের পরিবারের মেসেজ পাওয়ার পর থেকে ইশা পুরো ঘাম ঘাম হয়ে যায়।
ও ভাবতে পারছিল না – এখনো কি ওর সঙ্গে দেখা করা উচিত?
একদিকে রুদ্রর প্রতি টান, প্রেম, বিশ্বাস…
আর অন্যদিকে, একটা অতীত, যে অতীতে ফিরে যাওয়ার কথা সে কখনো ভাবেওনি।
রুদ্র তখন রান্নাঘরে, দু'জনের জন্য ব্রেকফাস্ট বানাচ্ছিল।
ইশা পেছন থেকে এসে ওর কোমর জড়িয়ে ধরল।
রুদ্র অবাক হয়ে বলল,
– কি ব্যাপার? আজ তুই এত আদর করছিস?”
– তুই আছিস বলে…
রুদ্র বুঝে ফেলল, কিছু একটা তো ঘটেছে।
সে আস্তে করে বলল,
– তোর চোখ দেখে বুঝি, ইশা… কষ্টে আছিস?
ইশা চুপ করে গেল।
তারপর ধীরে বলল,
– সায়নের বাড়ি থেকে মেসেজ এসেছিল…
রুদ্র থেমে গেল।
– কি বলেছে?
– ওর শরীর খুব খারাপ, মানসিক অবস্থাও ভালো না… ওরা চাইছে আমি একবার ওর সঙ্গে দেখা করি…
রুদ্র দীর্ঘক্ষণ চুপ করে থাকে।
তারপর ধীরে বলে,
– তুই যেতে চাস?
– আমি চাই না, কিন্তু কিছু একটা টানছে… মনে হচ্ছে একটা অসমাপ্ত অধ্যায় শেষ করতে হবে…
রুদ্র মাথা নোয়াল।
তার ঠোঁটে আর হাসি নেই।
– আমি তোকে বাধা দেব না, ইশা… কিন্তু আমি শুধু এটুকু বলি—তুই যেন নিজের শান্তি ভুলে দিস না।
🌫️ দুপুর – একাকী মানসিক লড়াই
ইশা শাওয়ারে দাঁড়িয়ে ছিল।
জল পড়ছিল গা বেয়ে, কিন্তু ভেতরের আগুনটা কিছুতেই নিভছিল না।
হঠাৎই রুদ্র পেছনে এসে তার কাঁধে হাত রাখল।
– আমি চাই আজ তুই শুধু আমার জন্য থাকিস।
– আমি চেষ্টা করছি, রে… বিশ্বাস কর…
রুদ্র ধীরে ধীরে তার কাঁধে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলল,
– আমি জানি তুই আমাকে ভালোবাসিস।
তুই শুধু একবার বলে দে—তুই কেবল আমার…
ইশার ঠোঁট কাঁপে।
সে ধীরে রুদ্রর মুখের দিকে তাকায়, তারপর ঠোঁটে চেপে বসে।
সেই মুহূর্ত ছিল ঝড়ের মতো—
তাদের ঠোঁট একে অপরকে খুঁজে নিচ্ছে, গায়ে জল, চুল ভিজে একাকার,
একমাত্র শরীরের ভাষাই তখন বেঁচে ছিল।
রুদ্র তাকে আলতো করে ঠেলে দেয় দেয়ালের দিকে,
তার ঠোঁট গলার নিচে, বুকের ওপর, ধীরে ধীরে আরও নিচে…
ইশা তখন কেবল বলে,
– তুই যদি আমার ভিতরে তুই-ই থাকিস… তবে আমি আর কিছু চাই না…
“পুরনো ছাইয়ে আগুন খোঁজা”
📍 পরদিন দুপুর
ইশা একা বেরিয়ে পড়ে।
রুদ্র কিছু বলেনি — শুধু তার চোখে পড়েছিল একরাশ অভিমান।
ইশা সায়নের বাড়িতে পৌঁছায়।
গেট খুলে একজন বয়স্ক মানুষ তাকে ভেতরে নিয়ে যায়।
সায়ন বিছানায় বসে ছিল। চেহারাটা কেমন যেন ক্লান্ত, চোখে গভীরতা।
ইশাকে দেখে উঠে বসে।
– ইশা…”
– “তুই কেমন আছিস?
– “তুই এসে গেছিস… আমি এখন তোর সামনে… এটুকুই আমার সবকিছু।”
তারা দুজন চুপচাপ বসে।
তারপর সায়ন বলতে শুরু করে—
– আমি ভুল করেছিলাম… আমি বুঝিনি তুই কেমন ছিলি।
তুই যখন চলে গেলি, তখন আমি অনুভব করলাম – তুই ছিলি আমার ছায়া, আমি শুধু আলো খুঁজে ফিরেছি…
ইশা কিছু বলল না। শুধু তাকিয়ে রইল।
সায়ন আবার বলল,
– তুই এখন ভালো আছিস?
রুদ্রর সঙ্গে তো তুই সুখে আছিস?
– হ্যাঁ, আমি ভালো আছি।
তুই এতদিন পরে এইভাবে কেন ডেকে আনলি আমাকে?
সায়ন চোখ বন্ধ করে বলল,
– তোর সামনে শেষবার দাঁড়িয়ে বলতে চেয়েছিলাম—
আমি তোকে এখনও ভালোবাসি, ইশা…
ইশা যেন মুহূর্তে পাথর হয়ে গেল।
তার মনে হচ্ছিল – এই মানুষটাকে সে কোনোদিন চিনতো না।
– ভালোবাসা যদি সত্যি হতো, তবে আমায় সেই সময়ে ছেড়ে যেতে না…
সায়ন মাথা নিচু করে ফেলল।
– “তুই চলে গেলি, রুদ্র তোর পাশে দাঁড়াল…
আমি চাই, তুই আর একবার ভেবে দেখিস – তুই কি সত্যিই তোর ভালোবাসার কাছে আছিস, না কি শুধু নতুন শুরুর ভয়ছবি আঁকছিস?
এই প্রশ্নটা ইশার মাথায় ধাক্কা মারে।
---
🕰️ বিকেল – বাড়ি ফেরার পথে
ইশা পুরো রাস্তায় চুপচাপ।
হাতে ফোন, কিন্তু রুদ্রকে কিছু বলছে না।
রুদ্র তখন বারান্দায় দাঁড়িয়ে।
তাকে দেখে মনে হচ্ছিল, সে বুঝে গেছে — ইশা শুধু শরীর নয়, মনেও এখন বিভক্ত।
রুদ্র ধীরে বলল,
– তুই চলে গেছিস… ফিরে এসেছিস… কিন্তু তুই কি এখনও আমার আছিস?
ইশা কিছু বলল না।
রুদ্র হেসে বলল,
– তুই জানিস, আমি কষ্ট পেয়েছি।
তুই যেদিন অন্য কারো হাত ধরেছিলি, সেদিনই আমি নিজেকে মেরে ফেলেছিলাম।
তুই আজ যদি আবার সায়নের দিকে ফিরে তাকাস, আমি আর কিছু বলব না…
---
📍 ইশা কাঁদছিল না।
কিন্তু তার চোখে এখন আগুন।
নিজেকে প্রমাণ করতে হবে —
সে কার? সে কতটা নিজের ভিতর সাহসী? সে কি আবার আগুন ছুঁবে, নাকি নিজেই সেই আগুন হবে?
“আমার সব পুড়িয়ে তোকে বাঁচিয়ে রাখি…”
রুদ্র আর ইশার মাঝে তখন নীরবতা।
কোনো কথা নেই।
কিন্তু সেই নীরবতা ছিল আগুনের মতো – যেটা ছুঁয়ে না গিয়েও পোড়ায়।
রুদ্র বিছানায় বসে ছিল।
ইশা আস্তে করে পেছন থেকে তার কাঁধে হাত রাখে।
– “রুদ্র…”
– “হ্যাঁ?”
– “আমি ওর কাছে গিয়েছিলাম…
কিন্তু গিয়ে বুঝেছি, আমি আর সেই ইশা নেই।
যে একদিন ওর জন্য কেঁদেছে, ভেঙেছে, হারিয়ে গিয়েছে…
আজ আমি তোর স্পর্শে গড়ে উঠেছি…
আমি এখন তোর ইশা…
রুদ্রর চোখ জ্বলজ্বল করছিল।
– তুই কি এটা বলছিস কারণ আমি তোকে কিছু বলিনি?
– না রে… আমি এটা বলছি কারণ আমি বুঝে গেছি –
যে ভালোবাসা শরীরে এসে শান্তি দেয়, মনেও তাকে ছুঁয়ে থাকতে হয়…
ইশা ধীরে ধীরে রুদ্রর মুখটা নিজের হাতে তোলে।
– আমি তোর ঠোঁটে না ছুঁয়ে থাকলে যেমন পাগল হয়ে যাই,
তেমনি তোর চোখে না তাকালে নিজেকে খুঁজে পাই না…
রুদ্র কিছু বলে না।
সে শুধু তার বুকের ওপর টেনে নেয় ইশাকে।
সেই মুহূর্ত ছিল একদম নিঃশব্দ…
কিন্তু জ্বলন্ত – আগুনের মতো।
রুদ্র ইশার কানে ফিসফিসিয়ে বলে,
– তুই যদি আবারও হারিয়ে যাস, আমি আর নিজেকে বাঁচাব না…
– “তুই আমায় যতটা জ্বালিয়ে মারিস, ততটাই ভালোবাসিস… আমি সেটা বুঝি…
তারা আবার একে অপরকে জড়িয়ে ধরে –
কোনো শব্দ ছাড়া, কেবল নিঃশ্বাসের শব্দে…
ইশার পিঠে রুদ্রর আঙুল বোলাতে থাকে, আর ইশা কাঁপতে কাঁপতে বলে:
– আজ আমাকে আগুন বানিয়ে দে… আমি সব পুরিয়ে শুধু তোর হতে চাই।
সেই মুহূর্তে তারা আর দুটি মানুষ ছিল না –
ছিল এক আগুন আর তার শিখা, এক দেহ আর তার আত্মা।
---
🌌 শেষ দৃশ্য
রাত গভীর।
চাদর তলায় দুজ
নেই ঘুমিয়ে পড়েছে – কিন্তু মুখে একটা প্রশান্তি।
ইশা চোখ খুলে বলে,
– তুই জানিস? তুই আমাকে যেমন ভাবে দেখিস, আমি তেমনই হয়ে যেতে চাই…
রুদ্র বলে,
– তুই যেমন আছিস, তেমনই থাক।
কারণ তুইই আমার আগুন,
যে আগুন আমাকে জ্বালায় না… আমায় জাগিয়ে রাখে…
এটা তো শুধু চমক এরপরে আরো ভালো ভালো পর্ব নিয়ে আসছি বেশ ভালো লাগলে আমাকে কমেন্টে জানান। কিরম লাগছে আপনাদের গল্প। তাহলে আমি আরো উৎসাহিত পাব