মানুষের “প্রথম ব্রেইন” কোনটি ?
-- যোগী কৃষ্ণদেব নাথ
আমরা ছোটবেলা থেকে শিখেছি — ব্রেইনই শরীরের বস। ব্রেইন বলতে এখানে মস্তিষ্ককেই বোঝানো হয়েছে। কিন্তু এই শতাব্দীর শুরুর দিক থেকেই আমরা আরও একটি ব্রেইনের কথা শুনতে পাচ্ছি। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের নতুন গবেষণা থেকে গাটকে বলা হচ্ছে “সেকেন্ড ব্রেইন”। বর্তমান সময়ের মেডিক্যাল সায়েন্স অনুসারে মানুষের মস্তিষ্ক হলো ফার্স্ট ব্রেইন এবং গাট হচ্ছে সেকেন্ড ব্রেইন। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত কতটুকু ঠিক?
গাট সম্পর্কে যত পড়াশোনা করছি, আমার কাছে পরিষ্কার হচ্ছে — মানুষের প্রথম ব্রেইন মস্তিষ্ক নয়, গাটই। কারণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞান আমাদের সামনে উল্টো সত্য নিয়ে আসছে।
গাট ডিসাইড করে, ব্রেইন রিয়েক্ট করে।
গাট প্রোগ্রামিং করে, ব্রেইন প্রসেসিং করে।
সুতরাং শরীরের আসল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা গাটের ভেতরেই রয়েছে। তাহলে শরীরের প্রথম ব্রেইন কাকে বলা উচিত ?
কেন গাটকে প্রথম ব্রেইন বলা উচিত ?
কারণ গাটের ভিতরেই তৈরি হয় সেইসব কেমিক্যাল যেগুলো আমাদের অনুভূতি, মুড, মনোযোগ এবং মানসিক শান্তি নিয়ন্ত্রণ করে। ৯০% সেরোটোনিন গাটেই তৈরি হয়। প্রচুর পরিমাণ ডোপামিন, GABA, মেলাটোনিনের প্রিকর্সরও গাটে তৈরি হয়। Anxiety ও Depression পর্যন্ত গাটের মাইক্রোবায়োম সরাসরি প্রভাবিত করে।
এই সব কেমিক্যাল মস্তিষ্কে সিগন্যাল পাঠায়। ব্রেইন শুধু তার উপর প্রতিক্রিয়া দেয়। এজন্যই বলা উচিত — ব্রেইন follow করে, আর lead করে গাট।
এখানে আরও গভীর ব্যাপার আছে —
গাট শুধুই খাবার হজমের জায়গা নয়, গাট হলো শরীরের chemical conversation system। আমাদের প্রতিটি খাবার, প্রতিটি মশলা, প্রতিটি herb — গাট microbiome এর কাছে এক একটি code। আমাদের plate, আমাদের future programming করে।
মানুষ ভাবে খাবার খাই energy পাবো।
কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো — খাবার খেলেই energy পাওয়া যায় না, খাবার সঠিকভাবে metabolize হলেই energy তৈরি হয়। আর সেই “metabolism permission” দেয় কে ? গাট।
ইমিউন সিস্টেমের কেন্দ্রও গাট
মানবদেহের ৭০% থেকে ৭৫% প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গাটের মধ্যেই অবস্থান করে। শরীর কাকে বন্ধু হিসেবে রাখবে, কাকে শত্রু হিসেবে eliminate করবে — তা ঠিক করে এই গাট ecosystem। অনেক অটোইমিউন রোগের শুরুই হয় গাট imbalance থেকে।
আমরা জীবাণুকে শত্রু ভাবতে শিখেছি, কিন্তু মজার বিষয় — গাট microbiome নামের এই trillions microbial army-ই আমাদের প্রকৃত সেনা। তারা ঠিক মতো খেতে না পেলে, ভুল খাবার দিলে, processed food দিলে — সৈন্যদল ভিতর থেকে হার মানে।
মেডিসিনের ভবিষ্যৎ গাট কেন্দ্রিক
আজ neuroscience বলছে — mind-gut axis হচ্ছে মূল controller।
psychiatry microbiome-based থেরাপিতে যাচ্ছে।
immunology ইতিমধ্যেই gut-origin disease model accept করছে।
এখনো textbooks-এ গাটকে “second brain” লেখা আছে, কিন্তু আর ১০/১৫/২০ বছর পর হয়তো লেখা হবে — গাটই প্রথম ব্রেইন। বাকিটা তার extension।
আমার নিজের উপলব্ধি
আমার লাইফস্টাইল জার্নি শুরু হয়েছিল স্থুলতা ও ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য। কিন্তু ধীরে ধীরে আমার সমস্ত concentration এখন গাট microbiome-এর দিকে চলে গেছে। এখন পরিষ্কার বুঝতে পারছি — আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে কেন বলা হয়েছে, মানুষের ৯০% রোগের জড় পেটের মধ্যে।
আমরা যদি সত্যিই রোগমুক্ত হতে চাই — modern medicine, tablet, supplement দিয়ে নয় — প্রথমে গাট restore করতে হবে। কারণ গাট align হলে brain, hormones, metabolism, immunity সব নিজে থেকে align হবে।
খাবার কেবল পেট ভর্তি করার জিনিস নয়। খাবার হলো গাটের microbiome এর ভাষায় কথা বলার “প্রোগ্রাম” বা “কী-ওয়ার্ড”। তুমি কী খাচ্ছো — তার মধ্যেই লেখা থাকে তুমি ভবিষ্যতে কেমন মানুষ হবে।
যে জাতি গাট পলিটিক্স বোঝে — তার ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত।
যে জাতি গাটকে বোঝে না — তার ভবিষ্যৎ ঋণ ও রোগের হাতে বন্দী।
তাই ভালো থাকতে চাইলে —
গাটকে heal করো।
গাটকে educate করো।
শরীরের ব্রেইন নিজেই সব ঠিক করে নেবে।