Featured Books
বিভাগ
শেয়ারড

গাণিতিক জ্যোতিষ সম্পর্কে

ফলিত জ্যোতিষের পাশাপাশি নিউমিরোলজিও (গাণিতিক জ্যোতিষ) এখন বিশ্বজুড়ে একটি জনপ্রিয় বিষয়। কারণ, বর্তমান দুনিয়াটা চলে টাকার অঙ্ক দিয়ে। আর টাকা মানেই সংখ্যা। ফলে মানুষের জীবনেও সংখ্যার প্রভাব যে গভীর, তা আর অস্বীকার করা যায় না।  

এখন গাণিতিক জ্যোতিষের কিছু বেসিক দিক নিয়ে আলোচনা করছি।

এই সংখ্যাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে
১) চালক সংখ্যা বা মূলাঙ্ক।
২) লাইফ পাথ নম্বর বা ভাগ্যাঙ্ক।
৩) পার্সোনাল ইয়ার নম্বর বা বর্ষাঙ্ক।

১) চালক সংখ্যা (মূলাঙ্ক) কিভাবে বের করতে হয় ?
চালক সংখ্যা (মূলাঙ্ক) বের হয় জন্মদিনের তারিখ থেকে।  
ধরুন কারো জন্ম তারিখ: ৬ আগস্ট ১৯৬৯। এখানে জন্মদিন = ৬। তাই মূলাঙ্ক = ৬।  
কারো জন্মদিন যদি ১০ তারিখ হয়, তার মূলাঙ্ক হবে ১। তেমনি কারো জন্মদিন যদি ৩১ তারিখ হয়, তাহলে তার মূলাঙ্ক হবে ৩ + ১ = ৪।

২) ভাগ্যাঙ্ক বা লাইফ পাথ সংখ্যা বের হয় পুরো জন্মতারিখ যোগ করে।  
যেমন: ৬/৮/১৯৬৯  
৬ + ৮ + ১ + ৯ + ৬ + ৯ = ৩৯
৩৯ = ৩ + ৯ = ১২
১২ = ১ + ২ = ৩
তাহলে ভাগ্যাঙ্ক = ৩।  

সংখ্যা যাইহোক, উভয় ক্ষেত্রেই সেটাকে সিঙ্গেল সংখ্যায় নিয়ে আসতে হবে।

এবার মানুষের জীবনে মূলাঙ্ক ও ভাগ্যাঙ্কের প্রভাব সম্পর্কে কিছু কথা বলা যাক।

১) মূলাঙ্ক (চালক সংখ্যা): এটা একজনের বাহ্যিক ব্যক্তিত্ব, স্বভাব, আচরণ, দৈনন্দিন চালচলনকে বোঝায়।  
যেমন মূলাঙ্ক ৬, ভেনাসের প্রভাব। এরা সৌন্দর্যপ্রেমী, সুরুচিসম্পন্ন, দায়িত্বশীল, পরিবারমুখী এবং সমাজে আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী।  

২) ভাগ্যাঙ্ক (লাইফ পাথ): এটা হলো জীবনের সামগ্রিক দিকনির্দেশনা, অর্থাৎ ভাগ্যের রাস্তা কোনদিকে যাচ্ছে।  
যেমন ভাগ্যাঙ্ক ৩, জুপিটার (বৃহস্পতি) এর প্রভাব। এরা আশাবাদী, জ্ঞানপিপাসু, বক্তৃতা ও লেখনশৈলীতে পারদর্শী, বড় পরিসরে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম।  

অর্থাৎ, মূলাঙ্ক ৬ ও ভাগ্যাঙ্ক ৩ হলে ব্যক্তির স্বভাব হবে আকর্ষণীয়, দায়িত্বশীল ও শিল্পমনা; আর ভাগ্যের পথ হবে জ্ঞান, শিক্ষা ও নেতৃত্বের দিকে।  

৩) এবার বলছি পার্সোনাল ইয়ার নম্বর কিভাবে বের করতে হয় !  
এটা হলো নির্দিষ্ট বছরের জন্য একজন মানুষের জীবন প্রবাহ।  
সূত্র: (জন্মতারিখ + জন্মমাস + বছরের সংখ্যা)  

উদাহরণ: জন্মদিন: ৬, মাস: ৮  
এর সাথে যোগ করতে হবে সংশ্লিষ্ট বছর।
ধরা যাক, বছর ২০২৫, মানে ২ + ০ + ২ + ৫ = ৯

সুতরাং ৬ (দিন) + ৮ (মাস) + ৯ (বছর) = ২৩
 = ২ + ৩ = ৫।

অর্থাৎ, ২০২৫ সালের পার্সোনাল ইয়ার নম্বর = ৫।  

মানুষের উপর পার্সোনাল ইয়ার নম্বরের প্রভাব: 

প্রতি বছর আলাদা সংখ্যা আলাদা প্রভাব ফেলে, আর সে অনুযায়ী জীবনযাত্রায় ওঠানামা হয়।  

১ নতুন শুরু, স্বাধীনতা, নেতৃত্ব। 
২ চন্দ্র, আবেগ, ওঠানামা, সম্পর্ক।  
৩ আনন্দ, সৃজনশীলতা, প্রকাশ।  
৪ স্থায়িত্ব, পরিশ্রম, ভিত্তি গড়া।  
৫ পরিবর্তন, ভ্রমণ, নতুন অভিজ্ঞতা।  
৬ পরিবার, দায়িত্ব, ভালোবাসা।  
৭ আত্মজিজ্ঞাসা, গবেষণা, আধ্যাত্মিকতা। 
৮ ক্ষমতা, অর্থ, সাফল্য। 
৯ সমাপ্তি, পরিপূর্ণতা, নতুন অধ্যায়ের প্রস্তুতি।  

যেমন বর্তমানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পার্সোনাল ইয়ার নম্বর ২। সংখ্যা ২ মানে চন্দ্র— এটা কখনো স্থির থাকে না; মাসের ১৫ দিন বাড়ে, ১৫ দিন কমে। তাই তিনি এখন খুব অস্থির মতি। তবে আগামী বছর তার সংখ্যা বদলে ৩ হবে— তখন তিনি সৃজনশীলতা, যোগাযোগ ও আত্মপ্রকাশে মনোযোগী হবেন।  
প্রসঙ্গত বলে রাখি - এই বছর আমার পার্সোনাল ইয়ার সংখ্যা ৫। সুতরাং পরিবর্তন আবশ্যিক। আমার নিজের মন এবং মানসিকতার মধ্যে নিশ্চয়ই কোনো না কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করে থাকবেন।

এগুলো ছাড়াও আরও একটি বিষয় হচ্ছে পিন্যাকল সংখ্যা। এই সংখ্যা প্রত্যেকের জীবনকে চারটি ভাগে ভাগ করে— যেন জীবনের চারটি ঋতু। প্রতিটি ঋতুর আলাদা শিক্ষা ও আলাদা প্রভাব থাকে।  
তবে আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় এটি নয়। আগ্রহ থাকলে পরে এই নিয়ে একটি বিস্তারিত পোস্ট করা যাবে।  

সংখ্যা শুধু অঙ্ক নয়, জীবনের এক অদৃশ্য শক্তি।  
মূলাঙ্ক আমাদের স্বভাব বোঝায়, ভাগ্যাঙ্ক আমাদের ভাগ্যের পথকে ইঙ্গিত করে, আর পার্সোনাল ইয়ার নম্বর প্রতিটি বছরের টোন তৈরি করে। জীবনের অঙ্ক বুঝতে পারলেই ভবিষ্যতের দিকনির্দেশা স্পষ্ট হয়ে যায়। 
কারো ভাগ্যাঙ্ক হয়তো টেকনিক্যাল দিক নির্দেশ করছে। কিন্তু তার গার্ডিয়ান তাকে মেডিকেল লাইনে ভর্তি করে দিল। সফলতা জীবনেও আসবে না। তাই জ্যোতিষ তো মানতেই হবে।