🌍 প্রোগ্রামড সভ্যতার দান — “এলিয়েন মানুষ”
আজ পৃথিবীর জনসংখ্যা প্রায় আটশো কোটি।
এই বিপুল জনসংখ্যার সবাইকে আমরা মানুষ বলেই বিশ্বাস করি—
কিন্তু প্রশ্ন হলো, আমরা সবাই সত্যিই মানুষ আছি তো ?
হাত আছে, পা আছে, চোখ আছে, কান আছে, মুখ আছে হাসি আছে—
তবুও মনে হয় কিছু একটা হারিয়ে গেছে।
আমরা হাসি, কিন্তু হাসির মধ্যের সেই নির্মল আনন্দ আর খুঁজে পাই না;
আমরা ভালোবাসি, কিন্তু হৃদয় দিয়ে হৃদয় ছুঁতে পারি না; কেমন জানি উপরসা উপরসা ভালোবাসা।
আমরা শুনি, কিন্তু অনুভব করি না। বলি, কিন্তু অন্তর থেকে নয়; কেমন জানি কলের গানের রেকর্ডের মতো।
আমরা খাবার খাই,
কিন্তু এমনভাবে খাই যেন শুধু শরীর চালানোর জন্য জ্বালানি ভরছি ! একবারের জন্যও আমাদের ভাবনা আসে না যে, এই শরীরটা যন্ত্র হলেও এটা একটা লিভিং পার্টিকেল; কোনো জড় পদার্থের তৈরি ইঞ্জিন নয়।
দেখতে শুনতে আমাদের দেহটা তো এখনো অবশ্যই মানুষ,
কিন্তু মনটা ?
মনটা যেন দূরে কোথাও হারিয়ে গেছে কোনো এক বিশাল শূন্যতায় ..... !
🧠 মস্তিষ্ক — এখন প্রোগ্রামড প্রসেসর
একসময় মানুষ নিজের চিন্তা নিজে করত।
তখন ভাবনা ছিল স্বাধীন, মনের মধ্যে ছিল একটা সঠিক দিশা।
আজ আমরা নিজেরা ভাবি না—
আমাদের ভাবানো হয়।
তুমি যে খবর দেখছো,
তুমি যে সিনেমা দেখছো,
তুমি যে টিভি দেখছো,
তুমি যে গান শুনছো,
এন্ড্রোয়েড ফোনের পর্দায়
যে ভিডিও স্ক্রল করে যাচ্ছো—
সবকিছুই তৈরি করা হয়েছে তোমার চিন্তাকে নির্দিষ্ট এক পথে চালানোর জন্য।
তুমি ভাবছো তুমি চিন্তা করছো—
আসলে তুমি শুধু সেই চিন্তাটাই রিপিট করছো
যেটা কেউ তোমার মস্তিষ্কে আগে থেকেই ইনস্টল করে দিয়েছে।
এটাই আধুনিক সভ্যতার নতুন দাসত্ব—
Freedom of body, slavery of mind.
🧬 মানুষের দেহ, কিন্তু অনুপস্থিত আত্মা
তুমি কি খেয়াল করো না—
অনেকে অন্যের কষ্ট দেখে হাসে,
এই হাসিতেই ওরা আনন্দ পায়,
অন্যায় দেখেও এরা নিশ্চুপ হয়ে থাকে,
মিথ্যা জানলেও সত্য বলে মেনে নেয় ?
নিজের চিন্তা চেতনাকে অন্যের কাছে
বন্ধক দিয়ে রাখা এই জীবন্ত ডেড বডিগুলোকে
কি তোমার মানুষ বলে মনে হয় ?
এরা কিন্তু সংখ্যায় অনেক।
দেখতে এরা ঠিক মানুষের মতোই, কিন্তু ওদের ভেতরটা আলাদা।
তাদের মস্তিষ্ক কাজ করে, কিন্তু হৃদয় কাজ করে না। কারণ এদের হৃদপিন্ড থাকলেও সেখানে হৃদয় বলে কোনো কিছুই নেই।
তাদের চোখ খোলা, কিন্তু অন্তর অন্ধ।
তাদের দেহ আছে, কিন্তু আত্মা নেই।
তাদের শরীরে প্রাণ আছে, কিন্তু মন নেই।
এরা আসলে “মানব আকৃতির প্রোগ্রাম”—
যাদের আবেগ, সিদ্ধান্ত, এমনকি ভালোবাসাও কোডেড। মানে এদের সফটওয়্যার সিস্টেমের মধ্যে সবকিছুই আগে থেকে প্রোগ্রামিং করে দিয়ে রাখা হয়েছে।
এরা অন্য কোনো অদৃশ্য শক্তির নির্দেশে চলে।
এদের নিজস্ব সত্তা বলতে কিছুই নেই—
শুধু সিগন্যাল অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া আছে।
এদের দেখে তো মনে হয় না এরা এই পৃথিবী নামক গ্রহটার প্রাণী। মনে হয় যেন কোনো এক অজানা জগৎ থেকে ওরা মাতৃগর্ভকে ব্যবহার করে এই পৃথিবীতে ল্যান্ড করেছে।
💡 বিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান ও অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণ
বিজ্ঞান বলে, মানুষের মস্তিষ্ক এক অনন্য ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রিসিভার।
এটি শুধু চিন্তা তৈরি করে না, চিন্তা গ্রহণও করে।
অর্থাৎ—
তুমি যদি সচেতন না হও,
তোমার চিন্তাও তোমার নিজের থাকবে না।
মিডিয়া, স্ক্রিন, সাউন্ড, এবং সমাজের অদৃশ্য চাপ—
সব মিলে তোমার চিন্তার তরঙ্গদৈর্ঘ্যে হস্তক্ষেপ করে।
তোমার ব্রেইন সিগন্যালকে তারা রিমোটের মতো চালায়।
ফলাফল?
তুমি এখন আর তুমি নও—
তুমি কেবল সেই ভার্সন,
যেটা তাদের সিস্টেম তোমার মধ্যে প্রোগ্রাম করেছে।
🌿 তবুও আলো এখনো নিভে যায়নি
সবাই এমন নয়।
যতদিন কেউ ভালোবাসতে জানে,
অন্যের কষ্টে কাঁদে,
অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়—
ততদিন মানুষ মরে না।
যদি তোমার চোখে এখনও জল আসে,
যদি তুমি প্রকৃতির নীরবতায় শান্তি পাও,
যদি তোমার ভিতর থেকে কেউ বলে—“না, এটা ঠিক নয়”—
তাহলে অভিনন্দন,
তুমি এখনো মানুষ আছো।
তোমার আত্মা এখনো জেগে আছে।
এই “এলিয়েন মানুষ” কোনো আকাশের প্রাণী নয়—
এরা আমাদের মধ্যেই আছে।
এরা সেই মানুষ,
যারা নিজের মস্তিষ্কের রিমোট অন্যের হাতে তুলে দিয়েছে।
কিন্তু তুমি পারো—
নিজের ভেতরের সিগন্যাল রিসেট করতে।
নিজেকে পুনরায় প্রোগ্রাম করো—
সত্য, সহানুভূতি, আর অনুভূতির ভাষায়।
তাহলেই এই পৃথিবী আবার মানুষের গ্রহ হবে,
রোবটের নয়। 🌍💫