Featured Books
বিভাগ
শেয়ারড

মহাভারতের কাহিনি – পর্ব 126

মহাভারতের কাহিনি – পর্ব-১২৬

দ্বাদশ দিনে সংশপ্তকদের যুদ্ধ এবং ভগদত্ত বধের কাহিনি

 

প্রাককথন

কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস মহাভারত নামক মহাগ্রন্থ রচনা করেছিলেন। তিনি এই গ্রন্থে কুরুবংশের বিস্তার, গান্ধারীর ধর্মশীলতা, বিদুরের প্রজ্ঞা, কুন্তীর ধৈর্য, বাসুদেবের মাহাত্ম্য, পাণ্ডবগণের সত্যপরায়ণতা এবং ধৃতরাষ্ট্রপুত্রগণের দুর্বৃত্ততা বিবৃত করেছেন। নানা কাহিনি সংবলিত এই মহাভারতে সর্বমোট ষাট লক্ষ শ্লোক আছে। কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস পূর্বে নিজের পুত্র শুকদেবকে এই গ্রন্থ পড়িয়ে তার পর অন্যান্য শিষ্যদের শিখিয়েছিলেন। তিনি ষাট লক্ষ শ্লোকে আর একটি মহাভারতসংহিতা রচনা করেছিলেন, তার ত্রিশ লক্ষ শ্লোক দেবলোকে, পনের লক্ষ পিতৃলোকে, চোদ্দ লক্ষ গন্ধর্বলোকে এবং এক লক্ষ মনুষ্যলোকে প্রচলিত আছে। কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের শিষ্য বৈশম্পায়ন শেষোক্ত এক লক্ষ শ্লোক পাঠ করেছিলেন। অর্জুনের প্রপৌত্র রাজা জনমেজয় এবং ব্রাহ্মণগণের বহু অনুরোধের পর কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস তাঁর শিষ্য বৈশম্পায়নকে মহাভারত শোনাবার জন্য আজ্ঞা দিয়েছিলেন।

সেইসব মানুষের সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য, যাঁরা বিশালাকার মহাগ্রন্থ মহাভারত সম্পূর্ণ পাঠ করেছেন। অধিকাংশ মানুষই মহাভারতের কিছু কিছু গল্প পড়েছেন, শুনেছেন বা দূরদর্শনে সম্প্রসারিত ধারাবাহিক চলচ্চিত্রায়ণ দেখেছেন, যা মহাভারতের খণ্ডাংশ মাত্র এবং মূলত কৌরব ও পাণ্ডবদের বিষয়ীভূত ও শ্রীকৃষ্ণের ভূমিকাকে কেন্দ্র করে নির্মিত।

মহাগ্রন্থ মহাভারত রচিত হয়েছে অসংখ্য কাহিনির সমাহারে, যে কাহিনিসমূহের অধিকাংশই কৌরব ও পাণ্ডবদের কাহিনির সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কিত।

সেই সমস্ত কাহিনিসমূহের কিছু কিছু কাহিনি সহজবোধ্য ভাষায় সুহৃদ পাঠক-পাঠিকাদের কাছে ধরাবাহিকভাবে উপস্থাপনা করার জন্য আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস আশা করি ভালো লাগবে।

অশোক ঘোষ

 

দ্বাদশ দিনে সংশপ্তকদের যুদ্ধ এবং ভগদত্ত বধের কাহিনি

বর্ষাকালে প্রচণ্ড জলোচ্ছাসের সঙ্গে গঙ্গা ও সরযূ যেমন দ্রুতবেগে ধাবিত হয়, যুদ্ধের দ্বাদশ দিনের সকালে তেমন উভয় পক্ষের সেনা পরস্পরের দিকে ধাবিত হোলো। অর্জুনকে আসতে দেখে সংশপ্তকগণ খুশি হয়ে চিৎকার করতে লাগল। অর্জুন সহাস্যে কৃষ্ণকে বললেন, ত্রিগর্ত ভাইয়েরা আজ যুদ্ধে মরতে আসছে, অথচ তারা শোক না কোরে আনন্দ প্রকাশ করছে। 

অর্জুন মহারবে দেবদত্ত শঙ্খ বাজালেন, তার শব্দে শঙ্কিত হয়ে সংশপ্তকবাহিনী কিছুক্ষণ পাথরের মতো নিশ্চল হয়ে রইল, তার পর দুই পক্ষ থেকে প্রবল শরবর্ষণ হতে লাগল। অর্জুনের শরাঘাতে নিপীড়িত হয়ে ত্রিগর্তসেনা ছত্রভঙ্গ হোলো। সুশৰ্মা বললেন, বীরগণ ভয় নেই, পালিও না, তোমরা সকলের সামনে শপথ করেছ, এখন দুর্যোধনের সৈন্যদের কাছে ফিরে গিয়ে কি বলবে? পালিয়ে গেলে লোকে আমাদের উপহাস করবে, অতএব সকলে যথাশক্তি যুদ্ধ করো। তখন সংশপ্তকগণ এবং নারায়ণী সেনা মৃত্যুপণ করে পুনর্বার যুদ্ধে রত হোলো।

অর্জুন কৃষ্ণকে বললেন, এই সংশপ্তকগণ জীবিত থাকতে রণভূমি ত্যাগ করবে না, তুমি ওদের দিকে রথ নিয়ে চলো। কিছুক্ষণ বাণবর্ষণের পর অর্জুন তাষ্ট্র অস্ত্র নিক্ষেপ করলেন। তখন সহস্র সহস্র বিভিন্ন মূর্তি আবির্ভূত হোলে বিপক্ষ সৈন্যগণ বিভ্রান্ত হয়ে তাদেরকে অর্জুন কৃষ্ণ ভেবে পরস্পরকে হত্যা করতে লাগল। অর্জুন সহাস্যে ললিথ মালব মাবেল্লক ও ত্রিগর্ত যোদ্ধাদের নিপীড়িত করতে লাগলেন। বিপক্ষের শরজালে আচ্ছন্ন হয়ে অর্জুনের রথ অদৃশ্য হোলে তিনি নিহত হয়েছেন মনে করে শত্রুসৈন্যগণ আনন্দে কোলাহল করে উঠল। তখন অর্জুন বায়ব্যাস্ত্র নিক্ষেপ করলে প্রবল বায়ুপ্রবাহে সংশপ্তকগণ এবং তাদের হাতি, রথ, ঘোড়া প্রভৃতি শুকনো পাতার মতো উড়ে যেতে লাগল। অর্জুন ক্ষিপ্র হাতে তীক্ষ্ম শরের আঘাতে হাজার হাজার শত্রুসৈন্য বধ করলেন। সংশপ্তকগণ নিহত হয়ে ইন্দ্রলোকে যেতে লাগল।

অর্জুন যখন ভয়ঙ্কর যুদ্ধ করছিলেন তখন দ্রোণ গরুড় ব্যূহ রচনা কোরে সসৈন্যে যুধিষ্ঠিরের প্রতি ধাবিত হলেন। এই ব্যূহের মুখে স্বয়ং দ্রোণ, মাথায় দুর্যোধন ও তার ভাইয়েরা, কৃতবর্মা ও কৃপাচার্য, কলিঙ্গ, সিংহল, প্রাচ্য প্রভৃতি দেশের যোদ্ধারা, বাম পাশে ভূরিশ্রবা, শল্য প্রভৃতি, বাম পাশে অবন্তিদেশীয় বিন্দ অনুবিন্দ, কম্বোজরাজ সুদক্ষিণ ও অশ্বত্থামা, পিছনে কলিঙ্গ, অম্বষ্ঠ, মগধ, পৌন্ড্র, গান্ধার প্রভৃতি দেশের সৈন্যগণ, পুত্র, জ্ঞাতি ও বান্ধব সহ কর্ণ এবং মধ্যস্থলে জয়দ্রথ, ভীমরথ, নিষধরাজ প্রভৃতি রইলেন। রাজা ভগদত্ত এক সুসজ্জিত হাতির পিঠে মালা ও সাদা ছাতায় শোভিত হয়ে ব্যূহমধ্যে অবস্থান করলেন।

অপর দিকে অর্ধচন্দ্র ব্যূহ রচনা কোরে যুধিষ্ঠির ধৃষ্টদ্যুম্নকে বললেন, তুমি এমন ব্যবস্থা করো যাতে আমি দ্রোণের হাতে ধরা না পড়ি। ধৃষ্টদ্যুম্ন বললেন, আমি জীবিত থাকতে আপনি উদ্বিগ্ন হবেন না, দ্রোণকে আমি আপনাকে স্পর্শ করতে দেবো না। ধৃষ্টদ্যুম্নকে সম্মুখে দেখে দ্রোণ বিশেষ খুশি হলেন না, তিনি প্রবল শরবর্যণে যুধিষ্ঠিরের সৈন্য বিনষ্ট ও বিচ্ছিন্ন করতে লাগলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই উভয় পক্ষ বিশৃঙ্খল হয়ে উন্মত্তের মতো যুদ্ধে রত হোলো। যুধিষ্ঠিরকে রক্ষা করবার জন্য সত্যজিৎ দ্রোণের সাথে যুদ্ধ করতে করতে নিহত হলেন। যুধিষ্ঠির সন্ত্রস্ত হয়ে তখনই দ্রুতবেগে সরে গেলেন। পাঞ্চাল, কেকয়, মৎস্য প্রভৃতি দেশের যোদ্ধারা দ্রোণকে আক্রমণ করলেন। প্রচণ্ড যুদ্ধের পর সাত্যকি, চেকিতান, ধৃষ্টদ্যুম্ন, শিখণ্ডী, প্রভৃতি দ্রোণের নিকট পরাস্ত হলেন, বিজয়ী কৌরবগণ পলায়মান পাণ্ডবসৈন্য বধ করতে লাগলেন।

দুর্যোধন সহাস্যে কর্ণকে বললেন, দেখো, পাঞ্চালগণ দ্রোণের শরাঘাতে আহত হয়ে পালাচ্ছে, আমার সৈন্যদের দ্বারা ঘিরে থাকায় মহাক্ৰোধী দুর্মতি ভীম সমস্ত জায়গা দ্রোণময় দেখছে, আজ সে জীবনরক্ষা ও রাজ্যলাভে নিরাশ হয়েছে। কর্ণ বললেন, এই মহাবীর ভীম জীবিত থাকতে রণস্থল ত্যাগ করবে না, আমাদের গর্জনও সইবে না। দ্রোণ যেখানে আছেন আমাদের শীঘ্র সেখানে যাওয়া উচিত, নতুবা নেকড়ে বাঘের দল যেমন মহাকায় হাতিকে বধ করে তেমন পাণ্ডবরা দ্রোণকে বধ করবে। এই কথা শুনে দুর্যোধন ও তার ভাইয়েরা দ্রোণকে রক্ষা করতে গেলেন।

দ্রোণের রথের পতাকার উপর কৃষ্ণসার হরিণের চামড়া ও স্বর্ণময় কমণ্ডলু, ভীমের পতাকায় মহাসিংহ, যুধিষ্ঠিরের পতাকায় গ্রহদের সাথে চন্দ্র ও শব্দায়মান দুই মৃদঙ্গ, নকুলের পতাকায় ভীষণ শরভ এবং সহদেবের পতাকায় রূপোর হাঁস ছিলো। যে হাতিতে চড়ে ইন্দ্ৰ দৈত্য ও দানব জয় করেছিলেন, সেই হাতির বংশধরের পিঠে চড়ে ভগদত্ত ভীমের প্রতি ধাবিত হলেন। পাঞ্চাল সৈন্যসহ যুধিষ্ঠির তাঁকে বাধা দিতে গেলেন। ভগদত্তের সঙ্গে যুদ্ধে দশার্ণরাজ নিহত হলে পাঞ্চালসৈন্য ভয়ে পালাতে লাগল।

হাতির গর্জন শুনে অর্জুন কৃষ্ণকে বললেন, এ নিশ্চয় ভগদত্তের বাহনের শব্দ, এই হাতি অস্ত্রের আঘাত এবং অগ্নির স্পর্শও সইতে পারে, সে আজ সমস্ত পাণ্ডবসৈন্য বিনষ্ট করবে। তুমি সত্বর ভগদত্তের কাছে রথ নিয়ে চলো, তাঁকে আজ আমি ইন্দ্রের অতিথি করে পাঠাব। অর্জুন যাত্রা করলে চোদ্দ হাজার সংশপ্তক মহারথ এবং দশ হাজার ত্রিগর্ত যোদ্ধা চার হাজার নারায়ণসৈন্য সহ তাঁর অনুসরণ করলেন। দুর্যোধন ও কর্ণের উদ্ভাবিত এই কৌশলে অর্জুন সংশয়াপন্ন হয়ে ভাবতে লাগলেন সংশপ্তকদের সঙ্গে যুদ্ধ করবো, না যুধিষ্ঠিরকে রক্ষা করতে যাবো? তিনি সংশপ্তকগণকে বধ করাই উচিত মনে করলেন এবং ব্রহ্মাস্ত্র প্রয়োগ করে তাদের প্রায় নিঃশেষ করে ফেললেন। তার পর তিনি কৃষ্ণকে বললেন, ভগদত্তের কাছে চলো।

ত্রিগর্তরাজ সুশর্মা ও তার ভাইয়েরা অর্জুনের অনুসরণ করছিলেন। অর্জুন শরবর্ষণ করে সুশর্মাকে নিরস্ত এবং তাঁর ভাইদের বিনাশ করলেন। তারপর গজারোহী ভগদত্তের সঙ্গে রথারোহী অর্জুনের তুমুল যুদ্ধ আরম্ভ হোলো। কৃষ্ণ ও অর্জুনকে বধ করবার জন্য ভগদত্ত তাঁর হাতিকে চালিত করলেন, কৃষ্ণ সত্বর দক্ষিণ পাশে রথ সরিয়ে নিলেন। যুদ্ধধর্ম স্মরণ করে অর্জুন বাহনসমেত ভগদত্তকে পিছন থেকে মারতে ইচ্ছা করলেন না।

অর্জুনের শরাঘাতে ভগদত্তের হাতির বর্ম টুকরো হয়ে ভূপতিত হোলো। ভগদত্ত মন্ত্রপাঠ করে বৈষ্ণবাস্ত্র নিক্ষেপ করলে অর্জুনকে পিছনে রেখে কৃষ্ণ সেই অস্ত্র নিজের বুকে গ্রহণ করলেন। বৈষ্ণবাস্ত্র বৈজয়ন্তী মালা হয়ে কৃষ্ণের বুকে দুলতে থাকল। অর্জুন দুঃখিত হয়ে কৃষ্ণকে বললেন, তুমি বলেছিলে যে যুদ্ধ করবে না, কিন্তু সেই প্রতিজ্ঞা রাখলে না। আমি সতর্ক ও অস্ত্রনিবারণে সমর্থ থাকতে তোমার এমন করা উচিত হয়নি।

অর্জুনের কথা শুনে কৃষ্ণ বললেন, একটি গোপন কথা বলছি শোন - আমি চার মূর্তিতে বিভক্ত হয়ে লোকের হিতসাধন করি। আমার এক মূর্তি তপস্যা করে, দ্বিতীয় মূর্তি জগতের সাধু ও অসাধু কর্ম দেখে, তৃতীয় মূর্তি মনুষ্যলোকে কাজ করে এবং চতুর্থ মূর্তি হাজার বছর নিদ্রিত থাকে। হাজার বছরের শেষে আমার চতুর্থ মূর্তি ঘুম থেকে জেগে উঠে যোগ্য ব্যক্তিদের বর দেয়। সেই সময়ে পৃথিবীর প্রার্থনায় তাঁর পুত্র নরককে আমি বৈষ্ণবাস্ত্র দিয়েছিলাম। প্রাগজ্যোতিষরাজ ভগদত্ত নরকাসুরের কাছ থেকে এই অস্ত্র পেয়েছিলেন। জগতে এই অস্ত্রের অবধ্য কেউ নেই, তোমার রক্ষার নিমিত্তই আমি বৈষ্ণবাস্ত্র গ্রহণ করে মালায় পরিবর্তিত করেছি। ভগদত্ত পরমাস্ত্রহীন হয়েছে, এখন ওই মহাসুরকে বধ করো।

কৃষ্ণের কথা শেষ হলে অর্জুন নারাচ নিক্ষেপ করলে তার আঘাতে ভগদত্তের বিশাল হাতি আর্তনাদ করে নিহত হোলো। অর্জুন তখনই অর্ধচন্দ্র বাণে ভগদত্তের বুক চীরে ফেললে ভগদত্ত প্রাণহীন হয়ে পড়ে গেলেন। তারপর অর্জুন রণস্থলের দক্ষিণ দিকে গেলেন, শকুনির ভাই বৃষক ও অচল তাকে বাধা দিতে এলে অর্জুন একই বাণে দুজনকেই বধ করলেন। বহুমায়াবিশারদ শকুনি মায়া দ্বারা কৃষ্ণ ও অর্জুনকে সম্মোহিত করবার চেষ্টা করলেন, কিন্তু অর্জুনের শরবর্ষণে সকল মায়া বিফল হোলে শকুনি ভীত হয়ে পালিয়ে গেলেন।

দ্রোণের সঙ্গে ধৃষ্টদ্যুম্ন প্রভৃতির অদ্ভুত যুদ্ধ হতে লাগল। অশ্বত্থামা নীল রাজার মাথা কেটে ফেললেন। পাণ্ডবপক্ষীয় মহারথগণ উদ্বিগ্ন হয়ে অর্জুনের অপেক্ষা করতে লাগলেন, যিনি তখন অবশিষ্ট সংশপ্তক ও নারায়ণসৈন্য বিনাশ করছিলেন। ভীম নিজের প্রাণের মায়া ত্যাগ করে দ্রোণ, কর্ণ, দুর্যোধন ও অশ্বত্থামার সঙ্গে যুদ্ধ করছেন দেখে সাত্যকি, নকুল, সহদেব প্রভৃতি তাকে রক্ষা করতে এলেন। পাণ্ডববীরগণকে আরও অনুপ্রাণিত করবার জন্য ধৃষ্টদ্যুম্ন বললেন, এই তোমাদের বীরত্ব প্রকাশের সময়। তখন সকলে দ্রুতগতিতে দ্রোণের প্রতি ধাবিত হলেন। দ্রোণ শত শত বাণে চেদি, পাঞ্চাল ও পাণ্ডবগণকে নিপীড়িত করতে লাগলেন। এমন সময় অর্জুন সংশপ্তকগণকে জয় করে দ্রোণের নিকট উপস্থিত হলেন। যুগান্তকালে ধূমকেতু যেমন সর্বভূত জ্বালিয়ে দেয়, অর্জুনের অস্ত্রের তেজে তেমন কুরুসৈন্য দগ্ধ হতে লাগল। তাদের হাহাকার শুনে কর্ণ আগ্নেয়াস্ত্র প্রয়োগ করলে অর্জুন তা শরাঘাতে টুকরো কোরে কর্ণের তিন ভাইকে বধ করলেন। ভীম ও ধৃষ্টদ্যুম্নের খড়গাঘাতে কর্ণের পক্ষের পনেরো জন যোদ্ধা সহ চন্দ্রবর্মা ও নিষধরাজ বৃহৎক্ষেত্র নিহত হলেন।

তার পর সূর্য অস্তাচলে গেলে উভয় পক্ষ ক্লান্ত ও রক্তাক্ত হয়ে শিবিরে প্রস্থান করলেন।

______________

(ক্রমশ)