Featured Books
বিভাগ
শেয়ারড

মহাভারতের কাহিনি – পর্ব 127

মহাভারতের কাহিনি – পর্ব-১২৭

যুদ্ধের ত্রয়োদশ দিনে অভিমন্যু বধের কাহিনি

 

প্রাককথন

কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস মহাভারত নামক মহাগ্রন্থ রচনা করেছিলেন। তিনি এই গ্রন্থে কুরুবংশের বিস্তার, গান্ধারীর ধর্মশীলতা, বিদুরের প্রজ্ঞা, কুন্তীর ধৈর্য, বাসুদেবের মাহাত্ম্য, পাণ্ডবগণের সত্যপরায়ণতা এবং ধৃতরাষ্ট্রপুত্রগণের দুর্বৃত্ততা বিবৃত করেছেন। নানা কাহিনি সংবলিত এই মহাভারতে সর্বমোট ষাট লক্ষ শ্লোক আছে। কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস পূর্বে নিজের পুত্র শুকদেবকে এই গ্রন্থ পড়িয়ে তার পর অন্যান্য শিষ্যদের শিখিয়েছিলেন। তিনি ষাট লক্ষ শ্লোকে আর একটি মহাভারতসংহিতা রচনা করেছিলেন, তার ত্রিশ লক্ষ শ্লোক দেবলোকে, পনের লক্ষ পিতৃলোকে, চোদ্দ লক্ষ গন্ধর্বলোকে এবং এক লক্ষ মনুষ্যলোকে প্রচলিত আছে। কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের শিষ্য বৈশম্পায়ন শেষোক্ত এক লক্ষ শ্লোক পাঠ করেছিলেন। অর্জুনের প্রপৌত্র রাজা জনমেজয় এবং ব্রাহ্মণগণের বহু অনুরোধের পর কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস তাঁর শিষ্য বৈশম্পায়নকে মহাভারত শোনাবার জন্য আজ্ঞা দিয়েছিলেন।

সেইসব মানুষের সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য, যাঁরা বিশালাকার মহাগ্রন্থ মহাভারত সম্পূর্ণ পাঠ করেছেন। অধিকাংশ মানুষই মহাভারতের কিছু কিছু গল্প পড়েছেন, শুনেছেন বা দূরদর্শনে সম্প্রসারিত ধারাবাহিক চলচ্চিত্রায়ণ দেখেছেন, যা মহাভারতের খণ্ডাংশ মাত্র এবং মূলত কৌরব ও পাণ্ডবদের বিষয়ীভূত ও শ্রীকৃষ্ণের ভূমিকাকে কেন্দ্র করে নির্মিত।

মহাগ্রন্থ মহাভারত রচিত হয়েছে অসংখ্য কাহিনির সমাহারে, যে কাহিনিসমূহের অধিকাংশই কৌরব ও পাণ্ডবদের কাহিনির সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কিত।

সেই সমস্ত কাহিনিসমূহের কিছু কিছু কাহিনি সহজবোধ্য ভাষায় সুহৃদ পাঠক-পাঠিকাদের কাছে ধরাবাহিকভাবে উপস্থাপনা করার জন্য আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস আশা করি ভালো লাগবে।

অশোক ঘোষ

 

যুদ্ধের ত্রয়োদশ দিনে অভিমন্যু বধের কাহিনি

দ্বাদশ দিনে যুদ্ধের শেষে শিবিরে ফিরে এসে দুর্যোধন ক্ষুব্ধ হয়ে দ্রোণকে বললেন, আপনি নিশ্চয় মনে করেন যে আমরা বধের যোগ্য, তাই আজ যুধিষ্ঠিরকে কাছে পেয়েও ধরলেন না। আপনি প্রীত হয়ে আমাকে বর দিয়েছিলেন, কিন্তু শেষে তার অন্যথা করলেন। সাধু লোকে কখনও ভক্তের আশাভঙ্গ করেন না। দ্রোণ লজ্জিত হয়ে উত্তর দিলেন, আমি সর্বদাই তোমার হিত সাধনের চেষ্টা করি কিন্তু তুমি তা বুঝতে পারো না। স্বয়ং কৃষ্ণ যে পক্ষে আছেন এবং অর্জুন যার সেনাপতি সে পক্ষকে মহাদেব ভিন্ন আর কে পরাজিত করতে পারেন? সত্য বলছি, আজ আমি পাণ্ডবদের কোনও মহারথকে নিপাতিত করবো। আমি এমন ব্যূহ রচনা করবো যা দেবতারাও ভেদ করতে পারেন না। তুমি কোনও উপায়ে অর্জুনকে সরিয়ে রেখো।

পরদিন সংশপ্তকগণ দক্ষিণ দিকে গিয়ে আবার অর্জুনকে যুদ্ধে আহ্বান করলে অর্জুন তাঁদের সঙ্গে ঘোর যুদ্ধ করতে লাগলেন। দ্রোণ চক্রব্যূহ নির্মাণ করে তেজস্বী রাজপুত্রগণকে যথাস্থানে স্থাপিত করলেন। তারা সকলেই রক্তবসন, রক্তভূষণ ও রক্ত পতাকায় শোভিত হলেন এবং মালা ধারণ কোরে অগুরু চন্দনে চর্চিত হয়ে যুদ্ধ করতে চললেন। দুর্যোধনের পুত্র লক্ষ্মণ দশ হাজার যোদ্ধার সামনে থাকলেন। কৌরবসেনার মাঝখানে দুর্যোধন, কর্ণ, কৃপ ও দুঃশাসন এবং সামনে সেনাপতি দ্রোণ, সিন্ধুরাজ জয়দ্ৰথ, অশ্বত্থামা, দুর্যোধনের ত্রিশ জন ভাই, শকুনি, শল্য ও ভূরিশ্রবা রইলেন।

দ্রোণকে আর কেউ বাধা দিতে পারবে না এই স্থির করে যুধিষ্ঠির অভিমন্যুর উপর অত্যন্ত গুরুদায়িত্ব দিলেন। তিনি তাকে বললেন, বৎস, অর্জুন ফিরে এসে যাতে আমাদের নিন্দা না করে এমন কিছু করো। আমরা চক্রব্যূহ ভেদ করতে জানি না, কেবল অর্জুন, কৃষ্ণ, প্রদ্যুম্ন আর তুমি — এই চার জন চক্রব্যূহ ভেদ করতে পারো। আমরা সবাই তোমাকে অনুরোধ করছি তুমি দ্রোণের চক্রব্যূহ ভেদ করো।

অভিমন্যু বললেন, পিতৃগণের জয় কামনায় আমি অবিলম্বে দ্রোণের চক্রব্যূহের মধ্যে প্রবেশ করবো। কিন্তু পিতা আমাকে প্রবেশের কৌশলই শিখিয়েছেন, যদি কোনও বিপদ হয় তবে আমি ব্যূহ থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো না। যুধিষ্ঠির বললেন, বৎস, তুমি ব্যূহ ভেদ কোরে আমাদের জন্য ব্যূহের দ্বার উন্মুক্ত কোরে দাও, আমরা তোমার সঙ্গে ব্যূহের মধ্যে প্রবেশ কোরে তোমাকে রক্ষা করবো। ভীম বললেন, বৎস, ধৃষ্টদ্যুম্ন, সাত্যকি ও আমি তোমার অনুসরণ করবো, পাঞ্চাল কেকয় মৎস্য প্রভৃতি যোদ্ধারাও যাবেন, তুমি একবার ব্যূহ ভেদ করলে আমরা বিপক্ষের প্রধান প্রধান যোদ্ধাদের বধ করে ব্যূহ বিধ্বস্ত করবো। অভিমন্যু বললেন, পতঙ্গ যেমন জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশ করে, আমিও তেমন দুর্ধর্ষ দ্রোণের সৈন্যের মধ্যে প্রবেশ করবো। সকলেই দেখতে পাবে, বালক হলেও আমি দলে দলে শত্রুসৈন্য ধ্বংস করবো।

যুধিষ্ঠির আশীর্বাদ করলেন। অভিমন্যু তাঁর সারথিকে বললেন, তুমি দ্রোণসৈন্যের দিকে শীঘ্র রথ নিয়ে চলো। সারথি বললো পাণ্ডবগণ আপনার উপর গুরুদায়িত্ব দিয়েছেন, আপনি বিবেচনা কোরে যুদ্ধ করবেন। দ্রোণাচার্য অস্ত্রবিশারদ পরিশ্রমী কৃতী যোদ্ধা, আর আপনি সুখে পালিত এবং যুদ্ধেও অনভিজ্ঞ। অভিমন্যু সহাস্যে বললো, দ্রোণ ও সমগ্র ক্ষত্রিয়কেও আমি ভয় করি না। দেবরাজ ইন্দ্রের সঙ্গেও আমি যুদ্ধ করতে পারি। বিশ্বজয়ী মামা কৃষ্ণ বা পিতা অর্জুন যদি আমার সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসেন তবুও আমি ভয় পাবো না। তুমি দেরী কোরো না, এগিয়ে চলো। তখন সারথি দ্রুতবেগে রথ চালনা করলে পাণ্ডবগণ তার পিছনে চললেন। সিংহশিশু যেমন হাতির দলের প্রতি ধাবিত হয়, অভিমন্যু তেমন দ্রোণ প্রভৃতি মহারথগণের প্রতি ধাবিত হলো। অভিমন্যু দ্রোণের সৈন্যের কাছাকাছি আসতেই দুই পক্ষের যুদ্ধ আরম্ভ হলো।

দ্রোণের সামনেই অভিমন্যু ব্যূহ ভেদ করে ভিতরে গিয়ে কুরুসৈন্য ধ্বংস করতে লাগলেন। দুর্যোধন অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে অভিমন্যুকে বাধা দিতে এলেন। দ্রোণ, অশ্বত্থামা, কৃপ, কর্ণ, শল্য প্রভৃতি বাণবর্ষণ করে অভিমন্যুকে আচ্ছন্ন করলেন। অভিমন্যুর বাণের আঘাতে শল্য মূৰ্ছিত হয়ে রথের উপর বসে পড়লেন, কৌরবসৈন্য পালাতে লাগলো। শল্যের ভাই অভিমন্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করতে এসে নিহত হলেন।

দ্রোণ খুশি হয়ে কৃপকে বললেন, এই অভিমন্যু আজ পাণ্ডবদেরকে আনন্দিত করবে। এর তুল্য ধনুর্ধর আর কেউ আছে এমন মনে হয় না, এ ইচ্ছা করলেই আমাদের সমস্ত সেনা সংহার করতে পারে, কিন্তু কোনও কারণে তা করছে না। দ্রোণের এই কথায় দুর্যোধন বিস্মিত ও ক্রুদ্ধ হয়ে কর্ণ, দুঃশাসন, শল্য প্রভৃতিকে বললেন, সকল ক্ষত্রিয়ের শ্রেষ্ঠ আচার্য দ্রোণ অর্জুনের ওই পুত্রকে বধ করতে চাইছেন না, শিষ্যের পুত্র বলে ওকে রক্ষা করতে চান। বীরগণ, আপনারা ওকে বধ করুন, বিলম্ব করবেন না। দুঃশাসন বললেন, আমিই ওকে মারবো।

দুঃশাসনকে দেখে অভিমন্যু বললেন, ভাগ্যক্রমে আজ ধর্মত্যাগী নিষ্ঠুর কটুভাষীকে যুদ্ধে দেখছি। মূর্খ, তুমি পাশা খেলার সভায় জয়লাভে উন্মত্ত হয়ে কটুবাক্যে যুধিষ্ঠিরকে ক্রুদ্ধ করেছিলে, তোমার পাপকর্মের ফলভোগের জন্য আমার কাছে এসে পড়েছ, আজ তোমাকে শাস্তি দিয়ে পাণ্ডবগণের ও দ্রৌপদীর নিকট ঋণমুক্ত হবো। এই বলে অভিমন্যু দুঃশাসনকে শরাঘাত করলেন। দুঃশাসন মূৰ্ছিত হয়ে পড়ে গেলে তাঁর সারথি তাঁকে সত্বর রণস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে গেলো। পাণ্ডবপক্ষীয় যোদ্ধারা অভিমন্যুকে দেখে সিংহনাদ করে দ্রোণের সৈন্যগণকে আক্রমণ করলেন।

তারপর কর্ণের সঙ্গে অভিমন্যুর যুদ্ধ হতে লাগল। অভিমন্যু কর্ণের এক ভাইয়ের মাথা কেটে ফেললেন এবং কর্ণকেও শরাঘাতে নিপীড়িত কোরে রণভূমি থেকে চলে যেতে বাধ্য করলেন। অভিমন্যুর শরবর্ষণে বিশাল কৌরবসৈন্য ভগ্ন হলো, যোদ্ধারা পালাতে লাগলো, অবশেষে ধৃতরাষ্ট্রের জামাই সিন্ধুরাজ জয়দ্রথ ভিন্ন আর কেউ রইলেন না। দ্রৌপদী হরণের পর ভীমের হাতে নিগৃহীত হয়ে জয়দ্রথ মহাদেবের আরাধনা কোরে এই বর পেয়েছিলেন যে অর্জুন ভিন্ন অন্য চারজন পাণ্ডবকে তিনি যুদ্ধে বাধা দিতে পারবেন।

জয়দ্রথ শরবর্ষণ করে সাত্যকি, ধৃষ্টদ্যুম্ন, বিরাট, দ্রুপদ, শিখণ্ডী এবং যুধিষ্ঠির ভীম প্রভৃতিকে নিপীড়িত করতে লাগলেন। অভিমন্যু ব্যূহ প্রবেশের যে পথ করেছিলেন জয়দ্রথ তা রুদ্ধ কোরে দিলেন। পাণ্ডবপক্ষীয় যোদ্ধারা দ্রোণের ব্যূহ ভেদ করবার চেষ্টা করলেন, কিন্তু জয়দ্রথ তাদের বাধা দিলেন। কুরুসৈন্যে দ্বারা ঘেরাও হয়ে অভিমন্যু একা দারুণ যুদ্ধ করতে লাগলেন। শল্যের পুত্র রুক্ষ্মরথ ও দুর্যোধনের পুত্র লক্ষ্মণ অভিমন্যুর হাতে নিহত হলেন।

প্রিয় পুত্রের মৃত্যুতে ক্রুদ্ধ হয়ে দুর্যোধন স্বপক্ষের বীরগণকে উচ্চস্বরে বললেন, আপনারা অভিমন্যুকে বধ করুন। তখন দ্রোণ, কৃপ, কর্ণ, অশ্বত্থামা, বৃহদ্বল ও কৃতবর্মা এই ছয় রথী জয়দ্রথের সঙ্গে অভিমন্যুকে ঘিরে ফেললেন। কোশলরাজ বৃহদ্বল এবং আরও অনেক যোদ্ধা অভিমন্যুর বাণে নিহত হলেন। দ্রোণ বললেন, কুমার অভিমন্যু তার পিতার ন্যায় সর্ব দিকে দ্রুত বিচরণ করে এত ক্ষিপ্রহস্তে বাণ নিক্ষেপ করছে যে কেবল তার ধনুই দেখা যাচ্ছে। অভিমন্যুর বাণ নিক্ষেপে আমার প্রাণসংশয় আর মোহ হলেও আমি অতিশয় আনন্দলাভ করছি, অর্জুনের সঙ্গে এর প্রভেদ দেখছি না।

কর্ণ শরাহত হয়ে দ্রোণকে বললেন, রণস্থলে থাকা আমার কর্তব্য, শুধু এই কারণে অভিমন্যু কর্তৃক নিপীড়িত হয়েও আমি এখানে রয়েছি। মৃদু হেসে দ্রোণ বললেন, অভিমন্যুর কবচ অভেদ্য, আমিই ওর পিতাকে কবচধারণের প্রণালী শিখিয়েছিলাম। মহাধনুর্ধর কর্ণ, যদি পারো তো ওর ধনু ভেঙ্গে দাও, ঘোড়া ও সারথি বিনষ্ট করো, তার পর পিছন দিক থেকে ওকে প্রহার করো। যদি বধ করতে চাও তবে ওকে রথহীন ও ধনুহীন করো।

দ্রোণের উপদেশে অনুসারে কর্ণ পিছন দিক থেকে অভিমন্যুর ধনু ভেঙ্গে ফেললেন এবং ঘোড়া ও সারথি বধ করলেন। তার পর দ্রোণ, কৃপ, কর্ণ, অশ্বত্থামা, দুর্যোধন ও শকুনি নির্দয় হয়ে রথহীন বালক অভিমন্যুর উপর শরাঘাত করতে লাগলেন। অভিমন্যু খড়্গ ও ঢাল নিয়ে রথ থেকে লাফিয়ে নামলেন। দ্রোণ ক্ষুরপ্র অস্ত্রে অভিমন্যুর খড়গের মুষ্টি কেটে ফেললেন। অভিমন্যু চক্র নিয়ে ধাবিত হলেন, বিপক্ষ বীরগণের শরাঘাতে তাও ভেঙ্গে গেলো। তখন তিনি গদা নিয়ে যুদ্ধ করতে লাগলেন। এই সময়ে দুঃশাসনের পুত্র অভিমন্যুর মস্তকে গদাঘাত করলে অভিমন্যু অচেতন হয়ে পড়ে গেলেন।

সারা জগৎ উত্তপ্ত কোরে সূর্য যেমন অস্তে যায় তেমনই কৌরবসেনা নিপীড়িত কোরে অভিমন্যু প্রাণশূন্য দেহে ভূপতিত হলেন। আকাশ থেকে খসে পড়া চাঁদের মতো তাঁকে ভূপতিত দেখে পাণ্ডবগণ বিলাপ করতে লাগলেন। পলায়মান পাণ্ডব-সৈন্যগণকে যুধিষ্ঠির বললেন, বীর অভিমন্যু যুদ্ধে বিমুখ হননি, তিনি স্বর্গে গেছেন। তোমরা স্থির হও, ভয় দূর করো, আমরা যুদ্ধে শত্রুদের জয় করবো। কৃষ্ণ ও অর্জুনের তুল্য যোদ্ধা অভিমন্যু দশ হাজার শত্রুসৈন্য ও মহাবল বৃহদ্বলকে বধ করে নিশ্চয় ইন্দ্রলোকে গেছেন, তার জন্য শোক করা উচিত নয়। তার পর সন্ধ্যা হওয়ায় শোকমগ্ন পাণ্ডবগণ এবং রুধিরাক্ত কৌরবগণ যুদ্ধে বিরত হয়ে নিজ নিজ শিবিরে প্রস্থান করলেন।

ধৃতরাষ্ট্রকে অভিমন্যুবধের বৃত্তান্ত শুনিয়ে সঞ্জয় বললেন, দ্রোণ, কর্ণ প্রভৃতি ছয় জন মহারথ ও জয়দ্রথ একসঙ্গে একজন বালককে নিপাতিত করলেন — এ আমি ধর্মসংগত মনে করি না।

______________

(ক্রমশ)