জঙ্গলের প্রহরী
পর্ব - ২০
❤♣❤♣❤♣❤
- "দাদা, কথাবার্তা সব পরে হবে। আর আমি তোমার কোনো বারণ শুনব না।" সিদ্ধার্থ আর শাক্য, দুজনের মাঝখানে এসে দাঁড়িয়ে বলে ঋষি।
- "সিদ্ধার্থ, আমারও অনেক কথা আছে। কিন্তু সত্যিই এখন না। তুমি প্লিজ হেলথ সেন্টারে যাও। তারপর যখন বলবে আমি তোমার সঙ্গে কথা বলব।" শাক্যও সিদ্ধার্থর কাঁধে হাত রাখে। সিদ্ধার্থ এগিয়ে যায় ওর গাড়ির দিকে। সঞ্জয় দৌড়য় গাড়ি খুলে দিতে।
ইতিমধ্যে শুক্লা ঋষিকে বলে, "ঋষিদা, ওর কি খুব চোট লেগেছে? নাকি অন্য কিছু আন্দাজ করেছে বলে এত গম্ভীর? রেগে আছে মনে হচ্ছে। কি যে হচ্ছে কিছু তো বুঝতে পারছি না।"
- "দাদার খুব মাথা গরম হয়ে আছে।" ঋষি যে হাসি চাপার চেষ্টা করছে, শুক্লা কেন, কেউ আন্দাজ করতে পারেনি।
বরং শাক্য একটু ঝুঁকে প্রশ্ন করে, "কেন? কি হয়েছে? মানে আর কি কি হয়েছে?"
- "চোটটোট নিয়ে দাদার চিন্তা নেই। ওসব হজম করে ফেলতে পারে। আসলে মেজাজ খারাপ হয়েছে কারণ দাদার ফেভারিট সানগ্লাসটা এসবের মধ্যে ভেঙে চুরচুর হয়ে গেছে, শার্টের গলার কাছে ঝোলানো ছিল।"
- "এ্যাঁএএএএ !!!!" অনেকগুলো গলা আঁতকে ওঠে।
ঋষি মুচকি হাসে, "দাদা ওরকমই। একটু খেয়ালখুশিতে চলে। আর সানগ্লাসটা দাদার খুব পছন্দের একজন মানুষ গিফট করেছিল। ওটা কখনও কাছছাড়া করত না।"
ঋষির কথার মধ্যেই দুটো সাদা স্করপিও গাড়ি হুড়মুড় করে এসে আধপাক ঘুরে পরপর থামে একপাশে। পুলিশের চারজন চেনে, অন্যরাও দেখে, ডিআইজি বিডিস্যার আর এডিজি বিপ্লব সেনগুপ্ত নামেন যার যার গাড়ি থেকে।
সিদ্ধার্থ চেনা গাড়ি দেখেই এদিকে এগিয়ে এসেছিল, সঙ্গে সঞ্জয় আর তাপস। এখন চারজনেই স্যালুট করে।
বিপ্লব সেনগুপ্ত হৈচৈ করে ওঠেন, "আরে ইয়াং ম্যান আজ তো তোমাকে আমরা সবাই স্যালুট করব। তোমার নাম এখন থেকে সিদ্ধার্থ দ্য সেভিয়ার।" বলেই কপালে হাত ঠেকিয়ে গোড়ালিতে গোড়ালি ঠেকিয়ে খটাশ করে খাঁটি পুলিশম্যানের স্যালুট। সিদ্ধার্থর মুখে এতক্ষণে একটা আবছা লাজুক হাসি ফোটে।
- "না না, হাসি নয় হাসি নয়। আমাদের কাজ শুধু অপরাধীকে পাকড়ানো নয়, আমাদের আসল কাজ সাধারণ মানুষের সিকিউরিটির দিকটা দেখা। আর তুমি হান্ড্রেড পারসেন্ট, না ফাইভ হান্ড্রেড পারসেন্ট সাকসেসফুল। তোমাকে আমার হাজার স্যালুট।" ঋষি, তাপস, সঞ্জয়, শাক্য আর শমীক হাততালি দিয়ে ওঠে, সঙ্গে উপস্থিত সবাই। সে হাততালি আর থামেই না। এডিজি স্যারই হাত তুলে থামান।
- "কিন্তু ইয়াং ম্যান, তোমার এখনও এই হাল কেন? তোমার ফার্স্ট এইডটাও হয়নি?"
- "স্যার যে স্পট থেকে যাচ্ছিলেন না এতক্ষণ। মিঃ বসুও নিতে পারছিলেন না। এই সবে যেতে রাজি হয়েছেন।" তাপস তড়বড় করে বলে।
- "আমারই দোষ স্যার। আমি এখানে ছিলাম না, ডুলুং এর দিকে ছিলাম।" শাক্য মাথা নিচু করে বলে।
- "ওহ নো নো নো মিঃ গোস্বামী। আই নো ভেরি ওয়েল ইউ আর অলসো এ জেম অব ইওর ফোর্স। আর ডুলুং তো আপনারই টেরিটোরি। আপনি তো ওখানেও ভিজিটে যাবেনই।"
- "না স্যার, আমি ভিজিটে যাই নি। আমি আমার কিছু ফ্রেন্ডকে ঘোরাতে নিয়ে গেছিলাম।" শাক্যর এই মুহূর্তের সত্যবাদিতায় সিদ্ধার্থ ওর দিকে তাকায়।
- "ওয়েল ওয়েল ওয়েল মিঃ গোস্বামী। আই হোপ, আপনি ওদের সবার নাম এন্ট্রি করিয়েছিলেন।" এডিজির মুখ গম্ভীর।
- "ইয়েস স্যার।" শাক্যর ইস্পাত কঠিন মুখ বলে দেয় কেন এডিজির কানেও ওর প্রশংসা পৌঁছেছিল, "আমি গতকাল প্রত্যেকের আই ডির জেরক্স আর দু কপি ছবিসহ ফর্ম ফিলাপ করিয়েছি। এবং ওদের আমি নিজে এসকর্ট করছি বলে কেবল আলাদা গাইড সঙ্গে নিইনি।"
- "আই এ্যাম নট এনকোয়ারিং মিঃ গোস্বামী। আমি আন্দাজ করেছিলাম আপনি কোনো রুল ব্রেক করেননি। সেইজন্যই বলেছি, পার্টিকুলার আপনার কোনো দোষ নেই।"
- "হ্যাঁ ভাই শাক্য, তোমার কোনো দোষ নেই। হাতি তো ডুলুং এর দিকেও নামতে পারত।" বিডিস্যার বলেন।
- "থ্যাঙ্ক গড, হাতিরা ওদিক থেকে আসেনি।" সিদ্ধার্থ যেন শিউরে ওঠে।
- "হেই, ইউ, এখনও এখানে? এক্ষুণি একে হেলথ সেন্টারে নিয়ে যাও ঋষি। মাই অর্ডার।" এডিজি স্যার মজা করে ধমক দেন।
- "ইয়েস স্যার।" ঋষি স্যালুট করে সিদ্ধার্থর হাত ধরে হাঁটা দেয়।
- "সিদ্ধার্থ, তুমি হেড অফিস থেকে কোনো ইনফরমেশন পেয়েছ?" ওর পিছনে গাড়ির কাছাকাছি এসে বিডিস্যার জিজ্ঞেস করেন।
- "না, হেড অফিস তো আমাকে কিছু জানায়নি।" দরজার হাতলে হাত রাখে সিদ্ধার্থ।
- "আসলে তুমি তো মেইল চেক করতে পারোনি। দেখো এর মধ্যে উত্তর এসেছে কিনা। তোমার মেইলের উত্তর এলে আমাকে জানিও।"
- "ওকে স্যার।" সিদ্ধার্থ গাড়িতে উঠে পড়ে।
- "ঋষি, কি বুঝলি?" সিগারেট ধরায় সিদ্ধার্থ।
- "সবটাই বুঝেছি। তবে এখনও কয়েকটা খটকা আছে। কোর্টে না ছাড় পায়, সেটা সিকিওর করতে হবে। এখন হাত না বাড়ানোই ভাল।"
- "এক মিনিট এক মিনিট, আপনারা কি আমাদের কেসের কথা বলছেন? মানে হাতিরা আসায় বোঝা গেল কি হয়েছিল?" তাপস হতভম্ব।
[ ❤ হাতির হামলায় কিভাবে বোঝা গেল কি হয়েছিল রায়চৌধুরীদের জমিদারিতে? কিভাবে চেনা গেল প্রকৃত অপরাধী কে?
❤ জানা যাবে পরের পর্বে। অনেক ধন্যবাদ এই পর্বটি পড়ার জন্য। আপনার মতামতের অপেক্ষা করছি। দয়া করে মন্তব্য করে জানাবেন। ]
চলবে