Read LOVE UNLOCKED - 10 by Pritha Das in Bengali Love Stories | মাতরুবার্তি

Featured Books
  • LOVE UNLOCKED - 10

    Love Unlocked :10Pritha :"What happened ! এরম ভাবে তাকিয়ে আ...

  • ঝরাপাতা - 17

    ঝরাপাতাপর্ব - ১৭বৌদির অভিযোগ শুনেই নিজের আর্জি নিয়ে রনি দাদ...

  • ভোটের রঙ - 2

    অধ্যায় ২: শহরের পোস্টারভোরের আলো ফুটতেই কলকাতার শহর যেন নতু...

  • চিঠি

    আজ সারাদিন ধরে মুশোল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে। আমি এই মাত্র অফিস থে...

  • মিষ্টি নামের তিক্ত রোগ

    ১শুরুর কথাছোটবেলায় শুনতাম এমন একটি রোগ আছে যার নাম মধুমেহ।...

বিভাগ
শেয়ারড

LOVE UNLOCKED - 10

Love Unlocked :10
Pritha 🎀:

"What happened ! এরম ভাবে তাকিয়ে আছ কেন ? আবার কিভাবে ধাক্কা মারা যায় তার প্ল্যান করছো নাকি ? "

"এ বাবা এসব না। আসলে আপনি এভাবে এরম কিচেনের সামনে দাড়িয়ে থাকবেন বুঝিনি এটা তো কাস্টমারদের জায়গা নয় আচ্ছা, তাও আমি সরি। " টেনশনে এমন আধ খেচড়া বাংলা ইংরেজি বলে চুপ করে গেলো আরিয়া। কানে এলো "এটা তোমার ?" 
তাকিয়ে দেখলো ওর কানের দুলটা দেবর্ষির হাতে। যেটার জন্য ও সকাল থেকে মনমরা হয়ে ঘুরছে।হারানো জিনিস পেলে তার দাম বোধহয় বেড়ে যায়, সাথে সেই জিনিসের মালিকের আনন্দ টাও। আরিয়া লাফিয়ে বলে উঠলো "আরেহ হ্যাঁ তো এটা তো আমার ! আপনার কাছে কিভাবে এলো আমি কখন থেকে খুঁজছিলাম" বলতে বলতে হাত বেরিয়ে কানের টা নিতে যাবেই এমন সময় দেবর্ষি হাতের মুঠোয় কানেরটা বন্ধ করে হাতটা পকেটে গুঁজে দিলো। ভাব নিয়ে বলে উঠলো "আমি কিভাবে বুঝবো এটা তোমার ? মিথ্যেও তো বলতে পারো।"

"আশ্চর্য আমি মিথ্যে কেন বলব ? ওটা আমারই। দিন বলছি।"

"আচ্ছা ? এটা তোমার ? প্রমাণ দেখাও!"

"ওটার আরেকটা পার্ট আমার বাড়িতে আছে। ওটা আমারই বিশ্বাস করুন। আমার বাপি আমায় দিয়েছিল ওটা।আমি মিথ্যে বলছি না।কেন বলব আমি মিথ্যে?"

"কারণ এটা সোনার দুল,মিথ্যে বলতেই পারো।"

এবার আরিয়ার রাগ উঠে গেলো। "ওইটুকু একটা সোনার দুলের জন্য আমি মিথ্যে কেন বলব? ওতে কি আমি বড়লোক হয়ে যাবো ? বলছি তো ওটা আমার।"

"I don't trust anyone... আমার জন্য এক কাপ ব্ল্যাক কফি উইথ নো সুগার।" কথাটা বলতে বলতে দেবর্ষি ঢুকে গেলো ওর জন্য নির্ধারিত কেবিনে। ও এখানে এলে এটা ইউজ করে।

আরিয়া বুঝে গেছে এভাবে চাইলে ও জিনিসটা পাবে না। ও যত তাড়াতাড়ি পারল কফি নিয়ে পৌঁছে গেল দেবর্ষির কেবিনে। কফিটা টেবিলে রেখে ফোনের দিকে তাকিয়ে ব্যস্ত দেবর্ষিকে বলে উঠলো "এবার আমার জিনিসটা দিন।"

ফোন থেকে মুখ তুলে আরিয়ার দিকে একবার তাকিয়ে একপেশে হেসে দেবর্ষি বলে উঠলো "আরেহ ধীরে এত ব্যস্ততা কিসের!" 

"দেখুন আমার অনেক কাজ আছে,যেতে হবে। প্লীজ আমার জিনিসটা আমায় তাড়াতাড়ি দিয়ে দিন।"

"আমার কাছে থাকলে তোমার জিনিস তো আমার হয়ে যাবে না। তোমারই থাকবে। ব্যস্ত হয়ো না।"
কথার মাঝেই আবির ঢুকলো। "বস হয়ে গেছে কাজ।"

"জিনিসটা কোথায়?" (দেবর্ষি)

আবির দেবর্ষির হাতে একটা কৌটো দিয়ে বলল আপনি চিন্তা করবেন না বাকি কাজ আমি সামলে নেবো। 
এদের কথোপকথন এর মধ্যে আরিয়া কেবল শ্রোতা। ওর কোনো ইন্টারেস্ট নেই। ও কেবল দাঁড়িয়ে আছে ওর দুলটার জন্য। যেটা পেলেই ও চলে যাবে।
দেবর্ষি বলে উঠলো "তুমি দাঁড়িয়ে আছো কেন বসো।"

"আমি বললাম তো আমার সময় নেই এখানে অনেক কাজ আছে। বাকিদের অ্যাটেন্ড করতে হবে। আপনি আমার জিনিসটা আমায় দিয়ে দিন এত হেঁয়ালি না করে।"

"আমার কথা না শুনলে তোমার জিনিস কিন্তু তুমি পাবে না। তোমার কাছে কিন্তু প্রমাণও নেই। যেটা করবে ভেবে চিন্তে করো।" দেবর্ষি অ্যাটিটিউড নিয়ে কথা গুলো বলে গেলো।

আরিয়া আর কোনো উচ্চবাচ্য করলো না। বসে পড়ল দেবর্ষির সামনের চেয়ারে। 

দেবর্ষি নিজের চেয়ার থেকে উঠে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসতে থাকলো আরিয়ার কাছে। 

"এ..একি আপনি এরম এগিয়ে আ..আসছেন কেন ! ভালো হবে না কিন্তু বলে দিচ্ছি। আমি... আম..আমি কিন্তু গায়ে গরম কফি ঢেলে দেবো।"

"ওহ রিয়েলি?"

"হ..হ্যাঁ"

"তোমার আমাকে ভয় করে না ?"

"না"

"তাহলে তোতলাচ্ছো কেন ?"

"কই ? ন..না তো !" তারপর একটা ঢোক গিলে বলে উঠলো, আপনাকে ভয় পাবো কেন ? আপনি বাঘ না ভাল্লুক ? জানি না কেন বাকিরা খামোখা আপনাকে ভয় পায়।"

"গ্রেট! আই উইশ তুমি ভবিষ্যতেও আমায় নিয়ে এতটা সাহস দেখাতে পারো।" 

"ভবিষ্যতের প্রশ্ন আসছে কেন ?"
আরিয়া তখনও বুঝতে পারেনি যে এরপর কি হতে চলেছে। 

"বলছি কেন আসছে !"
দেবর্ষি হঠাৎই আবিরের দেওয়া সেই কৌটো থেকে লাল একটা গুঁড়ো বার করে আরিয়ার সিথি ভরিয়ে তোলে। আরিয়া হতভম্ব হয়ে যায়। লাল গুঁড়োটা যে আসলে সিঁদুর সেটা যতক্ষনে বুঝতে পেরেছে ততক্ষণে সে এখন রূপকথা ফ্যাশন হাউজের মালিক দেবর্ষি সিংহ রায়ের স্ত্রী আরিয়া সিংহ রায়।
আরিয়া তখনও বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না ওর সাথে হওয়া ঘটনাটা। মেয়েদের কত স্বপ্ন থাকে এই দিনটা নিয়ে। আর ওর সাথে ঠিক এই ঘটনা টাই ঘটে গেলো। যেখানে ওর নিজের কারোর উপস্থিতি ছিল না। 

এতক্ষণ পুরোনো কথা ভাবতে ভাবতে আবার বাস্তবে ফিরে এল আরিয়া। নিজেকে এখন পুতুল মনে হচ্ছে ওর। যে যা পারছে করে যাচ্ছে। কাণ্ডটা করার পর থেকে দেবর্ষি ওর সাথে আর একটাও কথা বলেনি। ওর কেবল মাথায় ঘুরছে দেবর্ষি কেন এমন একটা কাজ করলো ? ও কি করতে চাইছে ওকে নিয়ে ? ও নিজেই বা কি করবে এখন ? কাজটার জন্য আরিয়া হাজার কথা, চিল্লানো জবাবদিহি চাইলেও দেবর্ষি চুপ থেকেছে। মাঝে কেবল একবার বলেছে "আমি কারোর কাছে জবাবদিহি করিনা। কেবল এটুকু জেনে রেখো যা করেছি এতে তোমারও স্বার্থ থাকবে আর আমারও।"
ব্যস এরপর থেকে আবারো সব চুপ। আরিয়া তারপর থেকে ভেবে যাচ্ছে কোন স্বার্থের কথা দেবর্ষি বলছিল ? কি এমন স্বার্থ যেটা ওর আর দেবর্ষির বিয়ে পর্যন্ত হতে পারে ? তাছাড়া ওরা দুজন দুজনকে চেনেই বা কদিন ? ওই তো ক্যাফেতে প্রথম আলাপ ! তারপর তো আর দেখা হয়নি। মাথায় হাজারটা চিন্তা ঘুরছে। কোনো কিছুরই কুলকিনারা খুঁজে পাচ্ছে না। খেই হারিয়ে যাচ্ছে। যন্ত্রণায় মাথাটা ছিঁড়ে যাচ্ছে। হাতে গরম কফি পরায় সেখানেও জ্বলছে। 
এদিকে চারপাশের কানাঘুষো কানে আসছে। ও কখনও ভাবতেও পারেনি ওর চরিত্র নিয়ে বলার সুযোগ কেউ পাবে। কিন্তু আসলেই এসব হচ্ছে। যেগুলোকে ও এভয়েড করতে পারবে না। দেবর্ষি নিজেও কিছু বলছে না। অবশ্য বলবেই বা কেন ? ও তো জানিয়েই দিয়েছে এটা তো স্বার্থের বিয়ে ! আরিয়া তো আসলে ওর কেউ নয়। তবে আরিয়ার মাথায় আসা এই প্রশ্নটা ও ফেলতে পারছে না। স্বার্থটা আসলে কি ? 

দেবর্ষি আবিরের সাথে কথা শেষ করে এগিয়ে এলো আরিয়ার কাছে। আরিয়ার হাতটা ধরে বলে উঠলো চলো। গরম কফি পরায় হাতটা জ্বলছিল আরিয়ার। কিন্তু এখন দেবর্ষির শক্ত পুরুষালী হাতের স্পর্শে ওর জ্বলন বেড়ে গেলো। 

হালকা চেঁচিয়ে উঠলো "আহ !"

দেবর্ষির ভ্রু কুঁচকে গেলো। আরিয়ার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলো জায়গাটা লাল হয়ে ফুলে গেছে। কিছু কিছু জায়গা অতিরিক্ত লাল। দেবর্ষি ডাক দিলো "আবির !"

আবির সাইড থেকে একটা ফারস্টেইড বক্স এগিয়ে দিলো। "বস সব তৈরি আছে।" 

"তুমি গাড়িটা রেডি করো আমরা আসছি।" 

আবির বেরিয়ে চলে গেল।

দেবর্ষি হাঁটু গেড়ে আরিয়ার পাশে বসল। বক্স থেকে একটা মলম বার করে আরিয়ার হাতে যত্ন নিয়ে ফুঁ দিয়ে লাগিয়ে দিতে লাগলো। 
আরিয়া অবাক চোখে দেবর্ষিকে দেখে যাচ্ছে। বহু বছর কেউ এমন করে ওর যত্ন করেনি। ওর খুব ভালো লাগছে। কিন্তু হঠাৎ করেই মাথা চারা দিয়ে উঠল দেবর্ষি ওর সাথে কি করেছে এটা ভেবে। টেনে হাতটা সরিয়ে নিলো। 
চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে বলে উঠলো "আমার এত যত্ন নিতে হবে না। আপনি নিশ্চই এমনি এমনি বিয়ে করেননি ? বিষয় টাকে নরমাল করার চেষ্টা না করলেও চলবে। আপনি নিজের স্বার্থতে ফোকাস করুন। আর আমার কি স্বার্থ সেটাও বলুন তো এবার। এত সাসপেন্স এত হেঁয়ালি আমার সত্যি আর ভালো লাগছে না।"

"তোমার যত্ন ! দেবর্ষি সিংহ রায় একটা রানডম মেয়ের যত্ন নেবে ? ওহ সিরিয়াসলি ?" বলেই হু হা করে হেসে উঠলো দেবর্ষি।
আশপাশ থেকেও কিছু তাচ্ছিল্য হাসির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। জায়গাটায় সবাই ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। যেন কোনো সার্কাস চলছে। কেউ কেউ কানাঘুষো করছে। আবার কেউ দোষ দিচ্ছে আরিয়াকে। আরিয়ার লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করলো। 
ও মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে আছে। চোখ থেকে টপটপ করে জল গড়িয়ে পড়ছে। 
"আমি বাইরে অপেক্ষা করছি চলে এসো।আর তোমরা, এরপর এই বিষয়ে কারোর মুখ থেকে আর একটাও কথা শুনলে এখানে এটাই তোমাদের শেষদিন।"
কথাটা শেষ করে দেবর্ষি বেরিয়ে গেলো।

একে একে সবাই নিজেদের কাজে ব্যস্ত হয়ে গেল। জায়গাটা ফাঁকা হয়ে গেলো। সোনালীও আরিয়ার কাঁধে একটা ভরসার হাত রেখে চুপচাপ নিজের কাজে চলে গেল। আরিয়া কেবল একা দাঁড়িয়ে রইলো ঘরটার মধ্যে। ধীরে ধীরে আনমনা পায়ে এগিয়ে গেল বাইরের দিকে। যেখানে অপেক্ষা করছে ওর নতুন ঠিকানা ! 
.
.
.
.
চলবে....
গল্পটা ভালো লাগছে ? কোনো রেসপন্স না পেলে আমি পরবর্তী পর্ব আপাতত আপলোড করব না।